প্রস্তুতি: আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে অনুশীলনে ফুরফুরে মেজাজে বাংলাদেশ ক্রিকেটারেরা। ছবি: আইসিসি টুইটার।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে বাংলাদেশ ক্রিকেটে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল তামিম ইকবাল বনাম শাকিব-আল-হাসানের বিতর্ক। বুধবার ‘অধিনায়ক দিবস’-এর অনুষ্ঠানে শাকিব জানিয়েছিলেন, গত বারের থেকে এ বারে তাঁরা আরও ভাল পারফরম্যান্স দেখাতে চান। তাঁর কথায়, “সময় এসে গিয়েছে বিশ্বকাপে নতুন কিছু করে দেখানোর। আমাদের দল প্রস্তুত। দেশের জনগণ আশা রাখছেন গত বারের থেকে এ বারে আমরা ভাল কিছু করেদেখাতে পারব।”
সেই লক্ষ্য নিয়েই আজ, শনিবার বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে বাংলাদেশ। ধর্মশালায় তাদের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। চলতি বছরে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ৮৯ রানে একতরফা ভাবে হারিয়েছিল আফগানদের। সেই ম্যাচে দুরন্ত শতরান উপহার দিয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। আফগানদের হয়ে ব্যাটে একমাত্র লড়াই করেছিলেন ইব্রাহিম জ়ারদান। বাংলাদেশের হয়ে জোরে বোলার তাস্কিন আহমেদ একাই ৪ উইকেট তুলে নিয়ে আফগান ব্যাটিংয়ের মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছিলেন। ফলে মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকছে রশিদ খানেদের সামনে।
বাংলাদেশ দলে অবশ্য প্রতিভা এবং অভিজ্ঞতার অভাব নেই। রয়েছেন শাকিব, উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসের মত অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। অবশ্য আলাদা করে উল্লেখ করতেই হবে মাহমুদুল্লার কথা, যিনি নিজের দিনে একাই যে কোনও ম্যাচের রং বদলে দিতে পারেন।
চলতি বছরে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছেন নাজমুল। এশিয়া কাপেও তাঁর ব্যাটিংয়ের ঝলক দেখা গিয়েছে। জোরে বোলিংয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তাস্কিন আহমেদ, মুস্তাফিজ়ুর রহমান, তানজ়িম হাসান শাকিব, শরিফুল ইসলামরা।
স্পিন বিভাগে রয়েছেন এক দিনের ক্রিকেটে শীর্ষ স্থানে থাকা অলরাউন্ডার শাকিব। আর ৪১ রান করলেই বিশ্বকাপে ১০০০ রান এবং ১০ উইকেট নেওয়া অলরাউন্ডারদের মধ্যে শীর্ষ স্থানে চলে আসবেন তিনি। রয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ, মাহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ।
অন্য দিকে বিভিন্ন দেশের টি-টোয়েন্টি লিগগুলিতে আফগানিস্তানের ক্রিকেটারেরা প্রশংসা কোড়ালেও এক দিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপে তার সিকিভাগও দেখাতে পারেনি। বিশ্বকাপে ১৫ টি ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছেন রশিদরা। একটি প্রস্তুতি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছিল। অপর প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দিয়েছিল আফগানরা। যা তাদের আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলেও বাড়াতে সাহায্য করবে।
আফগানদের প্রধান শক্তি তাদের স্পিন বিভাগ। হাশমাতুল্লা শাহিদির নেতৃত্বাধীন দলে রয়েছে স্পিনের মায়াজালের চতুর্ভুজ- মহম্মদ নবি, রশিদ খান, মুজিব-উর রহমান এবং নুর আহমেদ। প্রত্যেকেই আইপিএলে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। চলতি আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে ছন্দে ছিলেন ওপেনার রহমন্নুলা গুরবাজ়। নজর থাকবে তাঁর দিকেও।
আফগানিস্তানের প্রধান মাথাব্যথার কারণ দলে ধারাবাহিকতার অভাব। শাহিদি বলছেন, “আমরা নিজেদের সেরাটা দেব। অতীতে যা হয়ে গিয়েছে সেই ব্যাপার মাথায় রাখতে চাই না।” যোগ করেন, “আমরা নিজেদের শক্তিশালী জায়গাগুলোর দিকে নজর রাখছি। পরিকল্পনামাফিক খেলে জয় তুলে নিতে চাই।”
বিশ্বকাপের আগে রশিদদের ‘ডিরেক্টর অব ক্রিকেট’ হিসেবে যুক্ত হয়েছেন অজয় জাডেজা। শাহিদি বলেছেন, “উনি নিজের অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। খুবই ইতিবাচক মানুষ। জাডেজার উপস্থিতিতে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি।” সেখানেই না থেমে আরও যোগ করেন, “আমরা ভারতের মাটিতে আইপিএলে খেলেছি। উইকেটের চরিত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তবে আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। আশা করি এ বারের বিশ্বকাপে ফলাফল বদলে দিতে পারব।”
আজ বিশ্বকাপে: বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান। সকাল ১০.৩০ থেকে। স্টার স্পোর্টস নেটওয়ার্কে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy