লক্ষ্মীরতন শুক্ল এবং মনোজ তিওয়ারি। —ফাইল চিত্র।
হাতে আর ছ’দিন। তার পরেই শুরু এ বারের রঞ্জি ট্রফি। যে ট্রফির খুব কাছ থেকে গত বার ফিরতে হয়েছিল লক্ষ্মীরতন শুক্লের বাংলাকে। এ বার সেটা চাইবে না তারা। অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির এটাই শেষ মরসুম। তার পরেই অবসর নেবেন তিনি। কিন্তু রঞ্জি শুরুর ছ’দিন আগে হঠাৎ মনোজের রাজনৈতিক জীবনে অস্থিরতা। ক্রিসমাস কার্নিভ্যালে গন্ডগোল, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছেন রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। সেই সব সামলে মনোজ কি ক্রিকেটে মন দিতে পারবেন? এই নিয়ে আপাতত চুপ বাংলা দল।
হাওড়ার ক্রিসমাস কার্নিভ্যালে পার্কিং নিয়ে গন্ডগোল হয়। রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজের ঘনিষ্ঠ একাংশের আপত্তিতেই কার্নিভ্যাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। শাসকদল পরিচালিত পুরসভার কমিশনারের সঙ্গে পর দিন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সামনে প্রকাশ্য ‘হাতাহাতি’তে জড়িয়ে পড়েন মনোজ। রাজনৈতিক মঞ্চে হঠাৎ করেই শিরোনামে তিনি। এমন সময় বাংলার ক্রিকেট দলের অধিনায়ক করা হয়েছে মনোজকে। রাজনৈতিক দলের কাজ সামলে এর আগেও বাংলার হয়ে ব্যাট হাতে নেমেছেন তিনি। এ বারও সেই দায়িত্ব তাঁকে সামলাতে হবে। তার প্রভাব কি দলে পড়বে? এখনই তা নিয়ে কথা বলতে রাজি নয় বাংলা দল।
কোচ লক্ষ্মীরতন আনন্দবাজার অনলাইনকে শুধু বললেন, “তিন জন সিনিয়র ক্রিকেটারকে শুরুতে পাওয়া যাবে না। তবে তা নিয়ে খুব একটা চিন্তা করছি না। যারা দলে আছে, তারা নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পাবে। একটা করে ম্যাচ দেখে এগোতে চাই।”
এ বারে আরও নিখুঁত থাকতে চান তিনি। বাংলার কোচ তরুণদের উপর ভরসা রাখছেন। সৈয়দ মুস্তাক আলি এবং বিজয় হজারেতে বাংলা নক আউট পর্বে খেলেছে। নতুন বছরে শুরু লাল বলের সিরিজ়। বাংলার গ্রুপে রয়েছে অন্ধ্র, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, অসম, মুম্বই, কেরল এবং বিহার। বাংলা দলে সৌরভ পাল, শ্রেয়াংশ ঘোষ, শুভম চট্টোপাধ্যায়, সুরজ সিন্ধু জয়সওয়াল, কৌশিক মাইতি, সুমন দাসের মতো একাধিক নতুন মুখ। লক্ষ্মী বললেন, “এ বারের দলে অনেক তরুণ মুখ। আমরা দল বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্লাব ক্রিকেটকে গুরুত্ব দিয়েছি। সেখানে ভাল খেলে বাংলা দলে জায়গা করে নিয়েছে অনেকে।”
গত মরসুমে অভিমন্যু ঈশ্বরন শুরুতে অধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু জাতীয় দলে ডাক পাওয়ায় বাংলার নেতৃত্বের দায়িত্ব এসেছিল মনোজের কাঁধে। এই মরসুমে যদিও শুরু থেকেই লাল বলের ক্রিকেটে অধিনায়ক রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। এটাই তাঁর শেষ মরসুম বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন মনোজ। বাংলার হয়ে রঞ্জি জয়ের লক্ষ্য নিয়েই শেষ বার মাঠে নামবেন তিনি। গত মরসুমে রঞ্জি ফাইনালে হারের পর অবসর নিয়েছিলেন মনোজ। পরে আবার বাংলার ক্রিকেট সংস্থার কর্তাদের অনুরোধে অবসরের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। মনোজ রঞ্জি জয়ের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। রাজনীতির মঞ্চ থেকে ময়দানের সবুজ ঘাসে নিজেকে নিয়ে যেতে হবে তাঁকে।
৮ ডিসেম্বর মনোজ একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন বাংলার হয়ে মাঠে নামতে ১৪ দিনের অনুশীলন শুরু করছেন। হাঁটুর সমস্যা কাটিয়ে এ বার শুরু থেকেই নিজের ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছেন মনোজ। অনুশীলনের সময় রাজনীতিকে আসতে দেন না তিনি। মনোজ এত দিন দু’টি দিক সমান ভাবে সামলেছেন। কিন্তু রঞ্জি শুরুর ৯ দিন আগে বাংলার ক্রিকেট অধিনায়ক হঠাৎ রাজনৈতিক কারণে আলোচনায় চলে এসেছেন। মনোজের এখন ক্রিকেট মোডে ঢুকে যাওয়ার কথা। রঞ্জির আগে রবিবার বাংলার শেষ অনুশীলন। ২ জানুয়ারি কলকাতা ছাড়বে বাংলা দল। বিশাখাপত্তনমে যাবে অন্ধ্রের বিরুদ্ধে খেলতে। ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু সেই ম্যাচ।
মনোজের নেতৃত্বে যে দল এ বারে রঞ্জিতে খেলবে সেখানে নেই অভিমন্যু, মুকেশ কুমার এবং আকাশ দীপ। তাঁরা ভারতীয় শিবিরে ব্যস্ত। সেই কারণে দু’টি ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করেছে বাংলা।
বাংলার প্রথম দুই ম্যাচের দল: মনোজ তিওয়ারি (অধিনায়ক), অনুষ্টুপ মজুমদার, সুদীপ ঘরামি, অভিষেক পোড়েল (উইকেটকিপার), সৌরভ পাল (উইকেটকিপার), শ্রেয়াংশ ঘোষ, রণজ্যোৎ সিংহ খাইরা, শুভম চট্টোপাধ্যায়, আকাশ দীপ, ঈশান পোড়েল, প্রদীপ্ত প্রামাণিক, করণ লাল, কৌশিক মাইতি, মহম্মদ কইফ, অঙ্কিত মিশ্র, প্রয়াস রায় বর্মন, সূরয সিন্ধু জয়সওয়াল এবং সুমন দাস। কোচ: লক্ষ্মীরতন শুক্ল। সহকারী কোচ: সৌরাশিস লাহিড়ী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy