আকাশ দীপের সঙ্গে লক্ষ্মীরতন শুক্ল। —ফাইল চিত্র।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই বছরের শুরুতে একটি টেস্ট খেলেছিলেন আকাশ দীপ। তিনটি উইকেট নিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন সুযোগ পেলে তিনিও লাল বলকে দেশের জার্সিতে কথা বলাতে পারেন। সেই আকাশকে আইপিএলে সুযোগ দেওয়া হল না। ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। পাশে পেয়েছিলেন বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লকে। আবার ভারতীয় দলে আকাশ।
বিহারের এক গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন আকাশ। তাঁর বাবা কখনও চাননি ছেলে ক্রিকেট খেলুক। আকাশের ভালবাসা ছিল ক্রিকেট। বাবার ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে ২০১০ সালে কাজ খুঁজতে দুর্গাপুরে চলে এসেছিলেন আকাশ। সেই সময় তাঁর ১৪ বছর বয়স। কিন্তু ক্রিকেট ছাড়তে পারেননি। তাঁর এক কাকুর সাহায্যে ভর্তি হয়ে গিয়েছিলেন ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। কিন্তু দু’মাসের ব্যবধানে আকাশের বাবা এবং দাদা মারা যাওয়ার পর জীবনের পথ বন্ধুর হয়ে গিয়েছিল তাঁর। তিন বছরের জন্য ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন আকাশ। কিন্তু ভালবাসা কমেনি। তাই ছাড়তে পারেননি। ২০১৯ সালে জায়গা করে নেন বাংলার অনূর্ধ্ব-২৩ দলে। সেখান থেকে ধাপে ধাপে উঠতে উঠতে এখন ভারতের টেস্ট দলের সদস্য আকাশ।
যে ভাবে ক্রিকেট শিখেছেন আকাশ, সেটাই প্রমাণ করে দেয় কতটা লড়াকু তিনি। এই বছরের শুরুতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে রাঁচীতে ভারতের জার্সিতে অভিষেক হয় আকাশের। একটি ম্যাচই খেলেছিলেন। তার পরেই ধাক্কা। ভারতের জার্সি পড়লেও আইপিএলে সুযোগ পেলেন না। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে আইপিএলে এই বছর মাত্র একটি ম্যাচ খেলেন আকাশ। ফর্মে থাকা বোলারকে বসে থাকতে হয়। লক্ষ্মী বললেন, “এক জন ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত উইকেট নিচ্ছে। ভারতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছে। এর পরেই হঠাৎ আইপিএলে প্রথম একাদশের বাইরে বসে থাকতে হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া কঠিন। যে কোনও ক্রিকেটারই চায় নিয়মিত সুযোগ পেতে। ম্যাচ খেলতে। সেটা না পেয়ে আকাশ কিছুটা ভেঙে পড়েছিল।”
শুধু আইপিএলে সুযোগ না পাওয়া নয়, ভাগ্যও সঙ্গে ছিল না আকাশের। বাংলার টি-টোয়েন্টি লিগের সময় টাইফয়েড হয় তাঁর। সেখানেও খেলতে পারেননি। ক্রিকেট থেকে বিরতি নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে ফর্ম হারাননি। সেই কাজটাই নেপথ্যে থেকে করেছিলেন লক্ষ্মী। তিনি বললেন, “আমার সঙ্গে আকাশ নিয়মিত যোগাযোগ রাখে। আমি ওর মনোবল ভাঙতে দিইনি। মরসুম শুরুর আগে অনুশীলনে ওকে আবার আগের ফর্মে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।” সেটা যে সফল ভাবে হয়েছে তার প্রমাণ দলীপ ট্রফি। প্রথম ম্যাচে আকাশ ভারত এ দলের হয়ে ন’টি উইকেট তুলে নেন। সেই সঙ্গে ব্যাট হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৩ রান করেন। আর সেই সাফল্য তাঁকে বাকি বোলারদের থেকে এগিয়ে দিল ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে। এখন দেখার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আরও এক বার দেশের জার্সি পরার সুযোগ আকাশ পান কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy