দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচ জিতে সিরিজ়ও নিশ্চিত করে নিলেন শাকিবরা। ছবি: টুইটার।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচে ৫ রানে হারল ভারত। একই সঙ্গে সিরিজ়ও হাতছাড়া হল রোহিত শর্মাদের। বাংলাদেশের মাটিতে পর পর দু’টি এক দিনের সিরিজ় হারল ভারত। বুধবার মীরপুরে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৭১ রান করেন লিটন দাসরা। জবাবে ৯ উইকেটে ২৬৬ রানে শেষ হল ভারতের ইনিংস। কাজে এল না রোহিত শর্মার ২৮ বলে ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংস। ক্রিকেটপ্রেমীরা দেখলেন আহত রোহিত কতটা ভয়ঙ্কর এবং সুন্দর।
ফিল্ডিং করার সময় বাঁ হাতের হাতের বুড়ো আঙুলে চোট পান রোহিত শর্মা। তবু দলের হার বাঁচাতে ব্যাট করতে নামতে হল তাঁকে। ব্যাটিং অর্ডারের নয় নম্বরে ২২ গজে আসেন রোহিত। চোট নিয়েই দলকে জেতানোর মরিয়া চেষ্টা করলেন অধিনায়ক। আগ্রাসী মেজাজে একাধিক চার, ছক্কাও মারলেন। তিনি যন্ত্রণা উপেক্ষা করে দলকে জেতানোর মরিয়া চেষ্টা করলেও ২২ গজে যোগ্য সঙ্গী পেলেন না। তাঁর ২৮ বলের ইনিংসে রয়েছে তিনটি চার এবং পাঁচটি বিরাট ছক্কা। শেষ বলে ৬ রান দরকার ছিল ভারতের জয়ের জন্য। কিন্তু সেই রান আর তুলতে পারলেন না আহত অধিনায়ক।
তার আগে রোহিতের অনুপস্থিতিতে শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে ভারতীয় দলের ইনিংস শুরু করেন বিরাট কোহলি। দু’জনেই ব্যর্থ হলেন। কোহলি ৫ এবং ধাওয়ান ৮ রান করে সাজঘরে ফিরলেন। ১৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ভারতীয় ইনিংসকে ভরসা দিলেন শ্রেয়স আয়ার। তিন নম্বরে নেমে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক করলেন ৮২ রান। তাঁর ১০২ বলের ইনিংসে রয়েছে ছ’টি চার এবং তিনটি ছয়। তিনি উইকেটের এক দিক আগলে রাখলেও অন্য প্রান্তে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়ল ভারতের। ওয়াশিংটন সুন্দর (১১), লোকেশ রাহুলরা (১৪) দলকে ভরসা দিতে পারলেন না ব্যাট হাতে। শ্রেয়সের সঙ্গে জুটি তৈরি করে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুললেন অক্ষর পটেল। তাঁর ৫৬ বলে ৫৬ রানের ইনিংসে রয়েছে দু’টি বাউন্ডারি এবং তিনটি ওভার বাউন্ডারি। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে তাঁরা তুললেন ১০৭ রান। কিন্তু তাঁদের জুটি ভাঙতেই ভারতীয় ব্যাটিংয়ের দুর্দশা আবারও প্রকট হয়ে উঠল। জঘন্য ভাবে আউট হলেন শার্দুল ঠাকুর (৭)। শিক্ষানবিশ ক্রিকেটাররাও বোধহয় এ ভাবে আউট হন না। ভারতের একাধিক ক্রিকেটার এক রকম উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলেন। রান পেলেন না দীপক চাহারও (১১)। বাংলাদেশের সফলতম বোলার এবাদত হোসেন ৪৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন। শাকিব আল হাসান ২ উইকেট নিলেন ৩৯ রান দিয়ে। ব্যাটের পর বল হাতেও ভারতকে চাপে রাখলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তিনি ৪৬ রান দিয়ে ২ উইকেট পেলেন।
প্রথমে ব্যাট নিয়ে মেহেদির দাপটে ২৭১ রান করে বাংলাদেশ। এক সময় ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল তারা। সেখান থেকে দলকে লড়াইয়ের জায়গায় নিয়ে গেলেন মেহেদি এবং মাহমুদুল্লাহ। মিরাপুরে শুরুতে মহম্মদ সিরাজরা বাংলাদেশকে দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচে চাপে ফেলে দিলেও সেটা ধরে রাখতে পারলেন না।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন। কিন্তু ভারতীয় বোলাররা শুরু থেকেই অস্বস্তিতে ফেলে দেন বাংলাদেশের ব্যাটারকে। মহম্মদ সিরাজ শুরুতেই ফিরিয়ে দেন অনামুল হককে। অন্য ওপেনার লিটনকেও ফেরান তিনি। ৩৯ রানের মধ্যেই দুই ওপেনার সাজঘরে। দু’টি উইকেটই নেন সিরাজ। এর পরেই উমরান মালিকের ধাক্কা। ১৫১ কিলোমিটার গতিতে করা বলে ছিটকে যায় নাজমুল হোসেন শান্তর স্টাম্প। রান পাননি শাকিবও। তাঁর উইকেট নেন ওয়াশিংটন। ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সেখান থেকে মেহেদি এবং মাহমুদুল্লাহ জুটিতে যোগ করেন ১৪৮ রান। প্রাক্তন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ ৭৭ রান করে সাজঘরে ফিরলেও শতরান করেন মেহেদি। এক দিনের ক্রিকেটে এটাই তাঁর প্রথম শতরান। এর আগে টেস্ট ক্রিকেটে শতরান করেছিলেন তিনি। মেহেদি ৮৩ বলে শতরান করেন। নাসুম আহমেদ ১১ বলে ১৮ রান করেন।
তিনটি উইকেট নেন ওয়াশিংটন। দু’টি উইকেট নেন সিরাজ এবং উমরান। বাংলাদেশের মাটিতে পর পর দু’টি এক দিনের সিরিজ় হারল ভারত। সাত বছর আগে প্রথম বার মহেন্দ্র সিংহের নেতৃত্বে তিন ম্যাচের সিরিজ় ১-২ ব্যবধানে হেরেছিল ভারত। এ বারও ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে যাওয়ায় তিন ম্যাচের সিরিজ় হাত ছাড়া হল রোহিত শর্মাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy