অস্ট্রেলিয়ান ওপেন হাতে নোভাক জোকোভিচ। ছবি: রয়টার্স
কাঁদলেন। তিনি শুধু কাঁদলেন। বুক ফাটা কান্না। যে কান্না দেখলে মনে হতে পারে তিনি হয়তো অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে হেরে গিয়েছেন। কাঁদতে কাঁদতে গ্যালারিতে লুটিয়ে পড়লেন নোভাক জোকোভিচ। কান্না কিছুতে থামছে না। তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন কোচ গোরান ইভানোসেভিচ। রয়েছে জোকোভিচের পরিবারও। তাঁরাও ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী তারকাকে থামাতে পারছেন না। কিছু ক্ষণ পর সামলালেন নিজেকে। কিন্তু গ্যালারি থেকে কোর্টে ফেরার সময়ও তাঁর মুখ থমথমে। বিশ্বাস করতে পারছেন না যে তিনি আবার বিশ্বের এক নম্বর। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন ১০ বার। সব অবিশ্বাস্য ঘটনা একসঙ্গে ঘটে গেলে যেমন ধাঁধা লেগে যায়। জোকোভিচের তখন তেমনই অবস্থা। নিজেকে গোছাতে একটু সময় নিলেন।
তত ক্ষণে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। স্টেফানোস চিচিপাস প্রথম বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে উঠেছিলেন। তিনি রানার্সের পুরস্কার নিয়ে জোকোভিচের গুণগান গাইলেন। তার পর এলেন জোকোভিচ। যাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল রড লেভার এরিনা। ফরাসি ওপেনের সুরকির কোর্ট যেমন রাফায়েল নাদাল নিজের ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন, উইম্বলডনের ঘাসের করতে যেমন রজার ফেডেরারের দাদাগিরি চলত, সিন্থেটিক কোর্ট তেমন জোকোভিচের। ১০টি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং তিনটি ইউএস ওপেন রয়েছে তাঁর। অর্থাৎ ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে ১৩টি-ই এসেছে সিন্থেটিক কোর্টে। পায়ের লিগামেন্টে ব্যথা, বাম ঊরুতে স্ট্র্যাপ বেধে খেলছিলেন ফাইনালেও, কিন্তু আহত বাঘ যে বাঘই হয় তা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন চিচিপাস। স্ট্রেট সেটে উড়ে গেলেন তিনি।
জোকোভিচ মঞ্চে উঠলেন পুরস্কার নিতে। রড লেভার এরিনার ভিতর এবং বাইরে গম গম করছে ‘জোকোভিচ’, ‘জোকোভিচ’ চিৎকার। নিজের আবেগকে সামলে নেওয়া জোকোভিচ বলেন, “আমার কেরিয়ারের সেরা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়। ধন্যবাদ চিচিপাস আমাকে সম্মান জানানোর জন্য। আমরা কোর্টে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করি, কিন্তু আমাদের উচিত সব সময় প্রতিপক্ষকে সম্মান করা। চিচিপাস এবং আমি খুব ছোট একটা দেশ থেকে এসেছি। গ্রিস এবং সার্বিয়াতে টেনিস খেলার তেমন চল নেই। আমাদের সামনে কোনও আদর্শ ছিল না। এমন কেউ ছিল যাঁকে দেখে আমরা শিখব। কিন্তু আমরা নিজেদের তৈরি করেছি। আমার মনে হয় যত বেশি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে একজন পড়বে, তত শক্তিশালী হয়ে উঠবে।”
গত বছর অস্ট্রেলিয়ান খেলতে পারেননি জোকোভিচ। তাঁর প্রিয় গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলতে পারেননি। সেই যন্ত্রণা তাঁর মধ্যে যে ছিল। এ বার জিতে সেই তা কিছুটা মিটল। পরের বার আবার ফেরার কথা জানালেন তিনি। ধন্যবাদ জানালেন পরিবার এবং কোচকে।
ফেডেরার থেমে গিয়েছেন। নাদাল চোটের কারণে পিছিয়ে পড়ছেন। জোকোভিচ এখনও তাঁর দাপট রেখে চলেছেন। গত বছর শুধু উইম্বলডন জিতেছিলেন। এ বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন দিয়ে শুরু করলেন। বাকি আরও তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। নাদালকে টপকে যেতে পারেন এই মরসুমেই। তিনি জানতেন এই গ্র্যান্ড স্ল্যাম আসবেই। তাই ২২ লেখা জ্যাকেট নিয়েই এসেছিলেন। তাঁর পরিবারের লোকজনও ম্যাচ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরে নিলেন ১০ লেখা জামা। তৈরি ছিলেন সকলে। জয় শুধু ছিল সময়ের অপেক্ষা। জোকোভিচ আরও এক বার প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনিই সর্বকালের সেরা টেনিস খেলোয়াড় কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy