উচ্ছ্বাস: অক্ষরকে অভিনন্দন সতীর্থদের। শনিবার কানপুরে। পিটিআই
একটা সময় অক্ষর পটেলকে বলা হত, সাদা বলের স্পিনার। কিন্তু এই বছরের শুরুতে টেস্ট অভিষেক হওয়ার পরে অক্ষর বুঝিয়ে দিয়েছে যে, লাল বলের ক্রিকেটেও ও ভারতের অন্যতম প্রধান বোলিং অস্ত্র হতে চলেছে। চার টেস্ট খেলে ৩২টি উইকেট। ইনিংসে পাঁচ বার পাঁচ বা তার বেশি উইকেট পেয়েছে। নিশ্চিন্তে বলা যায়, এই বছরের সেরা আবির্ভাব হিসেবে বাঁ-হাতি স্পিনার অক্ষরের নাম করাই যায়।
টেস্টের দ্বিতীয় দিন নিউজ়িল্যান্ডের ছিল। সারা দিনে একটা উইকেটও ফেলতে পারেনি ভারতীয় বোলাররা। শনিবার, তৃতীয় দিনের শুরুতে উইল ইয়ং এবং টম লাথাম ভাল খেলছিল। কিন্তু এক বার ১৫১ রানের মাথায় সেই জুটি আর অশ্বিন ভেঙে দেওয়ার পরে নিউজ়িল্যান্ড শেষ হয়ে গেল ২৯৬ রানে। অর্থাৎ, ওদের ১০ উইকেট পড়ে ১৪৫ রানে। পাঁচ শিকার অক্ষরের, তিনটি অশ্বিনের। জবাবে দিনের শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ১৪-১।
তৃতীয় দিনে অশ্বিনও ভাল বল করল। কিন্তু সেরা ছিল অক্ষরই। নিউজ়িল্যান্ডের ব্যাটাররা বুঝতেই পারছিল না বল কী করবে। এই বাঁ-হাতি স্পিনারের সবচেয়ে বড় গুণ হল, স্টাম্পের উপরে বল রাখে। একটা আলগা বল দেয় না স্ট্রোক খেলার জন্য। ওর বেশিরভাগ বল ভিতরের দিকে আসে। কিন্তু যেখানে উইকেটে বল পড়ে একটু স্পিন করে, সেখানে বিপজ্জনক হয়ে যায়। ব্যাটাররা বল ভিতরে আসবে বলে খেলে, কিন্তু স্পিন করে বাইরে বেরিয়ে যায়। তখন হয় উইকেটের পিছনে ক্যাচ যায়, নয়তো বোল্ড-এবিডব্লিউ হয়। এ দিন যেমন হল রস টেলর এবং টিম সাউদি। অক্ষর যেমন বল করছে, তাতে বিদেশেও কিন্তু ভারতীয় বোলিং আক্রমণে ওর কথা অবশ্যই ভাবা যেতে পারে।
কানপুরের উইকেট ভাঙতে শুরু করেছে। কখনও নিচু হচ্ছে। টম ব্লান্ডেল ও রকমই একেবারে নিচু হয়ে যাওয়া একটা বলে বোল্ড হয়ে গেল। রাচিন রবীন্দ্রের উইকেটটা রবীন্দ্র জাডেজা পেল বড় স্পিন করিয়ে। উইকেটে বোলারদের পায়ের দাগের ক্ষত তৈরি হচ্ছে। ওখানে বল পড়লে অনেকটা করে ঘুরছে। ধরেই নেওয়া যায়, পঞ্চম দিনে আরও খারাপ হবে। শেষ দিনে ভারতীয় স্পিনারদের বিরুদ্ধে খেলা খুবই কঠিন হবে কেন উইলিয়ামসনদের পক্ষে। এই টেস্টে ভারত জিততে না পারলে কিন্তু সেটা বড় অঘটন হবে। ভারত এখন এগিয়ে ৬৩ রানে। আর যদি আড়াইশো মতো রান চতুর্থ দিনে যোগ করতে পারে, তা হলে নিউজ়িল্যান্ডের নাগালের বাইরে চলে যাবে।
তবে দিনটা ভারতের পক্ষে গেলেও কয়েক জন সিনিয়র ক্রিকেটারকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার জায়গা থাকছে। যেমন, বাংলার ঋদ্ধিমান সাহা। ও একটু চোটপ্রবণ ক্রিকেটার। তার উপরে ব্যাটে রান নেই। এ দিন ঋদ্ধি চোট পাওয়ায় ওর জায়গায় বিকল্প কিপার হিসেবে নেমে কে এস ভরত কিন্তু নজর কাড়ল। দুটো খুব ভাল ক্যাচ নিল, একটা দারুণ স্টাম্পিং করল। ভরতের ব্যাটের হাতটাও ভাল। এমনিতে এখন এক নম্বর জায়গায় ঋষভ পন্থ। দু’নম্বরে ভরত উঠে এলে অবাক হব না।
ইশান্ত শর্মার একশো টেস্ট খেলা হয়ে গিয়েছে। এখন ও সরে দাঁড়াতে পারে। আমাদের রিজার্ভ বেঞ্চে মহম্মদ সিরাজের মতো বোলার আছে। আবেশ খান উঠে আসছে। তরুণদের প্রাধান্য দেওয়ার সময় এসেছে। অজিঙ্ক রাহানেও কিন্তু চাপের মধ্যে আছে। মেলবোর্ন টেস্টে সেঞ্চুরি ছাড়া এক বছরে ওর ব্যাটে কোনও রান নেই। আর কত সুযোগ পাবে রাহানে? শুভমন গিলকেও বুঝতে হবে, সুযোগ কাজে না লাগালে সমস্যা আছে। ওর দুর্বলতা বিপক্ষ দলগুলো বুঝে যাচ্ছে। ভিতরে ঢুকে আসা বলে কত বার আউট হল। কানপুরেও প্রথম ইনিংসের মতোই হাল হল দ্বিতীয় ইনিংসে।
তাই টেস্টে ভারত শাসন করলেও কিছু সমস্যা এখনও রয়ে যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy