—প্রতীকী চিত্র।
অ্যাশেজ় সিরিজ় শেষ হয়েছে এক সপ্তাহেরও বেশি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিতর্ক এখনও থামছে না। পঞ্চম টেস্টে বল পরিবর্তন করা নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তার তদন্ত করবে ‘ডিউক’। এই সংস্থাই অ্যাশেজ় সিরিজ়ের বল তৈরি করেছিল।
শেষ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসের মাঝে বল পরিবর্তন করা হয়। তার পরেই একের পর এক উইকেট হারিয়ে সেই টেস্টে হেরে গিয়েছিলেন প্যাট কামিন্সেরা। এই নিয়ে অস্ট্রেলিয়া দল সরকারী ভাবে কোনও অভিযোগ জানায়নি। কিন্ত দলের অনেকেই বল বদল করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে পরিবর্তন করা বলটির সঙ্গে ডিউক সংস্থার তৈরি ২০১৮-১৯ ব্যাচের বলগুলির মিল রয়েছে। তা হলে কি বল বদল করার সময় অ্যাশেজ সিরিজ়ের জন্য তৈরি বল নেওয়া হয়নি? এই প্রশ্নের উত্তর পেতেই তদন্ত শুরু করেছে নির্মাতা সংস্থা। ডিউকের কর্ণধার দিলীপ জাজোদিয়া বলেছেন, ‘‘প্রতি মরসুমের জন্য আমরা আলাদা বল তৈরি করি। প্রতিটি বলে তারিখ লেখা থাকে। অ্যাশেজে ব্যবহৃত সব বলেই ২০২৩ সাল ছাপা থাকার কথা। আমরা সরাসরি স্টেডিয়ামে বল সরবরাহ করি। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড বা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট সংস্থার হাতে বলগুলি দিই না। মাঠের কর্তৃপক্ষের হেফাজতেই বলগুলো থাকে। এই ক্ষেত্রে সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের কাছে বলগুলো ছিল। মরসুমের শুরুতেই সারে কর্তৃপক্ষকে আমরা বল পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। বলগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ হয়তো ঠিক মতো করেননি তাঁরা।’’
জাজোদিয়ার মতে, ২০১৮-১৯ মরসুমের বল বক্সে থাকা অসম্ভব নয়। তবে থাকা উচিত নয়। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় না, কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃত ভাবে পুরনো বল ওই বক্সে রাখবেন। তা ছাড়া ম্যাচ রেফারিরও নজর থাকে।’’ ডিউক সংস্থাকে ওভাল টেস্টের বল পরিবর্তনের ঘটনার তদন্ত করতে কেউ অনুরোধ করেনি। ডিউক কর্ণধার তদন্ত করতে চান স্বেচ্ছায়। জাজোদিয়া বলেছেন, ‘‘আমি নিজের স্বার্থেই তদন্ত করব। কারণ এই ধরনের অভিযোগ আমাকে প্রভাবিত করে। বলের গুণমানের সঙ্গে আমাদের সংস্থার দায়বদ্ধতা জড়িত। আমাদের তৈরি বল সম্পর্কে বিরূপ কথা উঠলে খতিয়ে দেখতেই হবে।’’
অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসের ৩৭ ওভারের পর ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস মাঠের দুই আম্পায়ারকে বল পরিবর্তনের অনুরোধ করেন। তাঁর দাবি ছিল, বলের আকৃতি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মাঠের দুই আম্পায়ার বল পরীক্ষা করার পর পরিবর্তনের অনুমতি দিয়েছিলেন। মাঠের আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অতিরিক্ত আম্পায়ার এক বাক্স বল নিয়ে মাঠে যান। তার মধ্যে থেকে একটি বেছে নিয়েছিলেন আম্পায়ারেরা। অভিযোগ বাক্সের বলগুলি ছিল তুলনায় নতুন। কম-বেশি ৩৭ ওভার একটি বলে খেলা হলে সেটি যে অবস্থায় থাকার কথা, তার থেকে অনেক ভাল অবস্থায় ছিল বাক্সেরগুলি। আকার নষ্ট হয়ে যাওয়া বলটির থেকে বাক্সের বলগুলির পালিশ ছিল অনেক ভাল। তার থেকেই একটি বল বেছে নিয়েছিলেন আম্পায়ারেরা। তাঁদের বেছে নেওয়া বলটিতে নির্মাতা সংস্থার সোনালী ছাপও ছিল স্পষ্ট।
বল পরিবর্তনের সময় অস্ট্রেলিয়া কোনও উইকেট না হারিয়ে ১৩৫ রান তুলেছিল। কিন্তু পরিবর্তনের পর বল তুলনায় অনেক বেশি সুইং করতে শুরু করেছিল। অস্ট্রেলিয়াও পর পর উইকেট হারিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ওভালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়েছিলেন কামিন্সেরা। খেলা শেষ হওয়ার পরই বল পরিবর্তন নিয়ে তদন্ত দাবি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক রিকি পন্টিং। ইংল্যান্ডের ওপেনার জ্যাক ক্রলিও বলেছিলেন, ‘‘বল পরিবর্তন অনেক পার্থক্য তৈরি করেছে খেলায়।’’ এ বার সত্যিই সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করছে অ্যাশেজে ব্যবহৃত ডিউক বলের নির্মাতা সংস্থা।
অস্ট্রেলিয়ার ওপেনিং ব্যাটার উসমান খোয়াজা বলেছিলেন, ‘‘বল পরিবর্তন করার পরেই আমি আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনার কাছে যাই। সরাসরি বলেছিলাম, যে বলে খেলা হচ্ছিল, এই বলটা তেমন নয়। বলের উপর একটা লেখা দেখা যাচ্ছে। অ্যাশেজ সিরিজ়ের কোনও বল এত শক্ত ছিল না! আমি সাধারণত ওপেন করি। নতুন বল সামলানো আমার কাছে নতুন নয়। কিন্তু ওই বলটা একটু অন্য রকম ছিল।’’
মাঠের আম্পায়ারদের নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে আইসিসি কোনও মন্তব্য করতে রাজি নয়। সংস্থার এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘প্রতিটি ম্যাচের আগে বল বেছে নেওয়া হয়। বেছে নেওয়া নির্দিষ্ট বলে খেলা হয়। এই ধরনের পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট করে রাখা বলগুলির মধ্যে থেকে একটি বেছে নেন আম্পায়ারেরা। ব্যবহৃত বলটির সঙ্গে বাক্সের যে বলটির সব থেকে বেশি মিল থাকে, সেটা বেছে নেন আম্পায়ারেরা।’’
বল পরিবর্তনের পর ১০ উইকেট হারিয়ে ওভালে হেরে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ফলে ওই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক চলছে। পঞ্চম টেস্ট ইংল্যান্ড জেতায় অ্যাশেজ শেষ হয়েছিল ২-২ ফলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy