বিতর্ক: সেঞ্চুরি করেও জায়গা হল না ঈশ্বরনের। ফাইল চিত্র
দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে সম্প্রতি বেসরকারি তিন টেস্টের সিরিজ়ে একটি সেঞ্চুরি ও একটি হাফসেঞ্চুরি আছে তাঁর। তিন ম্যাচে রানসংখ্যা ২০৫। তবুও রোহিত শর্মা চোট পাওয়ার পরে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ভারতীয় টেস্ট দলে জায়গা হল না অভিমন্যু ঈশ্বরনের।
বাংলার ওপেনারকে না নিয়ে ভারতীয় দলে সুযোগ দেওয়া হয় প্রিয়ঙ্ক পঞ্চালকে। তিনিও ‘এ’ দলের হয়ে ম্যাচ খেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। দু’ম্যাচে তাঁর রান ১২০। ঈশ্বরনের চেয়ে অনেকটাই কম। তবুও বাংলার ওপেনার ব্রাত্য। মাত্র একটি ৯৬ রানের ইনিংস খেলেই ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমে প্রবেশ করবেন গুজরাতের প্রিয়ঙ্ক। চেতন শর্মা নেতৃত্বাধীন নির্বাচকদের দল কি কোনও কারণ ছাড়াই দল নির্বাচন করছেন? কোন ক্রিকেটারকে কেন দলে নেওয়া হচ্ছে, তার কোনও ব্যাখ্যাও তো পাওয়া যাচ্ছে না।
ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে তাতে লেখা, ‘‘ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক রোহিত শর্মা বাঁ-পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছেন। মুম্বইয়ে অনুশীলনের সময়ই আঘাত পান রোহিত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ় থেকে তিনি ছিটকে গিয়েছেন। রোহিতের পরিবর্ত হিসেবে প্রিয়ঙ্ক পঞ্চালকে দলে নেওয়া হয়েছে।’’
কিন্তু কেন প্রিয়ঙ্ককে নেওয়া হল, তার কোনও ব্যাখ্যা নেই। মনোজ তিওয়ারি এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক বলছিলেন, ‘‘প্রত্যেকটি দল গড়া উচিত ক্রিকেটারদের বর্তমান ছন্দের ভিত্তিতে। কিন্তু ভারতে সেটা হচ্ছে না। প্রিয়ঙ্ক শেষ মরসুমে কেমন খেলেছে আর অভিমন্যু কেন শেষ মরসুমে রান পায়নি, সেই ভিত্তিতে দল গড়া একেবারেই উচিত নয়। গত মরসুমে লাল বলের ক্রিকেটই হয়নি। তা হলে কিসের ভিত্তিতে পঞ্চাল এগিয়ে গেল অভিমন্যুর চেয়ে?’’ যোগ করেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজ়। সেই দেশে সদ্য সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি করে ফিরেছে অভিমন্যু। ওকে দলে নেওয়া হলে ছেলেটা পরিশ্রমের পুরস্কার পেত। যদি একজন ক্রিকেটারকে রান করার পুরস্কারই না দেওয়া হয়, তা হলে এমনিতেই মনোবল নষ্ট হয়ে যায়। আমার সঙ্গে ঠিক এ রকম হয়েছিল।’’
মনোজ বলে চলেন, ‘‘ভারতের হয়ে সেঞ্চুরি করার পরে ১৪টি ম্যাচ বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে একজন ক্রিকেটারের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো খুব কঠিন। আমি বারবার বলেছি দল নির্বাচন যেন ম্যাচের মতোই সরাসরি সম্প্রচার হয়। সবাইকে জানানো হোক, কোন ক্রিকেটারকে কেন দলে নেওয়া হচ্ছে। কী করে সে অন্যের চেয়ে এগিয়ে থাকছে?’’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ঈশ্বরনের চেয়ে অভিজ্ঞতা বেশি পঞ্চালের। ১০০টি ম্যাচে তাঁর রানসংখ্যা ৭০১১। ২৪টি সেঞ্চুরিও রয়েছে। অন্য দিকে ঈশ্বরন খেলেছেন ৬৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। তাঁর রানসংখ্যা ৪৬০৬। সেঞ্চুরি রয়েছে ১৪টি। ১৯টি হাফসেঞ্চুরি। প্রিয়ঙ্কের ব্যাটিং গড় ৪৫.৫২। অভিমন্যুর ৪৩.৪৫। তবে বর্তমান ছন্দের ভিত্তিতে অভিমন্যু রানের দিক থেকে এগিয়ে।
ইংল্যান্ড সফরেও দলের সঙ্গে রাখা হয়েছিল দু’জনকেই। চোটের জন্য যদিও যেতে পারেননি প্রিয়ঙ্ক। সেই সফরে থাকলেও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি অভিমন্যু। আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তা হলে প্রিয়ঙ্ক কেন একা সুযোগ পেলেন? বাংলার কোচ অরুণ লালও মানতে পারছেন না এই সিদ্ধান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ়। সেখানে যখন একটা ছেলে রান করছে, তার অর্থ সে ওই দেশের পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার পিচে বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া একেবারেই সহজ নয়। একজন ব্যাটার সে ধরনের পিচে সেঞ্চুরি করছে মানে তার কোনও সমস্যা হচ্ছে না। কেন তা হলে ঈশ্বরনকে না নিয়ে পঞ্চালকে নেওয়া হল বুঝলাম না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy