হাজিরা: দিল্লি পুলিশের দফতরে জুয়াড়ি সঞ্জীব চাওলা (মাঝে)। পিটিআই
ক্রিকেট ম্যাচ গড়াপেটায় অভিযুক্ত জুয়াড়ি সঞ্জীব চাওলাকে যুক্তরাজ্য থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনল দিল্লি পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে লন্ডন থেকে দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার বিশেষ প্রতিনিধি দল ৫০ বছর বয়স্ক অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিয়ে নামে ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিমানবন্দর থেকেই ব্রিটিশ নাগরিক সঞ্জীবকে নিয়ে যাওয়া হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে আর কে পুরমে দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার সদর দফতরে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত সফরে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল। সেই সফরে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়াত অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রোনিয়ের সঙ্গে যোগসাজশ করে ম্যাচ গড়াপেটায় সঞ্জীব চাওলার প্রধান ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ। যা আরও জোরালো হয় কিং কমিশনে। যে তদন্ত কমিশনের সামনে হাজির হয়ে প্রয়াত দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ক্রোনিয়ে স্বীকার করেছিলেন, সেই সফরে ভারতের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে জুয়াড়িদের থেকে অর্থ নিয়ে ম্যাচ গড়াপেটা করেছিলেন তিনি।
ব্রিটিশ আদালতে চাওলার আইনজীবীর পেশ করা নথি থেকে জানা গিয়েছে দিল্লিতে জন্মানো এই ক্রিকেট-জুয়াড়ি ১৯৯৬ সালে ব্যবসা করার জন্য ভিসা নিয়ে লন্ডনে যান। কিন্তু প্রায়ই লন্ডন থেকে দিল্লিতে উড়ে আসতেন। ২০০০ সালে চাওলার ভারতীয় পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। তার পরে ২০০৫ সালে ব্রিটিশ ব্রিটিশ নাগরিক হয়ে যান তিনি। তদন্ত চলাকালীন আকষ্মিক বিমান দূর্ঘটনায় হ্যান্সি ক্রোনিয়ের মৃত্যু হলেও দিল্লি পুলিশ তদন্ত বন্ধ করেনি। ২০১৩ সালে চাওলার বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে দিল্লি পুলিশ। এমনকি তাদের হেফাজতে চাওলাকে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করে ভারতীয় আদালত। এর পরেই গত সাত বছর ধরে হ্যান্সি ক্রোনিয়ে কাণ্ডে অভিযুক্ত এই ক্রিকেট জুয়াড়িকে লন্ডন থেকে ভারতে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছিল। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডেই গ্রেফতার করা হয় চাওলাকে। পাঁচ ব্যক্তি-সহ এই জুয়াড়ির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০-র বি ধারায় ফৌজদারি ষড়যন্ত্র ও ৪২০ ধারায় প্রতারণা মামলা রয়েছে। এই মামলায় বাকি অভিযুক্তেরা হলেন, রাজেশ কালরা, কৃষাণ কুমার, সুনীল দারা ও মনমোহন খাত্তার। আর এক অভিযুক্ত ক্রোনিয়ে আগেই প্রয়াত হয়েছেন।
১৯৯২ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল ভারত-যুক্তরাজ্য বন্দী-প্রত্যার্পণ চুক্তি। দিল্লি পুলিশ তাঁকে সেই চুক্তি অনুযায়ী ভারতে নিয়ে এসে বিচার প্রক্রিয়া চালানোর চেষ্টা করছে। এটি জানার পরেই ইউরোপীয় আদালতের মানবাধিকার শাখায় আবেদন করেছিলেন সঞ্জীব। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায় গত সপ্তাহেই। কিন্তু শর্ত রাখা হয়েছিল, চাওলাকে বিশেষ কারাগারে একা রাখতে হবে। যেখানে উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি ওই কারাগৃহ যেন স্বাস্থ্যকর হয়। ভারত সরকার আদালতে জানিয়েছিল চাওলাকে পূর্ণ মেডিক্যাল সহায়তা দেওয়া হবে। এমনকি যেখানে চাওলাকে রাখা হবে সেই তিহাড় জেলে যাতে বন্দী সংঘর্ষে কোনও ভাবে সে জড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তারক্ষী ঘিরে থাকবে তাঁকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy