Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

আইসিসিকে চাপে ফেলে সৌরভদের পাশে অস্ট্রেলিয়া

সৌরভ এবং বোর্ডের অন্যান্য পদাদিকারীরা ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে লন্ডনে বসে বৈঠক করার পরে প্রস্তাব দেন, এই সুপার সিরিজ করার।

লক্ষ্য: আইসিসিকে পাল্টা চাপে রাখার কৌশল সৌরভের। ফাইল চিত্র

লক্ষ্য: আইসিসিকে পাল্টা চাপে রাখার কৌশল সৌরভের। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:২৯
Share: Save:

আইসিসি-কে চাপে ফেলে দিয়ে এ বার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রস্তাবিত ‘সুপার সিরিজ’-এর ভাবনাকে স্বাগত জানাল। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ডের সিইও কেভিন রবার্টস বলেছেন, ‘‘সুপার সিরিজের ভাবনাটি অভিনব। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ভারতীয় বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে এ রকম অভিনবত্ব দেখা যাচ্ছে।’’

সৌরভ এবং বোর্ডের অন্যান্য পদাদিকারীরা ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে লন্ডনে বসে বৈঠক করার পরে প্রস্তাব দেন, এই সুপার সিরিজ করার। ক্রিকেট বিশ্বের তিন সেরা শক্তি ভারত, ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়াকে রেখে এবং তার সঙ্গে আর একটি শক্তিশালী দলকে যোগ করে এক দিনের ক্রিকেটে এই প্রতিযোগিতা চালু করার ভাবনা রয়েছে। চতুর্থ দেশটি কারা হবে, তা এখনও ঠিক নেই। তবে এ রকম প্রতিযোগিতার ভাবনা যে আসলে আইসিসি-কে পাল্টা চাপে রাখার কৌশল, তা নিয়ে সংশয় নেই।

ভারতীয় বোর্ডেরই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহর এখন আইসিসি প্রধান। এক জন ভারতীয় থাকতেও কেন আইসিসি-র সঙ্গে সংঘাতে যাচ্ছে ভারতীয় বোর্ড? তার কারণ হচ্ছে, ভারতীয় বোর্ডের অধিকাংশ শীর্ষস্থানীয় কর্তা মনে করেন, শশাঙ্ক আইসিসি প্রধান হয়ে ভারতীয় বোর্ডকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। একে তো শ্রীনিবাসন আইসিসি প্রধান থাকার সময়ের তুলনায় বোর্ডের প্রাপ্য অর্থ কমিয়ে দিয়েছেন মনোহর। তার উপর মনোহর প্রত্যেক বছর একটি করে আইসিসি ইভেন্ট করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। ভারতীয় কর্তারা মনে করছেন, আইপিএলের জনপ্রিয়তা খর্ব করতেই এই চাল চেলেছেন মনোহর। আইসিসি ক্যালেন্ডার আরও ঠাসা হয়ে গেলে আইপিএল করতে সমস্যায় পড়তে পারে ভারতীয় বোর্ড। প্রত্যেক বছর এমন জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি লিগের একচেটিয়া রাজত্বেও টান পড়তে পারে। এই মুহূর্তে আইসিসি ইভেন্টের নিয়ম হচ্ছে, প্রত্যেক দু’বছর অন্তর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হয় এবং প্রত্যেক চার বছরে হয় একটি করে পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপ।

মনোহরের নেতৃত্বে আইসিসি এমনকি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও প্রত্যেক বছর করার কথা ভেবেছে। যেমন, ২০২০ এবং ২০২১ পর-পর দু’বছরে দু’টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে। এ নিয়েও খটাখটি লেগেছে ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে। ভারতীয় কর্তাদের পর্যবেক্ষণ, আইপিএলের উপর আঘাত হানার জন্যই মনোহর এমন পরিকল্পনা এনেছেন। জগমোহন ডালমিয়ার চালু করা পঞ্চাশ ওভারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও যে তুলে দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ করে দেওয়া হয়েছে, তাতেও সায় নেই ভারতীয় কর্তাদের। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সূচি নিয়ে তাঁরা যুদ্ধং দেহি মনোভাবই নিচ্ছে আইসিসি-র বিরুদ্ধে।

আর এই লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মতো মহাশক্তিকে নিয়ে নিতে পারলেই কেল্লা ফতে বলে মনে করছেন ভারতীয় বোর্ডের প্রশাসকেরা। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তাই সুপার সিরিজ প্রতিযোগিতা চালুর কথা ভাবা হচ্ছে। আইসিসি-র প্রস্তাবিত প্রত্যেক বছর একটি করে তাদের ইভেন্টের পরিবর্তে এই সুপার সিরিজ সূচিতে ঢুকিয়ে দিতে পারে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের ত্রিশক্তির জোট। যে জোট শ্রীনি আইসিসি প্রধান থাকাকালীন তৈরি হয়েছিল। মনোহর এসে ভেঙে দেন। তা ফের গড়ে উঠতে পারে।

সেই নিরিখে অস্ট্রেলীয় বোর্ডের সিইও-র মন্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। রবার্টস বলছেন, ‘‘সৌরভ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা ভারতের মনোভাবে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখছি। আগের অবস্থান ত্যাগ করে ওরা কলকাতায় দিনরাতের টেস্ট ম্যাচ আয়োজন করল। তা খুব সফলও হল। এখন আরও একটি অভিনব ভাবনা। সুপার সিরিজ আয়োজনের উদ্যোগ।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, নতুন বছরেই তিনি ভারতে এবং বাংলাদেশে আসছেন ক্রিকেট সূচি নিয়ে কথা বলতে। নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তানের সঙ্গেও তাঁদের কথা হয়েছে বলে জানান। আইসিসি যে আন্তর্জাতিক সূচি বানাতে চাইছে, তাতে সায় নেই ভারতীয় বোর্ডের। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দেশকে পাশে নিতে পারলে অবশ্যই সেই লড়াই আরও জোরালো হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy