স্বস্তি: বেইতিয়া ও তাঁর বান্ধবীর সঙ্গে বাড়ির পথে কিবু ভিকুনা। নিজস্ব চিত্র
ভোর ৫.০০: মঙ্গলবার আমস্টারডাম পৌঁছে আর ডায়েরি লিখতে পারিনি। বিমানে মাত্র ঘণ্টা দু’য়েক লাগে মাদ্রিদ পৌঁছতে। অথচ আমরা যেতে পারলাম না। তাই একটু হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। আসলে এখন সারা দিনে মাত্র একটাই বিমান মাদ্রিদ যাচ্ছে। সকাল ন’টায়। আমাদের বিমান আমস্টারডামের মাটি ছুঁয়েছিল সকাল আটটা নাগাদ। ফলে মাদ্রিদের বিমান ধরা সম্ভব হয়নি। বিমানবন্দরের কাছেই একটি হোটেলে উঠলাম। সকালে বিমানবন্দর রওনা হওয়ার আগে ডায়েরি লিখতে বসলাম। গত কাল টোমাসের সঙ্গে পায়ে হেঁটেই আমস্টারডাম শহরটা ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। রাস্তায় গাড়ি খুব কম। অনেক দিন পরে মুখাবরণ ছাড়াই মানুষকে রাস্তায় দেখলাম। বেশ কয়েকটা রেস্তরাঁ খোলা থাকলেও কাউন্টার থেকে খাবার নিয়েই চলে যেতে হবে।
সকাল ৭.৪৫: বিমানবন্দরে পৌঁছলাম। সিকিউরিটি চেকিংয়ের পরে লাউঞ্জে বসে রয়েছি। সবাই মিলে একটা ছবিও তোলা হল।
সকাল ৮.৩৫: বিমানে উঠলাম। আর মাত্র দু’ঘণ্টা। তার পরেই মাদ্রিদে নামব। দারুণ আনন্দ হচ্ছিল। কয়েক দিন আগেও যে অনিশ্চিত ছিল আমাদের দেশে ফেরা।
সকাল ১১. ২০: অবশেষে স্পেনের মাটিতে পা রাখলাম। থার্মাল চেকের পরেই রীতিমতো পুলিশের জেরার মুখে পড়লাম। কোন দেশ থেকে আমরা আসছি? এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কেন স্পেনে ফিরলাম? কারও কোনও শারীরিক সমস্যা আছে কি না? ঘণ্টাখানেক পরে মুক্তি পেলাম। মারিয়ো মাদ্রিদেই থাকে। ও বিদায় নিয়ে চলে গেল। আমাদের যেতে হবে স্পেনের উত্তরে পামপ্লোনা শহরে। মাদ্রিদ থেকে প্রায় ঘণ্টা পাঁচেকের পথ। আমার সঙ্গে বেইতিয়া আর ওর বান্ধবীও যাবে। তিন জনে মিলে একটা গাড়ি ভাড়া করে যখন রওনা হলাম, তখন দুপুর দুটো। আমরা ঠিক করেছিলাম, রাস্তায় কোনও রেস্তরাঁয় মধ্যাহ্নভোজ সেরে নেব। কিন্তু হাইওয়ের ধারে পেট্রোল পাম্প খোলা থাকলেও রেস্তরাঁ বন্ধ। সঙ্গে যা খাবার ছিল তাই তিন জনে ভাগ করে খেলাম। এতটা রাস্তা এলাম, পুলিশের গাড়িই শুধু চোখে পড়ল।
সন্ধে ৬.০০: অবেশেষে বাড়ি পৌঁছলাম। কলকাতা ছেড়েছিলাম গত রবিবার সকাল দশটায়। পামপ্লোনায় আমার বাড়িতে পৌঁছলাম বুধবার সন্ধে ছ’টায়। এই অভিজ্ঞতা কখনও ভুলব না। একটাই আক্ষেপ, স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হল না। ও এখন পোলান্ডে নিভৃতবাসে। আমাকেও এখন গৃহবন্দি থাকতে হবে।
(সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক অনুলিখন)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy