সহমর্মী: বিপন্ন পরিবারের পাশে জুঁই চন্দ্র (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
এলাকার নানা প্রান্ত থেকে ফোন আসছে থানায়, খাদ্য সামগ্রী বা নানা সাহায্য চেয়ে। খাবার বা ওষুধ নিয়ে ওঁরা পৌঁছে যাচ্ছেন মানুষের দরজায়।
রাস্তায় ভিড় সরাতে পুলিশের গাড়িতে চড়ে মাইক নিয়ে নাগরিকদের অনুরোধ করতে দেখা যাচ্ছে ওঁদের অনেককেই।
কাউকে কাউকে দেখা যাচ্ছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালে। বিমান চলাচল যত দিন চালু ছিল, কলকাতায় নামা রোগীদের সামলাতেও তাঁরা ছিলেন। করোনাভাইরাসের জেরে লকডাউনের প্রভাব পড়েছে খেলাতে। সব খেলাই বন্ধ। মেয়েদের ফুটবল লিগ থেমে রয়েছে। এই অবস্থায় কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের নানা বিভাগে কর্মরত মহিলা ফুটবলার, ভলিবলার বা অন্য খেলোয়াড়দের দেখা যাচ্ছে রাস্তায়। করোনা মোকাবিলার জন্য নানা কাজে।
বারাসতের জুঁই চন্দ্র সিভিক ভলিন্টিয়ার। বাংলার হয়ে এক সময় দাপিয়ে ফুটবল খেলা জুঁই বলছিলেন, ‘‘কেউ খাবার পাচ্ছেন না জানলেই থানা থেকে পাঠানো হচ্ছে চাল, ডাল, আলুর প্যাকেট দিয়ে। সেগুলো আমরা বাড়ি খুঁজে পৌঁছে দিচ্ছি। পাশাপাশি ডিউটিতে আসার সময় কারও খোঁজ পেলে তা জানাচ্ছি থানায়। তার পরে সরকারি সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছি।’’ একই থানায় কর্মরত ভলিবলার মান্তু পোদ্দার। নাগরিকদের ঘরবন্দি করতে মাইক নিয়ে প্রচারেও যাচ্ছেন তিনি। মান্তু নিজে ভ্যানে বসে অনুরোধ করছেন সরকারি নিয়ম মানার জন্য। বলছিলেন, ‘‘খেলার বাইরে এটা করতে ভাল লাগছে।’’
রাজ্য বা কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানায় বা লালবাজারে এ রকম অনেক মেয়ে ক্রীড়াবিদ কাজ করছেন এখন। সবাই রাস্তায় না নামলেও নানা ভাবে সাহায্য করছেন। ফোন ধরছেন। অভিযোগ শুনছেন। তারপরে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। অনেকে আবার রিজার্ভে বসে রয়েছেন ডাক পেলেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবেন বলে। ফুটবলে যেমন রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে নামতে হয় পরিবর্ত হিসেবে।
ধরা যাক লালাবাজারে গ্রিন পুলিশে কর্মরত অরুন্ধতী দে, কুসুমিতা দাস বা আদুরি খাতুনের মতো ফুটবলারের কথা। এঁদের কেউ এখনও খেলেন, কেউ কোচিং করান। অরুন্ধতী ও কুসুমিতাদের কয়েক দিন আগেই দায়িত্ব পড়েছিল পর পর কয়েকটি হাসপাতালে। তাঁদের প্রত্যেককে নার্সের মতো সাদা পোশাক, মুখাবরণ, গ্লাভস দিয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন তলায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল বিমানবন্দর থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা রোগীদের সামাল দিতে। অরুন্ধতী বলছিলেন, ‘‘অনেকেই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যেতে চাইছেন পরীক্ষা না করিয়ে। তাঁদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে রাজি করানোর কাজে যুক্ত ছিলাম আমরা।’’
বাংলা দলের প্রাক্তন ফুটবলার অরুন্ধতী পথশিশুদের ফুটবল শেখানোর দায়িত্বে। বাংলার আর এক নামী ফুটবলার কুসুমিতা বলছিলেন, ‘‘খেলা তো এখন নেই। সমাজের জন্য এই কাজটা করতে ভালই লাগছে।’’ বর্ণালী সিংহ, অলি মিত্ররা নিয়মিত করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাস্তায় নামছেন। নৌসাবা আলম, পরভিনা ইয়াসমিনরা অপেক্ষায় রয়েছেন। ফুটবল থেকে দূরে থাকলেও করোনা আটকাতে তাঁরা মাঠে নামবেন, ডাক এলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy