লক্ষ্য: বার্মিংহামে ভাল ফলের আশায় ত্রিয়াশা। নিজস্ব চিত্র
বাংলার প্রথম মহিলা সাইক্লিস্ট হয়ে কমনওয়েলথ গেমসে অভিষেক স্মরণীয় হল না ত্রিয়াশা পালের। বার্মিংহামে শুক্রবার টিম স্প্রিন্ট বিভাগের যোগ্যতা অর্জন পর্বে সপ্তম স্থানে শেষ করে ভারতীয় দল। ত্রিয়াশা হতাশ হলেও হার মানতে রাজি নন। আজ, শনিবার লি ভ্যালি ভেলোপার্কে স্প্রিন্ট বিভাগের যোগ্যতা অর্জন পর্বে নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া তিনি। শুক্রবার সন্ধ্যায় বার্মিংহাম থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘আমাদের শুরুটা ভাল হয়নি। তবুও আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু পারলাম না। শনিবার নিজেকে উজাড় করে দিতে চাই।’’
বঙ্গ সাইক্লিস্টের জীবনে লড়াই অবশ্য নতুন নয়। মাস ছয়েক আগেও তাঁর ভবিষ্যৎ ছিল অনিশ্চয়তার মেঘে ঢাকা!গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন ত্রিয়াশা। দু’টি সোনাও জেতেন গুরুনানক দেব বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরশিক্ষায় স্তাতক স্তরের এই ছাত্রী। কিন্তু তৃতীয় ইভেন্ট চলাকালীনই ঘটে যায় বিপর্যয়। সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে মারাত্মক জখম হন তিনি। ভেঙে যায় কাঁধের হাড়। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, অবিলম্বে অস্ত্রোপচার করে ধাতব প্লেট বসাতে হবে কাঁধে। নদীয়ার মদনপুরের বছর কুড়ির ত্রিয়াশার জীবনে মুহূর্তের মধ্যেই অন্ধকার নেমে এসেছিল। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুধু নীরবে চোখের জল ফেলতেন। নিজেকে প্রশ্ন করতেন, আর কি পারব ট্র্যাকে নেমে সাইকেল চালাতে? ত্রিয়াশা পেরেছিলেন। তিন মাসের মধ্যেই ট্র্যাকে ফিরে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। যন্ত্রণার সেই দিনগুলিই এখন প্রেরণা বঙ্গ সাইক্লিস্টের। ত্রিয়াশা বলছিলেন, ‘‘আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় তৃতীয় ইভেন্টে সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে কাঁধে চোট পাওয়ার পরেও খুব একটা ঘাবড়ে যাইনি। কিন্তু হাসপাতালে পরীক্ষা করে ধরা পড়ে, হাড় ভেঙে গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানালেন, অস্ত্রোপচার করে কাঁধে ধাতব প্লেট বসাতে হবে। সেই সময় আমার মনে একটাই প্রশ্ন ছিল, আবার পারব তো সাইকেল চালাতে? মানসিক ভাবেসম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিলাম।’’ মানসিক বিপর্যয় কাটিয়ে কী ভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন? ত্রিয়াশার কথায়, ‘‘আমার মা ও বাবা সব সময় উদ্বুদ্ধ করেছেন। ওঁদের জন্য হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছিলাম। সর্বক্ষণ নিজেকে বলতাম, ট্র্যাকে আমাকে ফিরতে হবেই। ধীরে ধীরে শুরু করলাম অনুশীলন। সেই সময় অবশ্য সাইকেল চালাতাম না। নিজেকে ফিট রাখার জন্য শুধু হাঁটতাম। মাত্র দু’মাস প্রস্তুতি নিয়ে এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপে টিম স্প্রিন্টে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলাম।”
শনিবার মেয়েদের সাইক্লিংয়ে স্প্রিন্ট বিভাগ শুরু ভারতীয় সময় দুপুর ২.৩২ থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy