শক্তিমান: নেটে ছক্কা মারার অনুশীলনে রাসেল। বৃহস্পতিবার। কেকেআর
চেন্নাই সুপার কিংস এ বার আর ঘরের মাঠে খেলছে না। তাই কিছুটা বদলে যেতে পারে চিদম্বরম স্টেডিয়ামের পিচের চরিত্রও। সাধারণত যে মাঠে লাল মাটির পিচই বেশি দেখা যায়, সেখানে এ বার বদলে যাচ্ছে পিচের মাটি। এ বারের আইপিএলের জন্য শুধু কালো মাটির পিচই তৈরি হচ্ছে চেন্নাইয়ে।
৯ এপ্রিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে এ বারের আইপিএল। তার পরে ১১ তারিখ, সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে তাদের অভিযান শুরু করছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। সাধারণত চেন্নাই বলতে ভেসে ওঠে, মন্থর-নিচু বাউন্সের পিচ। যেখানে স্পিনাররা সাহায্য পেয়ে থাকে। যা নাইটদের স্পিন শক্তির পক্ষে উপযোগীই হত। কিন্তু চেন্নাইয়ের পিচ তৈরির সঙ্গে যুক্ত থাকা কয়েক জনের কাছে খোঁজ নিয়ে অন্য একটা ছবির সন্ধান
পাওয়া গেল।
চিদম্বরম স্টেডিয়ামে আটটা ‘স্ট্রিপ’ আছে। অর্থাৎ, মাঠের মাঝখানের যে আটটা জায়গায় পিচ তৈরি করা যেতে পারে। এ বার চারটে স্ট্রিপে আইপিএলের ম্যাচগুলো হবে। দু’ধরনের মাটি দিয়ে তৈরি হয় চেন্নাইয়ের বাইশ গজ। লাল এবং কালো। পিচ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক জন চেন্নাই থেকে বৃহস্পতিবার ফোনে বললেন, ‘‘এ বার আমরা লাল মাটি ব্যবহার করছি না। শুধু কালো মাটির পিচই তৈরি হবে।’’
লাল এবং কালো মাটির তফাত কী হয়? নাম লেখা যাবে না এই শর্তে এক পিচ প্রস্তুতকারী বলছিলেন, ‘‘সব চেয়ে বড় যে তফাতটা, তা হল, লাল মাটি একটু ঝুরঝুরে ধরনের হয়। ফলে পিচ তাড়াতাড়ি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অন্য দিকে, কালো মাটির পিচ অনেক জমাট। সহজে ভাঙে না। এখানে ব্যাটসম্যানরা বেশি সুবিধে পায়। আবার চেন্নাইয়ের লাল মাটির সঙ্গে মুম্বইয়ের লাল মাটির অনেক পার্থক্য আছে।’’
পিচের রং দেখে অবশ্য সব সময় বোঝা যায় না কী মাটি ব্যবহার করা হয়েছে। কালচে ধরনের পিচ মানেই যে কালো মাটির তৈরি এমনটা নয়। সাদা, ফ্যাকাসে রংয়ের পিচও কালো মাটি দিয়ে তৈরি হয়। কালো মাটির পিচে জল ধরে রাখার ক্ষমতা অনেক বেশি। এই ধরনের পিচে বালির চেয়ে মাটির পরিমাণও বেশি থাকে। জমাট, শক্ত পিচ হওয়ায় ব্যাটসম্যানদের স্ট্রোক খেলতেও সুবিধে হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এও বললেন, ‘‘এ বার পিচের উপরে হাল্কা ঘাসের আস্তরণও রাখা হচ্ছে। যাতে বাঁধুনিটা ভাল থাকে।’’
অতীতে যখন সিএসকে চিদম্বরম স্টেডিয়ামে খেলত, তখন একটা স্পষ্ট নির্দেশ যেত পিচ প্রস্তুতকারকদের কাছে। নিচু বাউন্সের, মন্থর পিচ বানাতে হবে। যাতে স্পিনাররা ফায়দা তুলতে পারে। সাধারণত তিন স্পিনারে নামতেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং পুরো ফায়দা তুলতেন সেই সব পিচের। এ বার ধোনির দল চেন্নাইয়ে খেলছে না। এই মাঠে কেকেআরের তিন প্রতিদ্বন্দ্বী হল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, আরসিবি এবং সানরাইজ়ার্স। কাউকেই বাড়তি সুবিধে দিচ্ছে না তামিলনাড়ু ক্রিকেট সংস্থা। তারা এমন পিচ বানাতে চাইছে, যেখানে ভাল খেলা হবে। সংস্থার সচিব এস রামাস্বামী ফোনে বলছিলেন, ‘‘আমরা স্পোর্টিং উইকেট বানাচ্ছি। যেখানে পেসার, স্পিনার, ব্যাটসম্যান— সবাই সুবিধে পাবে। স্পিনাররা শুধু নয়।’’
তবে পিচ প্রস্তুতকারীদের সমস্যায় ফেলতে পারে চেন্নাইয়ের গরম। ৩০-৩৫ ডিগ্রি চলছে। এই গরমে পিচ ফেটে যাওয়ার, শুকনো হয়ে পড়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। যে কারণে নিয়মিত জল দেওয়া চলছে পিচ এবং আউটফিল্ডে। একটা তথ্য অবশ্য স্বস্তি দিতে পারে দলগুলোকে। শিশির নিয়ে বিশেষ সমস্যা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর চেয়ে কেকেআরের স্পিন শক্তি অনেক ভাল। সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তী, কুলদীপ যাদব, হরভজন সিংহ, শাকিব আল হাসান। এ বার চেন্নাইয়ের বাইশ গজ থেকে তাঁরা বাড়তি সুবিধে পান কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy