Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

চাপের মুখে সিরিজ জয় বোঝাল তরুণরা তৈরি

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২-১ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় বুঝিয়ে দিল তরুণরা তৈরি। যেমন দীপক, শ্রেয়স আইয়ার, শিবম দুবে। 

৩৩ বলে ঝোড়ো ৬২ রানের ইনিংস শ্রেয়সের।ডান দিকে, মোক্ষম সময়ে তিন শিকার শিবম দুবের। পিটিআই

৩৩ বলে ঝোড়ো ৬২ রানের ইনিংস শ্রেয়সের।ডান দিকে, মোক্ষম সময়ে তিন শিকার শিবম দুবের। পিটিআই

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৯
Share: Save:

পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার জন্য যে ছেলেটার পকেটে অস্ট্রেলিয়াগামী বিমানের বোর্ডিংপাস রবিবার চলে এল, তার নাম দীপক চাহার।

একই ম্যাচে হ্যাটট্রিক এবং বিশ্বরেকর্ড। ম্যাচ এবং সিরিজের সেরা ক্রিকেটার। নাগপুরে দীপকের বোলিং হিসেব: ৩.২-০-৭-৬। অর্থাৎ ২০ বল করে ছয় উইকেট। সিরিজে তিন ম্যাচে ৫৬ রানে আট উইকেট। ইকনমি ৫.৪১, স্ট্রাইক রেট ৭.৭। যে ছেলেটা এই রকম বোলিং করতে পারে, তাকে নিশ্চয়ই আর বাইরে রাখার কথা কেউ ভাববে না। যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামি, ভুবনেশ্বর কুমারের পাশাপাশি আরও এক জন পেসার পেয়ে গেল ভারত। যার ক্ষমতা আছে একটা ব্যাটিং লাইনকে ভাঙার।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২-১ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় বুঝিয়ে দিল তরুণরা তৈরি। যেমন দীপক, শ্রেয়স আইয়ার, শিবম দুবে।

দীপক কেন এত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে? এক, লেংথ। ও ছোট বোলিং প্রায়ই করে না। অর্থাৎ, শর্ট বল খুবই কম দেয়। একটা দারুণ লেংথে বলটা রাখতে পারে। ব্যাটের খুব কাছেও নয় আবার শর্টও নয়। আদর্শ থ্রি কোয়ার্টার লেংথ। ব্যাটসম্যানরা শট খেলতে বিভ্রান্ত হয়।

দুই, দু’দিকেই বল মুভ করানোর ক্ষমতা। অনেকটা ভুবনেশ্বর কুমারের মতো। দীপকের বলে হয়তো সেই গতি নেই, কিন্তু আউটসুইং, ইনসুইং— দুটোই করাতে পারে বলে ব্যাটসম্যানদের চাপে রেখে যায়।

তিন, সিমের ব্যবহার। দীপকের সুইং দেখে যদি ভুবনেশ্বরের কথা মনে পড়ে, তবে ওর ‘সিম পজিশন’ দেখে শামিকে মনে পড়ছে। সিমটাকে একেবারে সোজা রেখে বলটা ছাড়ে।

আরও পড়ুন: সৌরভ-শাহের পুরো মেয়াদের প্রস্তাব, শ্রীনিও উঠেছেন ভেসে

দীপকের আরও একটা ব্যাপার ভাল লাগল। নাগপুরে পরের দিকে শিশির পড়ায় বোলাররা খুব ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিল। প্রথম দুটো ম্যাচে দারুণ বল করেছিল যুজবেন্দ্র চহাল। কিন্তু এই ম্যাচে চার ওভারে ৪৩ রান দিয়ে দিল। কারণ একটাই। শিশিরের জন্য বল গ্রিপ করতে পারছিল না চহাল। কিন্তু শিশির সামলেই এ রকম স্বপ্নের বোলিং করে গেল দীপক।

রাজস্থানের এই ২৭ বছর বয়সি পেসারের উত্থানের পিছনে এক জনের কথা বলতেই হবে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলার সময় দীপকের হাতে নতুন বলটা ধোনিই তুলে দিয়েছিল। সেই দীপক এখন আরও উন্নতি করেছে। পুরনো বলেও ভাল বল করছে। এ দিন তো ১৮ এবং ২০তম ওভারে বল করতে এসে হ্যাটট্রিক করে গেল দীপক।

কোনও সন্দেহ নেই, দীপকই ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার। সিরিজেরও। তবে এ দিন দুটো ডেলিভারির কথা বলতে চাই, যা ম্যাচের রংটা বদলে দেয়। ভারত প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ১৭৪-৫ তোলে। যা তাড়া করতে নেমে দলকে ভাল জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের তরুণ ওপেনার মহম্মদ নইম। ৪৮ বলে ৮১ রান করার পরে একটা নিখুঁত ইয়র্কারে নইমের স্টাম্প ছিটকে দিল শিবম দুবে। তার পরের বলেই ক্রস সিম কাজে লাগিয়ে, বাড়তি বাউন্সে তুলে নিল আফিফ হোসেনের উইকেট। ওই দুটো ডেলিভারি বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। শিবমও কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাল।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই সিরিজে নতুন দল নিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিল ভারত। যে পরীক্ষায় ‘লেটার’ নিয়ে পাশ করে যাচ্ছে দু’জন ক্রিকেটার। এক জন অবশ্যই দীপক। অন্য জন শ্রেয়স আইয়ার। শিবমকেও নজরে রাখতে হবে।

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ শুরুর আগে একটা প্রশ্নে জাতীয় বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছিল। ভারতীয় ব্যাটিংয়ে চার নম্বরে কে নামবে? উত্তরটা পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই পাওয়া হয়ে গেল। এই সিরিজে শ্রেয়স বুঝিয়ে দিল, চার নম্বরের জায়গায় ওই আপাতত সেরা ব্যাট।

এ দিন শ্রেয়সের ব্যাট থেকে পাওয়া গেল ৩৩ বলে ৬২। মেরেছে তিনটে চার, পাঁচটা ছয়। যার মধ্যে রয়েছে আফিফ হোসেনকে মারা পরপর তিনটি ছয়। এই তিনটি ছয় বুঝিয়ে দেয় শ্রেয়সের টাইমিং আর শক্তির মিশেলটা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy