ত্রিমূর্তি: ইনদওর ম্যাচের পরে নবদীপ সাইনি (বাঁ দিকে) ও শার্দূল ঠাকুরের সঙ্গে আড্ডার মেজাজে যুজবেন্দ্র চহাল (মাঝে)। টুইটার
ইনদওরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ভারত শুধু বড় জয়ই পায়নি, পেয়েছে দু’জন পেস বোলারকেও। তাঁদের এক জন, নবদীপ সাইনির আগুনে গতির সামনে অসহায় দেখিয়েছে শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের। দেড়শো কিলোমিটার গতির উপরেও বল করেছেন তিনি। ইয়র্কারে ছিটকে দিয়েছেন স্টাম্প। অন্য জন, শার্দূল ঠাকুর নিখুঁত নিয়ন্ত্রণে চাপ বাড়িয়ে গিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের উপরে।
ম্যাচের পরে ভারতের নতুন দুই অস্ত্রকে দেখা গেল ‘চহাল টিভি’-তে। যুজবেন্দ্র চহালের সঙ্গে। যেখানে সাইনির উদ্দেশে চহাল বলেন, ‘‘আমাদের দলে এক জন ইয়র্কার বিশেষজ্ঞ আছে। যশপ্রীত বুমরা। যাকে বলা হয়, ইয়র্কারের রাজা। তুমিও দারুণ ইয়র্কার দিয়েছ। তা হলে তোমাকে কি বলব? ইয়র্কারের রানি?’’ যা শুনে হাসতে হাসতে সাইনি বলেন, ‘‘ইয়র্কারটা নিখুঁত করার জন্য আমি খুব পরিশ্রম করছি। বুমরার যে ক’টা সাক্ষাৎকার আমি শুনেছি, তাতে দেখলাম ও অনুশীলনের কথা খুব বলছে। আমিও সেই মতো অনুশীলনে নিজেকে নিখুঁত করার চেষ্টা করছি।’’ সাইনি এও জানিয়েছেন, আগে তিনি শুধু গতির উপরে জোর িদতেন। কিন্তু বুমরাদের দেখে বুঝেছেন, বৈচিত্রও আনতে হবে হাতে।
দীপক চাহার চোট না পেলে আবার খেলাই হত না শার্দূলের। পাওয়া সুযোগ দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়েছেন এই পেসার। মঙ্গলবার ইনদওরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তিন উইকেট পেয়েছেন তিনি। তার পরে শার্দূলের উপলব্ধি, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন তিনি অনেক পরিণত
বোলার হয়ে উঠেছেন। ইনদওরের ম্যাচের পরে শার্দূল বলেছেন, ‘‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এত কম সময়ের মধ্যে খেলা হয় যে, পারফরম্যান্সের হেরফের হবেই। কখনও ভাল হবে, কখনও খারাপ হবে। এই ফর্ম্যাটে যত বেশি খেলা যাবে, তত শেখার সুযোগ পাওয়া যাবে। অভিজ্ঞতাও বাড়বে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বা টেস্ট ক্রিকেটে নিজের খেলাটাকে নিয়ে ভাবার সুযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে সে সুযোগ থাকে না।’’
গত কাল ম্যাচ জিতে ওঠার পরে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির মুখে শোনা গিয়েছে সাইনি-শার্দূলের প্রশংসা। বুধবার ভারতীয় দল পুণে এসে পৌঁছছে। যেখানে শুক্রবার সিরিজের শেষ ম্যাচ। পুণে আসার পথে শার্দূল এবং রবীন্দ্র জাডেজার সঙ্গে ছবি টুইটও করেন কোহালি। শার্দূল মনে করেন, গত কয়েক বছর ধরে আইপিএলে খেলার ফলে তাঁর বোলিংয়ের ধার অনেক বেড়ে গিয়েছে। দীপক চাহারের মতোই মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস থেকে উঠে এসেছেন শার্দূল। তাঁর কথায়, ‘‘আমি অনুশীলনে সব সময় জোর দিয়ে এসেছি। কারণ, অনুশীলনের সময়েই নিজের দোষ-ত্রুটি মেরামত করা যায়। নতুন অস্ত্র যোগ করা যায়। গত কয়েক বছর ধরে আমি সেটাই করে আসছি। পাশাপাশি দু’তিন বছর ধরে আইপিএল এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেও নিজেকে তৈরি করেছি।’’
শার্দূলের মুখে শোনা গিয়েছে ভারতের বোলিং কোচ বি অরুণের প্রশংসাও। এই পেসারের কথায়, ‘‘এখন ক্রীড়াসূচিটা এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিশেষ এক জন কোচের কাছে অনুশীলন করাটা খুব কঠিন হয়ে গিয়েছে। আমি মাঝে মাঝেই ভারতীয় দলের বাইরে চলে যাই। কখনও আমি মুম্বইয়ের হয়ে খেলি, কখনও চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। আবার কখনও ভারতের হয়ে। তবে ইদানীং ভারতের বোলিং কোচ বি অরুণ আমাকে খুব সাহায্য করেছেন। ওঁর পরামর্শ পেয়ে খুব উপকৃত হয়েছি।’’
ইনদওরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তিনটি উইকেটই শার্দূল পেয়েছেন ১৯তম ওভারে। কোনও বিশেষ পরিকল্পনা ছিল কি আপনার? শার্দূল বলেছেন, ‘‘আমার লক্ষ্য ছিল যত বেশি সম্ভব ডট বল (যে বলে রান হয় না) করা। ভাগ্য ভাল ওই সময় তিন উইকেট পেয়ে যাই। তবে আমি খুব পরিশ্রম করেছি নিজেকে উন্নত করার। সেই পরিশ্রমের ফল যখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাওয়া যায়, তখন তৃপ্তিটা বেশি হয়।’’ ওই ওভারের শেষ দু’বলে দু’উইকেট তুলে এখন হ্যাটট্রিকের মুখে শার্দূল। পুণে ম্যাচে নিজের প্রথম বলে উইকেট পেলেই হ্যাটট্রিক হয়ে যাবে।
মুগ্ধ আর্থার: ভারতীয় ক্রিকেটে যে ভাবে তরুণ ক্রিকেটারদের উত্থান ঘটছে, তা দেখে মুগ্ধ শ্রীলঙ্কার কোচ মিকি আর্থার। শুধু তাই নয়, ভারতের বোলিং, ব্যাটিং, ফিল্ডিং— সব কিছুরই প্রশংসা শোনা গিয়েছে আর্থারের মুখে। শ্রীলঙ্কার কোচ বলেছেন, ‘‘ভারতীয় দল যে ভাবে তরুণ ক্রিকেটারদের সুযোগ করে দিচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ওদের দায়িত্ব নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। ওদের তরুণ ক্রিকেটাররাও সেই আস্থার মর্যাদা দিচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy