তুলনা: কোহালির দায়বদ্ধতায় যেন রোনাল্ডোর সাধনার ছবি। ফাইল চিত্র
বিরাট কোহালিকে দেখে তাঁর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর কথা মনে পড়ে বলে জানাচ্ছেন ব্রায়ান লারা। সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লারা বলেছেন, কোহালির দায়বদ্ধতা দেখে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধায় মনে ভরে ওঠে তাঁর। কে এল রাহুল বা রোহিত শর্মার চেয়ে প্রতিভায় এগিয়ে না থাকলেও পরিশ্রম এবং সাধনায় বিরাট সকলকে পিছিয়ে ফেলে দিচ্ছেন। ঠিক যেমন ফুটবলের মঞ্চে করেছেন রোনাল্ডো।
‘‘বিরাটের দায়বদ্ধতা অতুলনীয়। ওর প্রস্তুতির ধরনও অসাধারণ। যে রকম সাধনা নিয়ে ও নিজেকে তৈরি করে, তা শিক্ষণীয়,’’ বলছেন লারা। দ্রুত যোগ করছেন, ‘‘কে এল রাহুল বা রোহিত শর্মার চেয়ে ও বেশি প্রতিভাবান বলে আমি মনে করি না। আমার কাছে বিরাট ক্রিকেটের রোনাল্ডো। ওর মানসিক শক্তি আর শারীরিক সক্ষমতা অবিশ্বাস্য!’’ এখানেই শেষ নয়। লারা আরও উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন কিং কোহালিকে। সোজাসুজি বলে দিচ্ছেন, যে কোনও যুগের শ্রেষ্ঠ দলে হেসেখেলে ঢুকে পড়তেন বিরাট। তা সে সত্তর দশকে লয়েডের সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ— যাদের নামকরণ হয়েছিল ‘আনবিটেবল্স’ বা ১৯৪৮-এ ব্র্যাডম্যানের ‘ইনিভিনসিবল্স’।
কোহালিতে মুগ্ধ লারা বলছেন, ‘‘ওর ব্যাটিং নৈপুণ্য অন্য স্তরের। বিরাট এমন এক ক্রিকেটার, যাকে কোনও যুগের দল গড়তে বসেই বাইরে রাখা যাবে না। কেউ যদি সব ধরনের ক্রিকেটে ৫০-এর উপর ব্যাটিং গড় রাখতে পারে, তাকে বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে মানতেই হবে। এমন কৃতিত্বের কথা আগে কেউ কখনও শোনেনি।’’
লারা নিজে সর্বকালের সেরা কিংবদন্তিদের এক জন। টেস্টে ১২,০০০ রান করার পাশাপাশি যিনি দু’বার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরের অভিনব কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। প্রথমে গ্যারি সোবার্সের ৩৬৫ রানের রেকর্ড ভেঙে ৩৭৫ করার পরে ম্যাথু হেডেন সর্বোচ্চ টেস্ট রানের রেকর্ড গড়েন ৩৮০ করে। লারা সেই রেকর্ড ফের নিজের দখলে আনেন ৪০০ করে। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট নানা অমর নায়ক উপহার দিয়েছে। তার পরেও লারা স্থান করে নিয়েছেন সর্বকালের সেরাদের মধ্যে। সর্বকালের সেরা বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান যদি তাঁরই দেশের গ্যারি সোবার্স হন, তা হলে দ্বিতীয় স্থানেই থাকতে পারেন স্যর গ্যারির প্রিয় পাত্র লারা। বিশ্ব ক্রিকেটের দুই সমসাময়িক লারা এবং সচিনের মধ্যে সেরা কে, সেই তর্ক এখনও অব্যাহত। কোহালিকে নিয়ে তাঁর সর্বোচ্চ প্রশংসার অর্থই অন্য।
আরও পড়ুন: মেলবোর্নে দিনরাতের টেস্টের দাবি ওয়ার্নের
রোনাল্ডোর সঙ্গে কোহালির তুলনা অবশ্য আগেও হয়েছে। মূলত দু’জনের হার-না-মানা মনোভাব, আগ্রাসী মানসিকতা, লিয়োনেল মেসির মতো দারুণ প্রতিভাসম্পন্ন না হয়েও নিজেকে নিংড়ে দিয়ে সাফল্য তুলে আনার সংগ্রামী জীবনকাহিনির জন্যই এই তুলনা চলে এসেছে। স্বয়ং কোহালিরও অন্যতম প্রিয় ক্রীড়া চরিত্র সি আর সেভেন। লারা অবশ্য আরও এক জনকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত। ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস। ক্যারিবিয়ান প্রিন্স নিজে টেস্ট ক্রিকেটের সেরা রান তাড়া-করা ম্যাচগুলির একটির নায়ক ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেলএন্ডারদের নিয়ে ম্যাচ জিতেছিলেন। হেডিংলেতে স্টোকসের ১৩৫ নট আউট নিয়ে তাই বলে ফেলছেন, ‘‘অবিশ্বাস্য ইনিংস! শুধু ওই ইনিংসটিই নয়, বিশ্বকাপ ফাইনালেও ৮৪ নট আউট করেছিল স্টোকস। খুব কঠিন সময় পেরিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে এসেছিল ও, সেটাও ভুলে গেলে চলবে না।’’
আরও পড়ুন: জ়িদান বনাম পেপ, সহজ প্রতিপক্ষ বার্সেলোনার
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে অনেক বদল ঘটে গিয়েছে। ক্রিকেটারেরা এখন নানা দেশের লিগ খেলতে দৌড়চ্ছেন। লারা অন্যায় দেখছেন না। ‘‘আগেও তো এটা হয়েছে। কেরি প্যাকারের ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলেন অনেকেই।’’ যোগ করছেন, ‘‘সবাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলবে না। টি-টোয়েন্টি খেলে যদি কারও জীবিকা অর্জন হয়, তা হলে কেন নয়? আমি এতে কোনও অন্যায় দেখছি না।’’ তবে লারা চান, তাঁর দেশের বোর্ড এমন এক নকশা তৈরি করুক, যাতে তরুণ প্রতিভারা টেস্ট ক্রিকেট খেলতে আগ্রহী হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy