Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Cricket

‘ঠিকই বলেছে, ব্ল্যাকদের আটকাতেই তো বাউন্সার নিয়মে বদল’

ইংল্যান্ডের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটার রোল্যান্ড বুচার। বার্বাডোজে জন্ম তাঁর। আর সেখানেই ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট অভিষেক ঘটেছিল। প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ব্যাটে ক্যালিপসোর সুর তুলতেন রোল্যান্ড বুচার। —নিজস্ব চিত্র।

ব্যাটে ক্যালিপসোর সুর তুলতেন রোল্যান্ড বুচার। —নিজস্ব চিত্র।

কৃশানু মজুমদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ১৬:০৪
Share: Save:

করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে সদ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বল গড়িয়েছে। সাউদাম্পটনের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজে ইতিমধ্যেই এগিয়ে গিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৯ বছর আগে এ রকমই একটা ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট সিরিজে আবির্ভাব ঘটেছিল রোল্যান্ড বুচারের।

ক্রিকেট ইতিহাস বলছে, ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটার তিনি। বার্বাডোজে জন্ম তাঁর। আর সেখানেই ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট অভিষেক ঘটেছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন বিশ্বত্রাসী এক শক্তি। সেই সিরিজের পরে বুচারকে ছিটকে যেতে হয় টিম থেকে। দলে প্রত্যাবর্তনের স্বপ্ন যখন দেখছেন, ঠিক তখনই জর্জ ফেরিসের বল তাঁর স্বপ্ন চুরমার করে দেয়। ইংল্যান্ডের হয়ে আর ডাক পাননি তিনি। বিশ্বের একমাত্র টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে উয়েফা কোচিং লাইসেন্সও বুচারের পকেটে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট, বর্ণবাদ, নিজের কেরিয়ার নিয়ে বার্বাডোজ থেকে রোল্যান্ড বুচার কথা বললেন আনন্দবাজার ডিজিট্যাল-এর সঙ্গে।

ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম টেস্ট নিশ্চয় দেখেছেন? করোনা আবহে প্রথম টেস্ট ম্যাচ কেমন লাগল?

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই জয়টাকে দারুণ বলতেই হবে। কোন পরিস্থিতিতে টেস্ট ম্যাচটা হয়েছে তা মাথায় রাখতে হবে। সারা বিশ্বে কোভিড ১৯ পরিস্থিতি এতটাই আতঙ্ক তৈরি করেছে যে, খেলাধুলো স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল। সিরিজ শুরুর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজে চর্চা চলছিল, এ রকম পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ড সফর করা ঠিক কি না। কারণ ইংল্যান্ডেও তো হানা দিয়েছে করোনা ভাইরাস। তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত, বোর্ড সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। ক্রিকেটারদের সুরক্ষার জন্য যা যা করার দরকার ছিল, তার সবটাই করেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। ম্যাচের কথা বলতে হলে বলব, দারুণ একটা উপভোগ্য টেস্ট ম্যাচ হয়েছে। এক দম শেষ বেলা পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা ছিল। প্রথম টেস্ট ম্যাচের ফলাফল যে কোনও দিকেই যেতে পারত। টেস্ট ক্রিকেট তো ঠিক এ রকমই হওয়া উচিত। বিদেশের মাটিতে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইদানীং খুব একটা ভাল খেলে না। এ রকম একটা সময়ে বহু দিন পর মাঠে নেমে জয় এবং সিরিজে এগিয়ে যাওয়া খুবই মূল্যবান।

আরও পড়ুন: ‘ও ব্যাট করতে নামলে সব সমস্যার সমাধান’, পছন্দের ব্যাটিং পার্টনার সম্পর্কে বললেন পন্থ

বার্বাডোজে আপনার জন্ম। আবার খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে। সাউদাম্পটনে কাদের সমর্থন করলেন?

ইংল্যান্ডের হয়ে খেললেও, আমার জন্ম কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজে। মনে প্রাণে আমি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান। এখন আমি ফিরে এসেছি বার্বাডোজে। এখানকার ক্রিকেটের সঙ্গে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই আমি সাপোর্ট করবো। সাপোর্ট করেছিও। গত দু’দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে খুব একটা সাফল্য আসেনি। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করে এই পরিস্থিতি থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেনে তোলার চেষ্টা করছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পুরনো গরিমা ফিরিয়ে আনতে চাই আমরা।

সম্প্রতি বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন মাইকেল হোল্ডিং। আপনি বিষয়টিকে কী ভাবে দেখছেন?

মাইকেল হোল্ডিং হৃদয় দিয়ে কথা বলে। একদম সঠিক সময়ে শক্তিশালী বক্তব্য রেখেছে হোল্ডিং। আমার মনে হয় অতীতের ক্রীড়াবিদদের আরও বেশি সরব হওয়া উচিত ছিল। নিজেদের মতপ্রকাশ করা জরুরি ছিল। ভিভ রিচার্ডস আগে এগিয়ে এসেছিল। নিজের গায়ের রং নিয়ে ও গর্বিতও ছিল। আমার মনে হয় আরও ব্যাপক ভাবে প্রতিবাদ হওয়া উচিত ছিল। এখন সারা বিশ্ব জুড়ে সংখ্যালঘুদের সমানাধিকারের দাবি উঠেছে, আন্দোলন হচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র ক্রিকেট নয়, এই সমস্যার সমাধানের জন্য সব ধরনের খেলা এবং সব সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে। সবারই কর্তব্য রয়েছে। সবাই এগিয়ে এলে তবেই হয়তো অন্য এক পৃথিবীর সন্ধান আমরা পাব।

জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পরে গোটা বিশ্বে আছড়ে পড়েছে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের ঢেউ।

অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক একটা ঘটনা ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনকে শক্তিশালী করেছে। জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়। পুলিশের মার হজম করে মৃত্যু হওয়া মানুষের দীর্ঘ তালিকায় শেষ সংযোজন ফ্লয়েড জর্জ। এ নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছে। বিশ্বের সমমনোভাবাপন্ন মানুষরা জোটবদ্ধ হয়ে এই ধরনের বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুক।

কয়েক দিন আগে ড্যারেন স্যামি বলেছিলেন, লিলি-থমসন বাউন্সার দিলে ক্ষতি নেই। কিন্তু একটা কৃষ্ণাঙ্গ দল যখনই পেস বোলিংয়ে দাপট দেখাতে শুরু করে দিল, তখনই বদলে গেল বাউন্সারের নিয়মকানুন।

ঠিকই বলেছে স্যামি। বিশ্বত্রাস হয়ে ওঠা ক্যারিবিয়ান পেসারদের দাপট কমাতে এবং বিশ্বক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাধিপত্য রুখতেই প্রতি ব্যাটসম্যানকে ওভারপিছু একটি বাউন্সারের নিয়ম চালু করা হয়। অজুহাত দেখানো হয়, দর্শকদের পয়সা উশুল হচ্ছে না। কেননা দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণ ওভার বোলিং করে উঠতে পারছেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা। তাঁদের ঠগ-জোচ্চোর বলে মনে করা হচ্ছিল। সেই কারণে প্রতি ঘণ্টায় ন্যূনতম ১৫ ওভারের নিয়ম চালু করা হয়। পাশাপাশি এক ওভারে কোনও ব্যাটসম্যানকে একটির বেশি বাউন্সার দেওয়া যাবে না, এই নিয়মও চলু হয়। সেই সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে কোনও দলই সারাদিন ব্যাট করতে পারত না। বিশ্ব জুড়ে লিলি বা থমসনরা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যে ত্রাসের সঞ্চার করতেন তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। কেবলমাত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই ফাঁদে ফেলা হয়।

ইংল্যান্ডের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটার আপনি। কী ভাবে দেখেন এই পরিচয়?

গায়ের রংয়ের জন্য আমি ইংল্যান্ড জাতীয় দলে সুযোগ পাইনি। ক্রিকেটীয় দক্ষতার জন্যই আমাকে দলে নেওয়া হয়েছিল। কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটারকে দলে সুযোগ দেওয়াই যদি প্রধান উদ্দেশ্য হত, তা হলে আমার জায়গায় যে কোনও ক্রিকেটারকেই নিতে পারত। সে সময়ে আমি ভাল ছন্দে ব্যাট করছিলাম। মিডলসেক্সের হয়ে ১৯৮০ সালে বেশ কিছু বড় স্কোর করেছিলাম। তার ফলে আমি নজরে পড়ে গিয়েছিলাম। বার্মিংহ্যামে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ানডে-তে ডাক পাই। অজিদের বিরুদ্ধে আমি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলাম। শুরুটা ভালই হয়েছিল বলা যেতে পারে। পরের বছর ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আমাকে স্কোয়াডে রাখা হয়েছিল। আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলেই মনে করি। জেফ্রি বয়কট, ইয়ান বোথাম, গ্রাহাম গুচদের মতো তারকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার সুযোগ শুধুমাত্র গায়ের রং দেখিয়ে পাওয়া যায় না। আমাকে দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছিল পরবর্তীকালে। আমার সামনেই অনেকে বলেছিল, তুমি যদি পারো, তা হলে আমরা পারব না কেন?

ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবলেও সুনাম ছিল বুচারের। —নিজস্ব চিত্র।

আপনার জন্ম বার্বাডোজে। সেই বার্বাডোজেই আপনার অভিষেক টেস্ট ম্যাচ ইংল্যান্ডের হয়ে। স্থানীয় সংবাদপত্রে লেখা হয়েছিল, আওয়ার বয়, দেয়ার ব্যাট। খেলার সময় অদ্ভুত এক আবেগ নিশ্চয় কাজ করেছিল?

ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে খেলায় সব সময়েই উত্তেজনার মশলা থাকে। আর বার্বাডোজে খেলা হলে তো কথাই নেই। বার্বাডোজ এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে যোগসূত্র ছিল। বার্বাডোজকে ‘লিটল ইংল্যান্ড’ বলা হয়। ১৯৬৬ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছিল বার্বাডোজ। ব্রিটিশ শাসনের প্রভাব পড়েছিল বার্বাডোজের উপরে। তাই এখানে খেলা হলে একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার দারুণ একটা চেষ্টা চলত। আমি যখন খেলতাম, তখনকার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইংল্যান্ডের তুলনায় অনেক শক্তিশালী ছিল। এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। ইংল্যান্ড এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। তবে একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার অদম্য চেষ্টা, ইচ্ছাশক্তি এখনও বদলায়নি। বার্বাডোজ টেস্ট আমার কাছে একইসঙ্গে হর্ষ আর বিষাদের। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে দলের ম্যানেজার কেন ব্যারিংটনের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়। ওঁর মৃত্যুতে আমরা খুব ভেঙে পড়েছিলাম। এক দিকে অভিষেক টেস্ট ম্যাচ খেলার আনন্দ, অন্য দিকে ম্যানেজারের মৃত্যুর শোক। অভিষেক টেস্টে খুব বেশি রান করতে পারিনি। প্রথম ইনিংসে ১৭ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ২ রান করেছিলাম। জন্মস্থান বার্বাডোজে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলা আমার কাছে বাড়তি পাওনা। ওই দিনটা আমার কাছে খুবই মূল্যবান। এটা আমার স্মৃতিতে চিরকাল থেকে যাবে।

বার্বাডোজ থেকে ইংল্যান্ডে গেলেন কেন?

আমার বিশেষ কিছুই করার ছিল না। মা-বাবা অনেক আগেই ইংল্যান্ডে চলে গিয়েছিলেন। ঠাকুমার সঙ্গে আমি বার্বাডোজে থাকতাম। ১৩ বছর বয়সে আমি বার্বাডোজ ছেড়ে ইংল্যান্ড চলে গিয়েছিলাম। ইংল্যান্ডের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রথম প্রথম বেশ কষ্টই হত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আবহাওয়া ছিল উষ্ণ প্রকৃতির। অন্য দিকে, ইংল্যান্ড ছিল ঠান্ডা। ভাল না লাগলেও আমার কিছু করার ছিল না। কারণ ওই বয়সে মা-বাবা যা চান, সেটা মেনে নিতেই আমরা বাধ্য থাকি। ইংল্যান্ডে দেখতাম আমার বয়সি অনেক ছেলে ফুটবল খেলছে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে আবার শুধুই ছিল ক্রিকেট। বার্বাডোজে থাকার সময়েই ক্রিকেটের প্রতি আমার ভালবাসা জন্মায়। স্বপ্ন দেখতাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এক দিন খেলব। কিন্তু ভাগ্য আমাকে অন্য দিকে নিয়ে যায়। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে পেরেছি বলে নিজেকে আমি ভাগ্যবান বলেই মনে করি।

কিন্তু তিনটে টেস্ট আর তিনটে ওয়ানডে খেলেই শেষ হয়ে গেল আপনার কেরিয়ার।

ইংল্যান্ড দলে হয়তো পরেও আমি ফিরতে পারতাম। ১৯৮৩ সালে আমি মনে হয় জীবনের সেরা ফর্মে ছিলাম। দলে প্রত্যাবর্তনের স্বপ্ন দেখছিলাম। কী যে হয়ে গেল! লেস্টারশায়ারের বিরুদ্ধে ম্যাচটা ছিল লর্ডসে। জর্জ ফেরিসের শর্ট বলটা ক্যাজুয়ালি হুক করতে গিয়েছিলাম। এখন মনে হয় অতটা ক্যাজুয়াল না হলেই হত। ব্যাটে বলে হল না। বাঁ চোখের নীচে হাড় ভেঙে গেল। ইংল্যান্ড দলে ফেরার স্বপ্নও তখনই ভেঙে গিয়েছিল। এটাই জীবন। মেনে নিতে হয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের থ্রি ডব্লিউ আর নেই। আপনার নেক্সট ডোর নেবার এভারটন উইকসও চলে গেলেন।

এভারটন উইকস শুধুমাত্র ক্রিকেটার ছিলেন না। দারুণ এক জন মানুষ ছিলেন। আমরা প্রতিবেশী ছিলাম এবং প্রায়শই দেখা হত। যখনই দেখা হত, কথাবার্তা শুরুর আগেই উনি বলতেন, তোমার স্ত্রী কেমন আছেন? ওঁকে আমার শ্রদ্ধা জানাবে। ওঁর মতো ভদ্রলোক বিরল। ক্ষুরধার বুদ্ধি ছিল এভার্টনের। ক্রিকেটকে নিছক খেলা হিসেবেই দেখেননি তিনি৷ ক্রিকেট ছিল ওঁর জীবন। বার্বাডোজের সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ওঁর নামেই নামাঙ্কিত। আমি ১০ বছর ধরে সেন্টার অফ এক্সিলেন্স-এর চেয়ারম্যান। ঘটনাক্রমে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা ন’জন এবং জোফ্রা আর্চার এখান থেকেই উঠে এসেছে।

আরও পড়ুন: লিলিদের ছাড়, ‘ব্ল্যাক’ বাহিনীকে আটকাতেই বাউন্সারে কোপ, বিধ্বংসী স্যামি

আপনি বোধহয় একমাত্র ক্রিকেটার যাঁর উয়েফা বি লাইসেন্স রয়েছে?

ইংল্যান্ডে এসে ফুটবলের প্রেমে পড়ে যাই। ক্রিকেট কেরিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ফুটবলে কোচিং ডিগ্রি নিতে যাই। সেই সময়ে ব্রেন্ডন রজার্সের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ব্রেন্ডন রজার্স এখন লেস্টার সিটির ম্যানেজার। ওঁর সঙ্গে দারুণ ভাব জমে গিয়েছিল। ব্রেন্ডনের ডাকে সাড়া দিয়ে আমি রিডিং ফুটবল ক্লাবে যাই। সেখানে কাজ করি। আর্সেনালের সকার স্কুলের কোচ হিসেবেও কাজ করেছি। সেই সময়ে আমার উপলব্ধি হয়েছিল বেশি দূর এগনো আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। কারণ আমি এক জন কৃষ্ণাঙ্গ।

আপনার কথার সূত্র ধরেই বলি, ওয়েইশ শ বলেছিলেন, কৃষ্ণাঙ্গরা সে ভাবে কোচিং করানোর সুযোগ পান না।

অবশ্যই। কৃষ্ণাঙ্গ কোচরা সুযোগই পান না। সারা বিশ্বের সব খেলার দিকে তাকিয়ে দেখুন। কাউন্টি ক্রিকেটে বিক্রম সোলাঙ্কি ছা়ড়া আর কৃষাঙ্গ কোচ কোথায়? ফুটবলের প্রিমিয়ার লিগের ছবিটাও একইরকম। কৃষাঙ্গ কোচরা কি তা হলে কোচিং করানোর যোগ্য নন? তাঁরাও তো শ্বেতাঙ্গদের সঙ্গেই কোচিংয়ের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। সমস্যাটা তা হলে যোগ্যতার নয়! এর পিছনে নিশ্চয় অন্য কোনও কারণ রয়েছে। গোটা বিষয়টা খুবই হতাশাজনক।

অন্য বিষয়গুলি:

West Indies England Roland Butcher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy