নতুন চুলের স্টাইল নিয়ে শহরে লিয়েন্ডার পেজ। খুদে ভক্তের সঙ্গে কলকাতা ম্যারাথনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর। বুধবার। ছবি: উৎপল সরকার।
কেমন আইপিটিএল ফেরত লিয়েন্ডার পেজ?
হপ্তাতিনেকের ভেতর পাঁচ দেশ ঘুরে খেলেও যেন আরও বেশি ফিট দেখাচ্ছে। তার চেয়েও চোখে পড়ার মতো— চুলের নতুন স্টাইল!
লিয়েন্ডার পেজের এখন এক নতুন পরিচয়ও— কলকাতা ম্যারাথনের অ্যাম্বাস্যাডর।
যিনি বুধবার সাতসকালে সিঙ্গাপুর থেকে সটান মধ্য কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে পৌঁছেছিলেন ৬ মার্চ অনুষ্ঠেয় কলকাতা ম্যারাথনের ‘লঞ্চিং’-এর জন্য। ক্রিসমাসের মাত্র দু’দিন আগে জন্ম-শহরে এসেও ঝটিতি সফর সেরে বিকেলে মুম্বইয়ের ফ্লাইট ধরলেন। বড়দিনের সেলিব্রেশন গঙ্গাপারের বদলে আরবসাগরের তীরের শহরে করার তাগিদে। তার আগে কলকাতার কাছে একটা শপথ রেখে গেলেন লিয়েন্ডার। রিও অলিম্পিক্স নিয়ে নিজের একটা গভীর ইচ্ছের কথাও জানিয়ে গেলেন!
বলরুম ঠাসা মিডিয়ার সামনে বলে দিলেন, ‘‘পরের দু’বছরের মধ্যে কলকাতায় একটা স্পোর্টস একসেলেন্স সেন্টার বানাব আমি। যে শহরে আমি জন্মেছি, যেখান থেকে আমার নয়-দশ-এগারো বছর বয়সে নিজের হিরোদের পেয়েছি, দিনের পর দিন যাঁদের অনুপ্রেরণায় আমি আজকের লিয়েন্ডার হয়ে উঠেছি, সেই শহরকে, সেই শহরের মানুষদের কিছু ফেরত দেওয়ার খুব ইচ্ছে আমার। চাই আমার শহর থেকে কয়েক জন চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় বার করতে।’’
উদ্যোক্তাদের স্বাভাবিক অনুরোধ, যে অনুষ্ঠানের জন্য এখানে মিডিয়ার সমবেত হওয়া তার বাইরে অন্য বিষয়ে প্রশ্ন করা যাবে না লিয়েন্ডারকে। বাস্তবে অবশ্য উল্টোই হল। কলকাতা ম্যারাথনের চেয়ে অনেক বেশি প্রশ্ন উড়ে গেল দেশের টেনিস আইকনের কাছে তাঁর আসন্ন নতুন পেশাদার মরসুম এবং রিও অলিম্পিক্স নিয়ে। আর লিয়েন্ডারও দিন কয়েক আগের সানিয়া মির্জার মতোই এই প্রথম ভাঙলেন ২০১৬ অলিম্পিক্সে তাঁর পছন্দের মিক্সড ডাবলস জুটির কথা।
‘‘দেখুন, আমি দু’হাজার পনেরোটা সার্কিটে খেলেইছি পরের বছরের অলিম্পিক্সের কথা মাথায় রেখে। এ বছর চারটের মধ্যে তিনটে মিক্সড ডাবলস গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছি। সবাই মিক্সড ডাবলসে আমার টাটকা সাফল্যের কথা জানে। আমি চাই রিওতে ভারতের সেরা মিক্সড ডাবলস টিম খেলুক,’’ স্পষ্ট ইঙ্গিত সানিয়ার সঙ্গে তিনিই অলিম্পিক্স কোর্টে নামতে চান। কোনও রোহন বোপান্নাকে জায়গা ছাড়তে রাজি নন।
নতুন পেশাদার মরসুম চেন্নাই ওপেন দিয়ে শুরু করবেন। আপাতত ফরাসি বিগ সার্ভার জেরেমি চাডি তাঁর পার্টনার। অস্ট্রেলীয় ওপেন মিক্সড ডাবলসে অবশ্যই সঙ্গী মার্টিনা হিঙ্গিস। লিয়েন্ডার গর্বের সঙ্গে আরও বললেন, ‘‘রিও আমার সাত নম্বর অলিম্পিক্স হবে। টেনিসের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বেশি বার অলিম্পিক্সে নামা। বলতে পারেন এটা আমার বিশ্বরেকর্ড। অলিম্পিক্স সিঙ্গলসে পদক জিতেছি ঊনিশ বছর আগে। তবু রিও থেকে আমার দ্বিতীয় অলিম্পিক্স পদক জিততে ভীষণ ভাবে চাইছি। ম্যারাথনের মতোই আমার কাছে সেই দৌড়। অলিম্পিক্স আর ছয় মাস দূরে। এখন থেকে প্রতিটা দিন আমার কাছে এক কিলোমিটার করে সেই টার্গেটের দিকে দৌড়নোর মতো।’’
শহরে আগামী মার্চের কাকভোরে যখন ৪২.১৯৫ কিলোমিটার দৌড় শুরুর বাঁশি বাজবে, লিয়েন্ডার অবশ্য তখন ক্যালিফোর্নিয়ার মরুশহর পাম স্প্রিংসে!
তাতে কী! নবম কলকাতা ম্যারাথনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার দিনই যেন টুর্নামেন্টকে গতি দিয়ে দিলেন তার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর। মঞ্চে তখন লিয়েন্ডারের দু’পাশে কলকাতা ম্যারাথনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নুমি মেটা এবং স্পনসর আইডিবিআই ফেডারেল লাইফ ইনসিওরেন্সের সিইও। কলকাতা ম্যারাথনের পরের দিনই ক্যালিফোর্নিয়ায় এটিপি ট্যুর টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ায় লিয়েন্ডারকে দৌড়তে দেখা যাবে না শহরে। তবে এ দিনের অনুষ্ঠানে চালানো এক ভিডিও-বার্তায় ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়ে দিলেন, তিনি ৬ মার্চ দৌড়বেন। রাজ্যের সমস্ত ক্লাব এবং ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ করলেন, দৌড়ে অংশ নিতে। মঞ্চে অভিনেত্রী জুন মাল্যর উপস্থিতি বোঝাল, শহরের একমাত্র ‘ফুল ম্যারাথনে’ একঝাঁক টলিউড সেলিব্রিটিও থাকবেন। উদ্যোক্তারা প্রায় নিশ্চিত, গত বারের পনেরো হাজার রানারের সংখ্যাটা ছাড়িয়ে যাবে এ বার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy