ছবি: সংগৃহীত।
‘‘মুঠোয় কিছু স্বপ্ন নিয়ে পকেটভর্তি আশা। মনে প্রত্যয় একটাই, কিছু একটা করব।
সূর্যের তেজ নেই, প্রদীপের মতোই জ্বলতে দেখবে। লক্ষ্যে পৌঁছনো থেকে কতক্ষণ দমিয়ে রাখবে?
আমি পাথরে লেখা সতর্কবাণী, কাঁচ দিয়ে কতদিন ভাঙবে? মুছে যাওয়ার মতো নাম নই, তুমি আমায় কতদিন ভাঙবে?
সমুদ্রের চেয়েও গভীর আমি, কত কাঁকড় ফেলবে? ক্রমশ এগোতে থাকব, কতদূর আমাকে রুখবে?
ঝুঁকে থাকার পরে সোজা হয়েছি, আর ঝুঁকব না। আমি নিজের হাতেই তৈরি, আমাকে মুছতে পারবে না।’’
রঞ্জি ট্রফি ফাইনালে নামার আগের দিন বাংলার ক্রিকেটারদের জড়ো করে এই কবিতা শুনিয়েছেন অরুণ লাল। স্বয়ং অমিতাভ বচ্চনের কণ্ঠে এই আবৃত্তি শুনে রীতিমতো তেতে গিয়েছে বাংলা শিবির। হোক না বিপক্ষে সৌরাষ্ট্র। আসুক চেতেশ্বর পুজারা। তাঁরা থামবে না। এটাই শেষ সুযোগ। নিজেদের প্রমাণ করতে মরিয়া।
দ্বিতীয় সন্তানলাভের দু’দিন পরে বাংলার অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন ঋদ্ধি। ভারতীয় দলের সদস্য হিসেবে নিউজ়িল্যান্ড সফর থেকে ফিরলেও ভারতীয় বোর্ডের লোগো ব্যবহার করা অনুশীলনের জার্সি পরতে দেখা যায়নি। বাংলার নীল রংয়ের জার্সি পরেই সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনে নেমে পড়লেন। স্লিপ ক্যাচিংয়ের সময় কিপিং গ্লাভস পরে দাঁড়িয়ে পড়লেন অনুষ্টুপ মজুমদারের পাশে। একই রকম সাবলীল। ম্যাচের আগের দিন ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নিতেও দ্বিধাবোধ করছেন না। দূরে বল দেখলেই ‘সুপারম্যান’ তাঁর শরীর শূন্যে ভাসিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন লক্ষ্যে। হবে নাই বা কেন! তিনিও যে প্রথম বারের মতো রঞ্জি ফাইনাল খেলতে নামছেন। সতীর্থদের জন্য তাঁর কী বার্তা? ঋদ্ধিমান সাহার উত্তর, ‘‘বার্তা একটাই, জিততে হবে। আর কোনও কিছু নিয়ে ভাবা চলবে না। এই সুযোগ বারবার আসে না।’’ কিন্তু রঞ্জি ফাইনাল খেলার চাপ কতটা? ‘‘চাপ কীসের? আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই দেখছি। বেশি ভাবলে নিজের সেরাটা দেওয়া যায় কি?’’
আরও পড়ুন: ‘অক্ষর-ক্রুণালেরা ভারতের হয়ে খেলতে পারলে শাহবাজও তৈরি’
তাঁর সদ্যোজাত দ্বিতীয় সন্তান ও স্ত্রী এখনও হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাননি। ট্রফি জেতার তাগিদ ও ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা না থাকলে এই অবস্থায় স্ত্রী-সন্তানকে ছেড়ে ফাইনাল খেলতে আসা সম্ভব নয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল না? ঋদ্ধির উত্তর, ‘‘পরিবার পাশেই ছিল। আসার সময় তো কেউ কিছু বলেনি। জানি না পরে হয়তো শুনতে হতে পারে (হাসি)।’’ তিনি কত নম্বরে ব্যাট করবেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। নেটে নতুন বল সামলাতে দেখা গিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, চার অথবা পাঁচ নম্বরে ভাবা হচ্ছে। ঋদ্ধি নিজে কত নম্বরে ব্যাট করতে চান? ‘‘যে কোনও জায়গায়। দলের প্রয়োজনে সব করতে রাজি। যেখানে বলবে, নেমে যাব।’’ আইপিএল-এর উদাহরণ টেনে বলছিলেন, ‘‘যে ফাইনালে সেঞ্চুরি করেছিলাম, ম্যাচের আগেও নির্দিষ্ট ব্যাটিং অর্ডার ছিল না। তবুও ইঙ্গিত ছিল ছয় নম্বরে নামার। জর্জ বেইলি আউট হওয়ার পরে সঞ্জয় বাঙ্গার চার নম্বরে ব্যাট করতে নামিয়ে দেন। তার পর আর কি। সেঞ্চুরি।’’ এসসিএ স্টেডিয়ামেও চ্যালেঞ্জার ট্রফিতে সেঞ্চুরি ছিল ঋদ্ধির। সেই ইনিংসের পুনরাবৃত্তি চান তিনি।
১৩ বছর আগে যে দলটি ফাইনাল খেলেছিল, তাঁদের একজনই বর্তমান দলের সদস্য। তিনি মনোজ তিওয়ারি। রঞ্জি ফাইনাল তাঁর জীবনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। কারণ, রঞ্জি জীবনে এটাই তাঁর একশোতম ম্যাচ। সোমবার নতুন ব্যাট নিয়ে নামছেন প্রাক্তন অধিনায়ক। সেই ব্যাটেই হয়তো লিখতে চান নতুন ইতিহাস!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy