চর্চায়: ফাইনালে শামিকে কি দেখা যাবে? উঠছে প্রশ্ন। —ছবি এপি।
রঞ্জি ট্রফি ফাইনালে সৌরাষ্ট্রের হয়ে চেতেশ্বর পুজারা খেলতে পারে বলে শুনছি, নানা কথা হচ্ছে। মানে বাংলার বোলাররা কী ভাবে পুজারাকে সামলাবে, এ সব আর কী!
শুনে আমার কর্নাটকের সঙ্গে সেমিফাইনালটার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। ঠিক একই ভাবে অনেকে বলছিল, ওদের কে এল রাহুল আছে। মণীশ পাণ্ডে আছে। করুণ নায়ার আছে। কী দুর্ধর্ষ ব্যাটিং লাইন-আপ! কী ভাবে ওদের আউট করব?
যারা এ রকম কথাবার্তা বলছিল, তারা উত্তর পেয়ে গিয়েছে। একটা কথা বলে রাখা দরকার। আমাদের সময় থেকেও যদি ধরা হয়, বাংলার বোলাররা কিন্তু সব সময় ভাল করেছে। যে ক’বার আমরা কাছাকাছি এসে পারিনি, তখনও বোলিং বিভাগ অসাধারণ লড়াই করেছে। আর এ বারে তো প্রত্যেকটা ম্যাচেই ওরা অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে। কর্নাটকের চেয়ে ওজনদার ব্যাটিং নিশ্চয়ই সৌরাষ্ট্রের নয়। তাই যারা চিন্তিত হয়ে পড়ছে, তাদের প্রতি সবিনয়ে বলি, বাংলার বোলারদের উপরে আস্থা রাখো। ওরা ঠিক পারবে।
আমি বরং ভারতীয় বোর্ডের প্রেসিডেন্ট আমাদের দাদার (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) কাছে একটা অনুরোধ জানাতে চাই যে, রঞ্জি ফাইনালে সব প্রধান ক্রিকেটারকে খেলতে দেওয়া হোক। ওদের শুধু পুজারা কেন, রবীন্দ্র জাডেজাকেও খেলতে দিক না। আর আমাদের ঋদ্ধি আর শামি খেলুক। কেন নয়? ওই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজ রয়েছে ঠিকই। কিন্তু এখনকার দিনে এত খেলা চলছে, তিনটে ম্যাচ ওরা ভারতের হয়ে না খেললে কী আর এমন হবে? ওরা তো ওদের রাজ্য দলেরও ক্রিকেটার। ফাইনালটাও যদি না খেলে তা হলে মানুষ কী করে বুঝবে যে, শামি বাংলারও প্রতিনিধিত্ব করে? শুনলাম, ঋদ্ধিকে পাওয়া যাবে কারণ ওয়ান ডে দলে ও থাকে না। আমার মনে হয়, এই দু’দলের সেরা ক্রিকেটারদের প্রত্যেককেই রঞ্জি ফাইনালের জন্য ছেড়ে দিক বোর্ড।
দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ওয়ান ডে সিরিজ না-খেলে শামি যদি রঞ্জি ফাইনালটা খেলে, কেউ অভিযোগ করবে কি যে, কেন ও দেশের দায়িত্ব পালন না-করে বাংলার হয়ে খেলল? এটা তো আর বিশ্বকাপের ম্যাচ নয়। কত তরুণ বোলার রয়েছে। তাদের কাউকে বরং দেখে নেওয়া যাবে। আইপিএলের এই রমরমার যুগে বরং সকলে শান্তি পাবে যে, রঞ্জি ফাইনালকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে বোর্ড। তাই দাদার কাছে আর্জি— ‘ওপেন’ করে দাও রঞ্জি ফাইনাল। ওদের পুজারা-জাডেজা খেলুক না, আমাদের আছে শামি-ঋদ্ধি।
জানি, কেউ কেউ বলবে, এটাই বা কেমন পরামর্শ হল? এত দিন যারা খেটেখুটে খেলে টিমটাকে ফাইনালে তুলল, তাদের কারও উপর তো কোপ পড়বে শামি বা ঋদ্ধি খেললে। তাদের একটাই কথা বলব। সচিন তেন্ডুলকরও ভারতের হয়ে অত সব রেকর্ড করার পরে মুম্বইয়ের হয়ে ফাইনাল খেলতে নেমেছিল। ২০০৭-এর সেই ফাইনালে আমরাই ছিলাম প্রতিপক্ষ। আর সচিন সেই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে মুম্বইয়ের জয়ে বড় অবদান রেখেছিল। ওকেও তো কারও না কারও জায়গায় খেলতে হয়েছিল। ক্রিকেটে এগুলো হতেই থাকে। আসল হচ্ছে, টিমের ভাল কীসে হবে। সেটাই করা দরকার। ব্যক্তি নয়, দলের স্বার্থ সবার আগে। অন্যায় ভাবে কাউকে বসাতে নিশ্চয়ই বলছি না। যারা পারফর্ম করেছে এত দিন ধরে, তারা নিশ্চয়ই খেলবে। একই সঙ্গে বিশ্বাস করি, যোগ্য ক্রিকেটারের জায়গা সে নিজেই করে নেয়। তার জন্য কাউকে জায়গা করে দিতে হয় না। কে বলতে পারে, যারা ভাল করছে, তাদের রেখেই সঙ্গে শামিকে নিয়ে নিলে আরও শক্তিশালী দল গড়ে তুলতে পারবে না বাংলা!
সুনীল গাওস্কর, কপিল দেব, সচিন তেন্ডুলকরের মতো কিংবদন্তিরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত সফল হয়েও রাজ্য দলের হয়ে খেলে রঞ্জি জিতিয়েছেন। এখনকার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের তো সে ভাবে রাজ্য দলের সেবা করতে দেখাই যায় না। যদি রাজ্য দলের দরকার হয়, অন্তত ফাইনালটা খেলতে এলে ক্ষতি কী?
দেশের জার্সিতে শামিরা তো সারা বছর ধরেই খেলছে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy