Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Sports

State Athletics: রাজ্য অ্যাথলেটিক্স মিটে জোড়া সোনা জয় বাপির

এ বার রাজ্য অ্যাথলেটিক মিটে বাপি নেমেছিলেন মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের হয়ে। তবেই এটাই তাঁর প্রথম সাফল্য নয়।

বিজয়ী: বাপি শেখ।

বিজয়ী: বাপি শেখ। নিজস্ব চিত্র।

সীমান্ত মৈত্র  
বাগদা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২২ ০৭:৫৮
Share: Save:

মাত্র ২১.৫০ সেকেন্ড! এই সময়ের মধ্যেই ২০০ মিটার দৌড় শেষ করে রেকর্ড সময় ছুঁয়ে ফেললেন বাগদার সিন্দ্রাণীর বাপি শেখ।

দিন কয়েক আগে সল্টলেকের সাই কমপ্লেক্সে বসে ৭০তম রাজ্য সিনিয়র অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের আসর। সেখানেই রেকর্ড সময়ে দৌড় শেষ করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাপি। ২০০ মিটার দৌড়ে সোনা জেতার পাশাপাশি ১০০ মিটার দৌড়েও সোনা জিতেছেন তিনি। ১০.৮ সেকেন্ডে শেষ করেছেন ১০০ মিটার দৌড়।

বাপির ক্রীড়া প্রশিক্ষক গৌর রায় দীর্ঘদিন ক্রীড়া প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার আশা আগামী দিনে বাপি বাংলার সমস্ত স্প্রিন্ট (১০০ ও ২০০ মিটার দৌড়) রেকর্ড ভেঙে দেবে। প্রথম টার্গেট ভারতে প্রথম হ‌ওয়া। আগামী দিনে বাপির গতি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ধারা বজায় রাখতে পারলে বাপি এশিয়ান গেমসে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।’’

এ বার রাজ্য অ্যাথলেটিক মিটে বাপি নেমেছিলেন মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের হয়ে। তবেই এটাই তাঁর প্রথম সাফল্য নয়। এর আগেও রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন আয়োজিত মুম্বইতে জাতীয় স্কুল অ্যাথলেটিক প্রতিযোগিতায় ১০০ মিটার দৌড়ে তৃতীয় হয়েছিলেন তিনি। সময় নিয়েছিলেন ১১.১১ সেকেন্ড। তিনি নেমেছিলেন সিনিয়র বালক বিভাগে। রাজ্য পর্যায়েও সাফল্য পেয়েছেন তিনি।

কী বলছেন নদিয়ার বগুলার শ্রীকৃষ্ণ কলেজে ছাত্র বাপি?

তাঁর কথায়, ‘‘এখন আমার লক্ষ্য জাতীয় প্রতিযোগিতায় সোনা জেতা।’’

বাপির বাড়ি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা সিন্দ্রাণীতে। বাবা আরফান শেখ পেশায় ভ্যানচালক। মা সাহানারা গৃহবধূ। আগে তাঁদের বেড়ার বাড়ি ছিল। এখন অবশ্য সরকারি প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন।

তাঁদের পরিবারে খেলাধুলোর খরচ জোগানো বিলাসিতারই সামিল। তবুও ছেলের উৎসাহ থাকায় বাধা দেয়নি পরিবার। তবে দৌড় নয়, ভলিবল নিয়েই ছিল বাপির যাবতীয় উৎসাহ। বছর ছয়ের আগেও ‘ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড’-এর সঙ্গে কোনও পরিচয়ই ছিল না বাপির। সেখান থেকে এই উত্থান অনেকটা গল্পের মতো। সে কথাই শোনাচ্ছিলেন প্রশিক্ষক গৌর। সালটা ২০১৭। সিন্দ্রানী সাবিত্রী উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছিল বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। সেখানে গৌরবাবুর কাছে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নেওয়া ছাত্রদের কয়েক কদম পিছনে ফেলে ১০০ মিটার দৌড়ে প্রথম হন বাপি। তখনই গৌরবাবুর নজরে চলে আসেন তিনি। ছেলেটির মধ্যে সম্ভবনা আছে বুঝতে পেরে বাপির সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন। গৌরের কথায়, ‘‘বাপির যাবতীয় উৎসাহ ছিল ভলিবলকে ঘিরে। তাঁকে বুঝিয়ে নিয়ে আসতে প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল।’ যদিও খেলাধুলোর খরচ মেটানো নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা। এগিয়ে আসেন গৌরই। বাপির ক্রীড়া সরঞ্জাম, পুষ্টিকর খাবার ইত্যাদির খরচ অনেকটাই বহন করেন গৌর। সাধ্যমতো ছেলেকে সাহায্য করছে তাঁর পরিবারও। বাপির স্বপ্ন দেশের সেরা অ্যাথলিট হওয়া। সেই লক্ষ্যেই উসেইন বোল্টের ভক্ত বাপি প্রশিক্ষকের কাছে কঠোর অনুশীলন শুরু করেছেন। একটি চাকরি পেলে বাপি আরও নিশ্চিন্তে এগিয়ে যেতে পারত বলে মত গৌরের।

বাপির সাফল্যে খুশি সিন্দ্রাণীর মানুষ। বাপির এক পড়শি বলেন, ‘‘আমাদের সকলের সহযোগিতা ও আর্শীবাদ বাপির সঙ্গে রয়েছে। আশা করি বাপি আগামী দিনে আমাদের আরও গর্বিত করবে।’’

বাপির সাফল্যের কথা শুনেছেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। তিনিও বাপির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Sports Athletics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy