দেবজিৎ
আই লিগের দুই সেরা গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার এবং শিল্টন পালকে তুলে নিল আটলেটিকো দে কলকাতা।
আই লিগ ‘ডাবল’ করতে না পারলেও সঞ্জয় সেনের মোহনবাগান এ বার সবচেয়ে কম গোল খেয়েছে। চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরুর (১৭) চেয়েও এক গোল (১৬) কম খেয়েছেন দুই বাগান কিপার— দেবজিৎ আর শিল্টন। এটিকের গত বারের এক নম্বর গোলকিপার অমরিন্দর সিংহ ইতিমধ্যেই দল ছাড়ায় বাগানের দুই বঙ্গসন্তান কিপারের উপর ভরসা রাখতে চাইলেন কলকাতার কর্তারা। এই ফ্র্যাঞ্চাইজির কর্তারা চাইলেও পদত্যাগী কোচ আন্তোনিও হাবাসের আপত্তিতে দেশের সেরা কিপার দেবজিৎকে গত আইএসএলেই দলে নিতে পারেনি এটিকে। তাঁকে নিলাম পর্বে তুলে নিয়েছিল মুম্বই সিটি এফসি।
এ বার এটিকে-তে যোগ দিতে পারায় প্রচণ্ড খুশি উত্তরপাড়ার ছেলে মঙ্গলবার পাড়ার মাঠে কিপিং প্র্যাক্টিসের ফাঁকে বললেন, ‘‘গত বার মুম্বই টিমে মাত্র দু’টো ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম।। আশা করি এ বার আইএসএলে বেশি ম্যাচ খেলতে পারব।’’ বাগানেও তাঁর ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ যিনি ছিলেন সেই সবুজ-মেরুন অধিনায়ক শিল্টনের সঙ্গে এখন আইএসএলেও দেবজিতের ‘লড়াই’। এটিকে দফতরে সইসাবুদ সেরে বেরিয়ে শিল্টন বলছিলেন, ‘‘আরও দু’টো আইএসএল টিম আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। কিন্তু কলকাতার অফারটা ভাল ছিল। তা ছা়ড়া আই লিগ, ফেড কাপ জিতেছি মোহনবাগানে। আইএসএলটাও এই শহরের দলের হয়ে জিততে চাই। সেই ইচ্ছেটাও এটিকেতে সই করার পিছনে কাজ করেছে।’’
একই দলের দুই বাঙালি কিপারকে নেওয়া ছাড়াও এ বারের এটিকে-তে আরও চমক আছে স্বদেশি ফুটবলার নির্বাচনে। গত বার এই নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন ভাইচুং ভুটিয়া। পরামর্শদাতা হিসেবে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে নিয়েছিল কলকাতা। কিন্তু ভাইচুংয়ের বাছাই নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কোচ হাবাস-ই তুলেছিলেন প্রশ্ন। এবং সেটা যে কতটা ঠিক তা কলকাতার এ বারের স্বদেশি ফুটবলার নির্বাচনেই প্রমাণিত। এ পর্যন্ত যে নয়জন ফুটবলার তারা সই করিয়েছে তাতে মাত্র দু’জন রয়েছেন গত বারের টিমের— অর্ণব মণ্ডল এবং জুয়েল রাজা। আর চেয়েও মহম্মদ রফিককে পায়নি, তাঁর কাছে চুক্তিপত্র পাঠাতে দেরি হয়ে যাওয়ায়। ফলে মেহতাব হোসেন, গুরবিন্দর সিংহের সঙ্গে রফিকও সই করেছেন কেরল ব্লাস্টার্সে। ফাইনালে রফিকের গোলেই দু’বছর আগে উদ্বোধনী আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এটিকে। গত বার একটা সময় বিপদে পড়ে টুর্নামেন্টের মাঝপথে তাঁকে দলে ডেকে নিয়েছিলেন হাবাস। আসন্ন মরসুমের জন্যও রফিকের সঙ্গে কথাবার্তা পাকা হয়ে গিয়েছিল।
শিল্টন-ডিকা-রবার্ট
তা হলে রফিক ছাড়লেন কেন কলকাতা? স্বয়ং রফিক বলছেন, ‘‘সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলাম কলকাতার চুক্তিপত্রের জন্য। ওরা পাঠায়নি। কেরল চুক্তিপত্র পাঠিয়ে দেওয়ায় ওদের টিমেই সই করলাম। কেন আর অপেক্ষা করব?’’ ‘গোল্ডেন বয়’ রফিক হাতছাড়া হওয়ায় তড়িঘড়ি ইস্টবেঙ্গলেরই এক প্রতিশ্রুতিমান মিডিও বিকাশ জাইরুকে সই করিয়েছে বিব্রত কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্ট। গত বার পুণে ফ্র্যাঞ্চাইজিতে ছিলেন তিনি। বিকাশ ছাড়াও আরও যে ফুটবলারদের এটিকে সই করিয়েছে— লালরিন্দিকা (ডিকা), রবার্ট, প্রবীর দাস এবং কিগান পেরিরা।
আই লিগ-ফেড কাপে এ বার ইস্টবেঙ্গল ব্যর্থ হলেও তাদের বাঁ-প্রান্তিক শক্তিকে নিজেদের টিমে ব্যবহার করার জন্য রবার্ট-ডিকা জুটিকে নিয়েছে কলকাতা। বেঙ্গালুরুর কিগানও আবার লেফট ব্যাক। প্রবীরও এ মরসুমে মোহনবাগানে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছেন। এটিকের পুরনো বিদেশিদের মধ্যে ইয়ান হিউম, সমীঘ দ্যুতি এবং নাতোর এ বারও নির্বাচন নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না। এবং এই তিনের সঙ্গে কলকাতার চুক্তিও হয়ে গিয়েছে বলে খবর।
গত বার ভাইচুংয়ের বাছাই নিয়ে বিতর্ক ওঠায় এ বার স্বদেশি নির্বাচনের কাজও আটলেটিকো মাদ্রিদের কর্তাদের উপরই ছেড়ে দিয়েছে এটিকে। নতুন কোচ হোসে ফ্রান্সিসকো মোলিনা শহরে আসছেন জুনে। এটিকে সূত্রের খবর, ডিকা-বিকাশদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে নতুন স্প্যানিশ কোচের মতামত নেওয়া হয়েছে। নিয়েছেন মাদ্রিদ কর্তারাই। এটিকের এক কর্তা বললেন, ‘‘ জনা পঞ্চাশ ফুটবলারের সিভি পাঠানো হয়েছিল মাদ্রিদে। সেখান থেকে ঠিক করে দেওয়া ন’জনকে নেওয়া হয়েছে। আরও একজন দেশি ফুটবলার নেব।’’
আইএসএল-থ্রি খেলতে যে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা ফ্র্যাঞ্চাইজি টিমের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন, সবাই যাচ্ছেন লোন-এ। অর্থাৎ, চার মাসের জন্য। নীতা অম্বানীদের পেশাদার টুর্নামেন্ট খেলে আবার এঁরা ফিরে আসবেন লাল-হলুদে। মজার ব্যাপার, মেহতাব-ডিকাদের মতো যাঁরা আসন্ন আইএসএলে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন তাঁরা পরের মরসুমের ট্রেভর মর্গ্যানের ইস্টবেঙ্গলে তা হলে আছেন! ব্রিটিশ কোচ লাল-হলুদ কর্তাদের ফুটবলারদের তালিকা দিয়েছেন কি না তা নিয়ে ময়দানে তুমুল জল্পনা। ক্লাবকর্তারা ধোঁয়াশা রাখছেন। কিন্তু ঝুলির বেড়াল বেরিয়ে পড়ছে আইএসএল-চুক্তির পর। যেমন ইস্টবেঙ্গলের আরও তিন ফুটবলার নারায়ণ দাস, রাহুল ভেকে (দু’জনেই পুণে) এবং কেভিন লোবো (মুম্বই) লোনে পরের আইএসএল খেলবেন। যা থেকে আরও স্পষ্ট, মর্গ্যানের অর্ধেক টিম বাছাই শেষ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy