মহড়া: মঙ্গলবার সকালে অনুশীলনে মনোজ-ডিন্ডা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে অন্ধ্রপ্রদেশ ম্যাচের আগের দিনই বাদ দেওয়া হল অশোক ডিন্ডাকে। সূত্রের খবর, ড্রেসিংরুমে দলীয় বৈঠক শেষে বোলিং কোচ রণদেব বসুর সঙ্গে উত্তেজিত বাক্যবিনিময় হয় তাঁর।
আগেও বহু বার রণদেবের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছেন বাংলার অভিজ্ঞ পেসার। এ দিনও তার পুনরাবৃত্তি হয়। পরিস্থিতি এতই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, রণদেব বাধ্য হন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিকে গোটা বিষয়টি জানাতে। শোনা গেল, ডিন্ডাকে ক্ষমা চাইতেও অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু বাংলার পেসার রাজি হননি। বুধবার সন্ধ্যায় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠক শেষে জানানো হয়, ইডেনের ঘাসে ভরা উইকেটে খেলছেন না বাংলার অভিজ্ঞ পেসার। এমনকি ১৬ জনের পরিবর্তে ১৫ জনের দলও ঘোষণা করে বাংলার নির্বাচক কমিটি। যেখানে ডিন্ডার নাম নেই।
বিষয়টি পৌঁছে গিয়েছে ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কানেও। যদিও তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মন্তব্য করেনি সিএবি কর্তৃপক্ষও। যে হেতু আজ রঞ্জি ট্রফির দ্বিতীয় ম্যাচ, তাই মন্তব্য করে দলের মনোবলে আঘাত করতে চান না সিএবি কর্তারা।
বাংলার কোচ অরুণ লাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ডিন্ডাকে রেখেই দল সাজিয়েছিলেন। উইকেটে ঘাসের আভা দেখে বলেছিলেন, ‘‘চার পেসার নিয়ে নামব। ডিন্ডার সঙ্গে খেলবে মুকেশ কুমার, ঈশান পোড়েল। চতুর্থ পেসারের জায়গায় আকাশ দীপ অথবা বি অমিতকে খেলানো হতে পারে।’’ সন্ধ্যায় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত শোনার পরে বিমর্ষ বাংলা কোচ। কথা বলতে চাইলেন না অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরনও। প্রথম ম্যাচ জেতার পরে বাংলার শিবিরে যে ফুরফুরে মেজাজ তৈরি হয়েছিল, এই ঘটনা সেই দলীয় সংহতিতে হয়তো চিড় ধরিয়ে গেল। ফোন ধরে অরুণ বললেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।’’
আপাতত অন্ধ্রপ্রদেশ ম্যাচেই বাদ দেওয়া হয়েছে ডিন্ডাকে। ঘটনার পূর্ণ তদন্তের পরে তাঁর শাস্তির মেয়াদ বাড়ে কি না, সেটাই দেখার। ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে ডিন্ডাকে ফোন করা হয়। সিএবির ক্ষমা চাওয়া প্রস্তাব নিয়ে বললেন, ‘‘যারা ঠিক মতো কাজ করে না, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই দল থেকে বাদ। ভুল কোথায়, আমি জানি না।’’ যোগ করেন, ‘‘খেলা ছাড়ার মুখে দাঁড়িয়ে নির্বাসন নিয়ে ভাবার সময় নেই। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিও বুঝতে পেরেছে আমি বেশি দিন খেলব না। পাঁচ বছর আগে এই ঘটনা ঘটলে দেখতাম আমাকে বাদ দিত কি না।’’ রণদেবের কাছে এ বিষয়ের ব্যাখ্যা চাওয়া হলে তিনি মন্তব্য করতে চাননি। রণদেবকে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কোনও কোনও মহলে শোনা যাচ্ছে, কী করে সিএবি-র বেতনভুক বোলিং কোচ একই সঙ্গে ধারাভাষ্যকার হিসেবেও কাজ করছেন? স্বার্থ-সংঘাতের আওতায় কি তিনি পড়ছেন না?
ডিন্ডার পরিবর্তে প্রথম একাদশে খেলার সম্ভাবনা আকাশ দীপের। বিজয় হজারে ট্রফিতে ৮ ম্যাচে ১৩ উইকেট পেয়েছেন ডান-হাতি পেসার। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে ৭ ম্যাচে ৯ উইকেট। ডিন্ডার পরিবর্ত হিসেবে আকাশকেই বেছে নেওয়া হতে পারে।
ডিন্ডা না থাকায় বাংলার পেস বিভাগকে নেতৃত্ব দেবেন ঈশান পোড়েল। ডিন্ডার মতো অভিজ্ঞতা না থাকলেও ঈশানের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দুরন্ত। দেওধর ট্রফির ফাইনালে পাঁচ উইকেট পেয়েছেন। আইপিএল নিলামে তাঁকে ২০ লক্ষ টাকায় কিনেছে কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। সঙ্গে খেলবেন মুকেশ কুমার। ১৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৫১টি উইকেট পেয়েছেন ডান হাতি মিডিয়াম পেসার।
চতুর্থ পেসারের জায়গায় খেলবেন অলরাউন্ডার বি অমিত। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে মিডিয়াম পেসার হিসেবেও পরিচিত তিনি। গত ম্যাচের দল থেকে বসানো হতে পারে একজন স্পিনারকে। সে ক্ষেত্রে অর্ণব নন্দী ও শাহবাজ আহমেদের মধ্যে কাকে খেলানো হয়, তা দেখার।
অন্ধ্রপ্রদেশ দলে রয়েছে চমক। ঝাড়গ্রামের ছেলে রিকি ভুই প্রথম বার ইডেনে বাংলার বিরুদ্ধে খেলবেন। জন্ম বাংলায় হলেও বাবা কর্মসূত্রে বিশাখাপত্তনমে থাকেন। ছোটবেলা থেকে সেখানেই পড়াশোনা করেছেন রিকি। অন্ধ্রপ্রদেশ দলের স্তম্ভ শেষ দু’ম্যাচেই সেঞ্চুরি করেছেন রিকি। বিদর্ভের বিরুদ্ধে ১০০ রানে অপরাজিত ছিলেন। দিল্লির বিরুদ্ধে গত ম্যাচে অপরাজিত ১৪৪। প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ১০৩ রান করেছিলেন উইকেটকিপার শ্রীকর ভরতও। ভারতীয় টেস্ট দলে ঋদ্ধিমান সাহা ও ঋষভ পন্থের পরে তাঁকেই ভাবা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy