Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
শঙ্কার মধ্যেই লর্ডসে ইতিহাস

চোটের পরের দিন সংজ্ঞা হারালেন স্মিথ, বাড়ছে উদ্বেগ

রবিবার তাই ম্যাচ রেফারি রঞ্জন মদুগলে বাধ্য হন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ‘কংকাশান সাব’ ব্যবহার করার অনুমতি দিতে। দ্বিতীয় টেস্টে স্মিথ আর নামতে পারলেন না। পরিবর্ত হিসেবে তাই বেছে নেওয়া হয় মার্নাস লাবুশানেকে।

ঐতিহাসিক: ঘাড়ে চোট পেয়ে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন স্মিথ। রবিবার সকালে তিনি সংজ্ঞাও হারান। কোনও ক্রিকেটার মাথা অথবা ঘাড়ে আঘাত পেয়ে সংজ্ঞা হারালে তাঁর পরিবর্তে যিনি নামতেন তিনি আগে শুধু ফিল্ডিং করতেন। আইসিসি-র নতুন নিয়মে ব্যাট ও বল করবেন তিনি। প্রথম বলে বাউন্সার পেলেন লাবুশানেও। এপি

ঐতিহাসিক: ঘাড়ে চোট পেয়ে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন স্মিথ। রবিবার সকালে তিনি সংজ্ঞাও হারান। কোনও ক্রিকেটার মাথা অথবা ঘাড়ে আঘাত পেয়ে সংজ্ঞা হারালে তাঁর পরিবর্তে যিনি নামতেন তিনি আগে শুধু ফিল্ডিং করতেন। আইসিসি-র নতুন নিয়মে ব্যাট ও বল করবেন তিনি। প্রথম বলে বাউন্সার পেলেন লাবুশানেও। এপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:২০
Share: Save:

আতঙ্কের অ্যাশেজ ফিরিয়ে আনলেন জোফ্রা আর্চার। শনিবার তাঁর বাউন্সার আছড়ে পড়ে স্টিভ স্মিথের ঘাড়ে। আঘাত পাওয়ার পরেই মাঠে শুয়ে পড়েন স্মিথ। প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ককে তখনই ড্রেসিংরুমে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ৪৫ মিনিট বিশ্রাম নেওয়ার পরে ক্রিজে এসে আরও ১২ রান যোগ করে ৯২ রানে আউট হন স্মিথ। কিন্তু সাবলীল ব্যাটিং করতে অসুবিধা হচ্ছিল তাঁর। শনিবার সারা রাত পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকতে হয় স্মিথকে। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের মেডিক্যাল টিম বিবৃতিতে বলে, ‘‘আমাদের প্রতিনিধিরা সারা রাত ওর উপরে নজর রেখেছে। স্মিথের ঘুম খারাপ হয়নি। কিন্তু সকালের দিকে খুব একটা স্বাভাবিক ছিল না। হঠাৎই সংজ্ঞা হারায় স্মিথ। ওর ঝিমুনি ভাব এখনও রয়েছে।’’

রবিবার তাই ম্যাচ রেফারি রঞ্জন মদুগলে বাধ্য হন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ‘কংকাশান সাব’ ব্যবহার করার অনুমতি দিতে। দ্বিতীয় টেস্টে স্মিথ আর নামতে পারলেন না। পরিবর্ত হিসেবে তাই বেছে নেওয়া হয় মার্নাস লাবুশানেকে। ১ অগস্ট থেকে এই নতুন নিয়ম শুরু করেছে আইসিসি। টেস্ট চলাকালীন কোনও ক্রিকেটার সংজ্ঞা হারালে তাঁকে বিশ্রাম দিয়ে পরিবর্ত ক্রিকেটার নেওয়া যাবে। প্রথম একাদশের ক্রিকেটার হিসেবেই ব্যবহার করা হবে পরিবর্ত এই ক্রিকেটারকে। এ দিন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চার নম্বরে স্মিথের পরিবর্তে ব্যাট করলেন লাবুশানে। ক্রিকেটের ইতিহাসে তিনিই প্রথম ‘কংকাশান সাব’। কিন্তু তিনিও আর্চারের বাউন্সার থেকে রেহাই পাননি। অ্যাশেজের প্রথম রান করার আগেই তাঁকে বাউন্সারে স্বাগত জানান আর্চার। হেলমেটে আছড়ে পড়ে সেই বাউন্সার। যদিও তাতে বড় কোনও সমস্যা হয়নি।

স্মিথ চোট পাওয়ার পরেই লর্ডসে ছড়িয়ে পড়ে হিউজ-আতঙ্ক। ২০১৪ নভেম্বরে শেফিল্ড শিল্ডের একটি ম্যাচে বাঁ-কানের পাশে আঘাত পেয়ে মাঠেই মৃত্যু হয় প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় ওপেনার ফিল হিউজের। তাই স্মিথ চোট পাওয়ার পরেই তাঁর কাছে ছুটে আসেন জস বাটলার থেকে, জোফ্রা আর্চার। হিউজ অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান হলেও তাঁর মৃত্যু আতঙ্ক ছড়িয়েছে প্রত্যেকটি ক্রিকেট খেলিয়ে দেশে। তাই ঘাড়ে অথবা মাথায় আঘাত পাওয়ার পরে সেই ক্রিকেটারকে দীর্ঘক্ষণ পর্যবেক্ষণে রাখার নির্দেশ রয়েছে আইসিসি-র।

স্মিথের ক্ষেত্রে যে সমস্যা দেখা গিয়েছে তা ৩০ শতাংশ ক্রিকেটারদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘চোট পাওয়ার দিন স্মিথের মধ্যে সমস্যা দেখা যায়নি। কিন্তু চোট পাওয়ার ২০ ঘণ্টা পরে লক্ষ্য করা যায় ও দুর্বল হয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ ধরনের সমস্যা আগেও দেখা যেত।’’

অস্ট্রেলিয়ার মেডিক্যাল দল যদিও এখনই আশ্বাস দিতে পারছে না ২২ অগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া তৃতীয় টেস্টে স্মিথকে পাওয়া যাবে কি না। রবিবারই স্মিথের স্ক্যান হওয়ার কথা। তার ফলের উপরেই অনেকটা নির্ভর করছে স্মিথের অ্যাশেজ-ভবিষ্যৎ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘দ্বিতীয় ও চতুর্থ টেস্টের মধ্যে বেশি সময় নেই। তার মধ্যে যদি লক্ষ্য করা যায়, স্মিথ পুরোপুরি সুস্থ তা হলে তৃতীয় টেস্ট খেলতে ওর সমস্যা হবে না। কিন্তু আরও ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পরেই তা বলা সম্ভব। সেই সঙ্গে আজ স্ক্যানের রিপোর্টের উপরে সেই সিদ্ধান্ত অনেকটা নির্ভর করছে।’’ আইসিসি এবং ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নিয়ম অনুযায়ী মাথা অথবা ঘাড়ে গুরুতর আঘাত পেলে প্রায় পাঁচ দিন পর্যবেক্ষণে থাকতে হয় সেই ক্রিকেটারকে।

স্মিথ নিজে যদিও জানিয়েছেন, হেডিংলে টেস্টে নামতে তাঁর অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। রবিবার সকালে স্মিথ বলেন, ‘‘পরের পাঁচ দিন পর্যবেক্ষণে থাকার কথা। যদি ওরা মনে করে আমি ফিট, তা হলে তৃতীয় টেস্ট খেলতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। প্রত্যেক দিন দু’বার করে আমাকে পরীক্ষা করা হবে। আশা করি, সুস্থ হতে দিন দুয়েকের বেশি সময় লাগার কথা না। তবে এই আচ্ছন্ন ভাব যত দিন কাটিয়ে উঠতে না পারছি, তত দিন মাঠে নামার ঝুঁকি নেব না।’’

হিউজের ঘটনার পরেই ক্রিকেটবিশ্ব নতুন হেলমেট আবিষ্কৃত হয়। যেখানে কানের চোট প্রতিরোধ করার জন্য আচ্ছাদন বসানো রয়েছে। স্মিথকে প্রশ্ন করা হয়, কেন তিনি সে ধরনের হেলমেট ব্যবহার করেন না? স্মিথের উত্তর, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার অনেক ব্যাটসম্যানই সেই হেলমেট ব্যবহার করে না। কানের পাশে আচ্ছাদন থাকায় কী রকম একটা দমবন্ধ করা পরিবেশ তৈরি হয়। কিছু শোনা যায় না। ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ করতে সমস্যা হয়।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘তবে এ বার থেকে নেটে সেই হেলমেট পরে ব্যাট করব। বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে এ ধরনের সাবধানতা যদি নিতে হয়, তা হলে অবশ্যই নেব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy