জবাব: রবিবার দুরন্ত জয়ের পরে উল্লাস স্মিথ, পেনদের। গেটি ইমেজেস
জশ হেজলউডের বলটা ক্রেগ ওভার্টনের পায়ে লাগতেই আস্তে আস্তে উঠে যায় আম্পায়ারের আঙুল। কিন্তু তখনও আবেগের বিস্ফোরণ ঘটেনি। কারণ, স্বাভাবিক ভাবেই ইংল্যান্ডের আট নম্বর ব্যাটসম্যান তখন ‘ডিআরএস’-এর সাহায্য নিয়েছিলেন। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে তিনটে লাল আলো জ্বলে উঠতেই পরিষ্কার হয়ে যায়, আরও এক বার অ্যাশেজ থাকছে অস্ট্রেলিয়ারই দখলে।
ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে ইংল্যান্ডকে ১৮৫ রানে উড়িয়ে দিয়ে সিরিজে ২-১ এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। ৩৮৩ রান তাড়া করতে গিয়ে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ ১৯৭ রানে। শেষ টেস্টে টিম পেনের দল যদি হারেও, তা হলে সিরিজ ড্র হবে। এবং আগের বার সিরিজ জেতার কারণে অ্যাশেজ থেকে যাবে অস্ট্রেলিয়ার দখলেই।
এক বছর আগে যখন তিনি সাংবাদিকদের সামনে এসে কেঁদে ফেলেছিলেন, কেউ কি ভেবেছিলেন এই ভাবে স্বপ্নের প্রত্যাবর্তন ঘটাবেন স্টিভ স্মিথ? বল বিকৃতি কাণ্ডে তাঁকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড হতে হয়। মাঠে ফিরে যত বার ব্যাট হাতে নেমেছেন, তত বারই শুনতে হয়েছে ‘প্রতারক, প্রতারক’ বিদ্রুপ। বাইশ গজে জোফ্রা আর্চারের বাউন্সার তাঁকে শারীরিক ভাবে আহত করেছে। মাঠের বাইরের বিষাক্ত বিদ্রুপও নিঃসন্দেহে মানসিক ভাবে রক্তাক্ত করে দিয়েছে।
কিন্তু স্মিথ কাউকে বুঝতে দেননি। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে গিয়েছেন। আবেগের বিস্ফোরণটা দেখা গিয়েছে ইংল্যান্ডের শেষ উইকেট পড়ার সময়। দু’হাত শূন্যে তুলে হুঙ্কার দিচ্ছেন। আর স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া অ্যাশেজ ধরে রাখল।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৮২ রান করার জন্য স্মিথই ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন। কী রকম অনুভূতি হচ্ছে? ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে স্মিথ বলে গেলেন, ‘‘গত সপ্তাহে মাঠের বাইরে বসে দলের হার দেখতে ভাল লাগেনি। কিন্তু আজ যে অনুভূতি হচ্ছে, তা ভাষায় বোঝাতে পারব না। এই ছেলেদের সঙ্গে থাকতে পেরে রীতিমতো গর্ব হচ্ছে।’’
স্মিথ যদি ব্যাট হাতে নায়ক হন, তা হলে দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে বিধ্বংসী হয়ে উঠেছিলেন প্যাট কামিন্স। শনিবার শুরুতে দুই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন এই পেসার। রবিবার, শেষ দিনেও শুরুতে দু’উইকেট তুলে নিলেন তিনি। সব মিলিয়ে ৪৩ রানে চার উইকেট। প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন তিন উইকেট। দুটো করে উইকেট নিলেন হেজলউড এবং নেথান লায়নও। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে জো ডেনলি (৫৩) সর্বোচ্চ রান করে যান।
টিম পেন বলেন, ‘‘সত্যিই খুব তেতে গিয়েছি জিতে। গত ১৬-১৮ মাসে এই দলটাকে অনেক কিছুর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। ছেলেরা যে খেলাটা খেলল, তাতে ওদের চারিত্রিক দৃঢ়তাই বোঝা গিয়েছে।’’ আগের টেস্টে মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছিল স্মিথকে। তিনি দলে ফিরতেই এল জয়, সঙ্গে থেকে গেল অ্যাশেজও। সত্যিই শাপমুক্ত হলেন স্টিভ স্মিথ।
স্কোরকার্ড
অস্ট্রেলিয়া ৪৯৭-৮ ডি. ও ১৮৬-৬ ডি.
ইংল্যান্ড ৩০১ ও ১৯৭
ইংল্যান্ড (দ্বিতীয় ইনিংস)
(শনিবার ১৮-২ এর পরে)
ডেনলি ক লাবুশানে বো লায়ন ৫৩•১২৩
রয় বো কামিন্স ৩১•৬৭
স্টোকস ক পেন বো কামিন্স ১•১৭
বেয়ারস্টো এলবিডব্লিউ বো স্টার্ক ২৫•৬১
বাটলার বো হেজলউড ৩৪•১১১
ওভার্টন এলবিডব্লিউ বো হেজলউড ২১•১০৫
আর্চার এলবিডব্লিউ বো লায়ন ১•৯
লিচ ক ওয়েড বো লাবুশানে ১২•৫১
ব্রড ন. আ. ০•৩
অতিরিক্ত ১৯ মোট ১৯৭ (৯১.৩)
পতন: ৩-৬৬ (রয়, ২৪.৬), ৪-৭৪ (স্টোকস, ৩০.২), ৫-৯৩ (ডেনলি, ৩৯.২), ৬-১৩৮ (বেয়ারস্টো, ৫৩.১), ৭-১৭২ (বাটলার, ৭৪.২), ৮-১৭৩ (আর্চার, ৭৫.৫), ৯-১৯৬ (লিচ, ৮৯.৫), ১০-১৯৭ (ওভার্টন, ৯১.৩)।
বোলিং: প্যাট কামিন্স ২৪-৯-৪৩-৪, জশ হেজলউড ১৭.৩-৫-৩১-২, নেথান লায়ন ২৯-১২-৫১-২, মিচেল স্টার্ক ১৬-২-৪৬-১, মার্নাস লাবুশানে ৪-১-৯-১, ট্রাভিস হেড ১-১-০-০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy