আলোচনা: অধিনায়ক হিসেবেই তাঁকে দরকার বাংলার। এ কথাই মনোজকে এখন বোঝাচ্ছেন অরুণ লাল। ফাইল চিত্র
বাংলার স্বার্থের কথা ভেবে রঞ্জি ট্রফিতে শুধু প্রথম ম্যাচের জন্য অধিনায়ক থাকতে রাজি হয়েছিলেন সিএবি-র নির্বাচন নীতি নিয়ে অপমানিত বোধ করা মনোজ তিওয়ারি। সিএবি কর্তাদের বলে দিয়েছিলেন, যে-হেতু সময় বেশি নেই, রাজি হচ্ছেন নেতৃত্ব দিতে। দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে আর অধিনায়ক থাকতে চান না।
তবে হিমাচল প্রদেশ থেকে ফেরার পরে মনোজের অবস্থানে পরিবর্তন হয়ে থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। সূত্রের খবর, হিমাচলে প্রথম রঞ্জি ম্যাচ খেলতে গিয়ে তাঁকে কাছে ডেকে নিয়ে অনেক বার বুঝিয়েছেন দলের মেন্টর হিসেবে যোগ দেওয়া অরুণ লাল। যিনি এখন বাংলা দলকে একসূত্রে গাঁথার চেষ্টা করছেন। নানা মতান্তর এবং বিভাজনকে দূরে সরিয়ে এক সুর তৈরি করার চেষ্টা করছেন।
অরুণই অধিনায়ককে বুঝিয়েছেন যে, অন্য কারও উপরে অসন্তোষ দেখিয়ে বাংলার নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না। বাংলার অধিনায়কত্ব মানে সর্বোচ্চ সম্মান। সকলের ভাগ্যে সেটা জোটে না। সেই সম্মানকে উপেক্ষা করা ঠিক নয়। মেন্টরের বোঝানোতে কাজ হয়ে থাকতে পারে বলেই শোনা যাচ্ছে। মনোজও আপাতত হয়তো রাজি হচ্ছেন, অধিনায়ক হিসেবে থেকে যেতে।
বাংলার পরের দুই ম্যাচই ঘরের মাঠে। মধ্য প্রদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচ সোমবার থেকে ইডেনে। দীপাবলির ছুটি কাটিয়ে বাংলার ক্রিকেটারদের প্রস্তুতিতে নামার কথা শুক্রবার থেকে। নিয়ম অনুযায়ী, পরের ম্যাচের প্রস্তুতিতে নামার আগেই দল বাছাই হওয়ার কথা। কিন্তু বৃহস্পতিবার পরের ম্যাচের জন্য দল হবে কি না, অদ্ভুত ভাবে তা এখনও বাংলা দলের মেন্টর, কোচ, অধিনায়ক কেউই জানেন না। এমনকি, নির্বাচকপ্রধান পলাশ নন্দীও এ ব্যাপারে অন্ধকারে। বুধবার এঁরা প্রত্যেকেই জানান, সিএবি-র তরফে তাঁদের জানানো হয়নি কবে দল নির্বাচন। ফলে শুক্রবার থেকে কাদের নিয়ে শুরু হবে বাংলার অনুশীলন, বুধবার রাত পর্যন্ত তা ঠিক হয়নি। লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, নির্বাচক কমিটির প্রধানেরই দল গঠন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে সিএবি-তে নির্বাচক প্রধান পলাশ নন্দীই যদি না জানেন, কবে নির্বাচনী বৈঠক তা হলে প্রশ্ন উঠছে, কর্তারাই কি এখনও দল নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পরিচালনা করছেন? নতুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কর্তাদের দ্বারা নির্বাচনী প্রক্রিয়া পরিচালিত হওয়ার কোনও জায়গাই নেই। সেটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এখনও কর্তারা উপস্থিত থাকেন কি না, সেটাও দেখার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে লোঢা কমিটির সুপারিশ মেনে তৈরি নতুন গঠনতন্ত্রে দল নির্বাচনী বৈঠক পরিচালনা করবেন নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান। অধিনায়কের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি দল গঠন করবেন। সংস্থার প্রেসিডেন্টের অনুমোদন নেওয়ার পুরনো নীতিকেও বিসর্জন দিতে বলা হয়েছে।
নির্বাচন নীতি নিয়ে ডামাডোলের মধ্যেই হিমাচল প্রদেশের আমতারে প্রথম রঞ্জি ম্যাচ থেকে বাংলা তিন পয়েন্ট নিয়ে ফেরায় দলের অন্দরমহলের পরিবেশে কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে অরুণ লালের উপস্থিতি বাংলার ড্রেসিংরুমে পরিবেশে উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করেছে বলে খবর। আমতারে ব্যাটিং-সহায়ক পিচে বাংলার ব্যাটসম্যানরা ভালই রান তোলেন। প্রথম ইনিংসে ৩৮০ রান করার পরে দ্বিতীয় ইনিংসেও ম্যাচের শেষ পর্যন্ত ২০৩ রান করেন তিন উইকেট হারিয়ে। অভিষেক রামন, অভিমন্যু ঈশ্বরন, সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, মনোজ, অনুষ্টুপ মজুমদার প্রত্যেকেই রান করেছেন। যা বাংলার পক্ষে যথেষ্ট ইতিবাচক সংকেত বলে মনে করেন মেন্টর অরুণ লাল। তাঁর কথায়, ‘‘শুরুটা ভাল হওয়া খুবই জরুরি। আমাদের শুরুটা যখন ভাল হয়েছে, আশা করি, এর পরের ম্যাচগুলোতেও ভালই হবে।’’ মনোজের অধিনায়কত্ব নিয়ে অরুণ লাল বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, মনোজই ক্যাপ্টেন থাকবে। কারণ, দলের ওকে ক্যাপ্টেন হিসেবে খুবই দরকার।’’
তবে ইডেনে ব্যাটসম্যানরা তাঁদের পছন্দের উইকেট না-ও পেতে পারেন। বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী, রঞ্জি ট্রফির গ্রুপ লিগে সব ম্যাচের উইকেট তদারকি করছেন নিরপেক্ষ কিউরেটররা। বাংলার ম্যাচের জন্য অসমের কিউরেটর মুকুট কলিতা আসবেন ইডেনের পিচ দেখভালের জন্য। জানা গেল, বোর্ড নিরপেক্ষ কিউরেটরদের নির্দেশ দিয়েছে, যাতে তাঁরা হোম টিমের কোনও অনুরোধ না মানেন। উইকেটের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যই যেন বজায় থাকে। ইডেনের উইকেটে ইদানীং বোলাররাই বেশি সুবিধে পাচ্ছেন। খুব বেশি রান উঠছে না। রঞ্জি ম্যাচেও বোলারদের মুখের হাসিই চওড়া হয় কি না, দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy