Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Amit Panghal

বিশ্বসেরা অমিতের অলিম্পিক্স মহড়ায় সঙ্গী বাংলার বক্সার

শিবপুরের বাসিন্দা মনোজিতের লড়াইটা শুরু হয়েছিল অনেক ছোট থেকেই। বাবা রিকশা চালাতেন, মা বাড়ি-বাড়ি রান্না করতেন।

লড়াকু: দারিদ্র উপেক্ষা করে এগোচ্ছেন মনোজিৎ। নিজস্ব চিত্র

লড়াকু: দারিদ্র উপেক্ষা করে এগোচ্ছেন মনোজিৎ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৩
Share: Save:

রিংয়ে নেমে তাঁকে যতটা লড়াই করতে হয়েছে, রিংয়ের বাইরে লড়তে হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি। কিন্তু রিং এবং রিংয়ের বাইরের দুটো লড়াই জিতেই জাতীয় বক্সিংয়ে ব্রোঞ্জ পেয়েছেন। বাংলা থেকে ভারতের সিনিয়র জাতীয় শিবিরে সুযোগ পেয়েছেন তিনি। সেই বাংলার বক্সার মনোজিৎ কুমার সাউ এখন আরও একটি দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। অলিম্পিক্সের প্রস্তুতিতে সাহায্য করছেন অমিত পাঙ্ঘালকে।

শিবপুরের বাসিন্দা মনোজিতের লড়াইটা শুরু হয়েছিল অনেক ছোট থেকেই। বাবা রিকশা চালাতেন, মা বাড়ি-বাড়ি রান্না করতেন। বছর খানেক আগে রিকশা চালাতে চালাতেই মারা যান মনোজিতের বাবা। বিনা চিকিৎসায়। মায়ের আর শরীরে সামর্থ্য নেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে রান্না করার। কিন্তু দারিদ্রের এই ‘পাঞ্চ’ও নক আউট করতে পারেনি মনোজিতকে। গত বছর জাতীয় বক্সিংয়ে ব্রোঞ্জ পাওয়া সেটাই প্রমাণ করে। এর পরে জাতীয় শিবিরেও জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। যে শিবিরে প্রথম পর্বে ৫২ জন বক্সার ছিলেন। পরে কাটছাঁট হয়ে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৪০। দুই পর্বেই অমিতের ‘স্পারিং পার্টনার’ হিসেবে ছিলেন বাংলার মনোজিৎ। অর্থাৎ রিংয়ে অমিতের প্র্যাক্টিস-সঙ্গী। আগামী ১ মার্চ থেকে শুরু শিবিরেও সেই দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।

কেন বক্সিংয়ে আসতে গেলেন? মনোজিৎ বলছিলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে আমি দেখতাম, পাশের শিবপুর পুলিশ লাইনে বক্সিং হচ্ছে। ওই সময় বিজেন্দ্র সিংহকে দেখতাম। দারুণ বক্সার। কোথা থেকে কোথায় উঠে এসেছে। ওকে দেখে দারুণ ভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। তখনই ঠিক করে নিই, আমাকেও কিছু করতে হবে বক্সিংয়ে।’’ আর এখন সেই অনুপ্রেরণা খোঁজেন অমিত পাঙ্ঘালের মধ্যে। অমিত আর তিনি— দু’জনেই ৫২ কেজি বিভাগের বক্সার। বিশ্বের এক নম্বর অমিতকে নিয়ে মনোজিৎ বলছেন, ‘‘অমিতও খুব ভাল বক্সার। ও অলিম্পিক্সে যাবেই। এমনকী পদক পেলেও অবাক হব না। ক্যাম্পে আমি ওর স্পারিং পার্টনার। তাই খুব ভাল করে জানি, ও কতটা দক্ষ বক্সার। পরের শিবিরেও ওর সঙ্গে কাজ করব।’’

শিবপুর রিজার্ভ পুলিশ লাইনে গত ১২ বছর ধরে কোচ তপনকুমার বসুর কোচিংয়ে তৈরি হয়েছেন মনোজিৎ। কী বিশেষত্ব নজরে পড়েছে এই তরুণ বক্সারের মধ্যে? তপন বসুর মন্তব্য, ‘‘মার খেয়েও ফিরে আসার অসাধারণ ক্ষমতা আছে ছেলেটার মধ্যে। যে গুণটা একজন বক্সারকে বড় করে তোলে। বিজেন্দ্র, অমিতের মধ্যে এই ব্যাপারটা দেখতে পাবেন।’’ আর বঙ্গ বক্সারের তূণের সেরা অস্ত্র কী? কোচের জবাব, ‘‘লেফট হুক, রাইট ক্রস। ওর এই দুটো ঘুসি ঠিকঠাক জায়গায় পড়লে প্রতিপক্ষরা ধরাশায়ী হয়ে যায়। দেখবেন, এই ছেলেটা কিন্তু অনেক দূর যাবে।’’

দারিদ্রের নিদারুণ আক্রমণ যাঁকে টলিয়ে দিতে পারেনি, তাঁকে নিয়ে অবশ্যই স্বপ্ন দেখা যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Boxing Manojit Kumar Sau Amit Panghal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy