তখন তিনি লাল-হলুদের প্রাণভোমরা। আল আমনা মাঠে ফুল ফোটাতেন। — ফাইল চিত্র।
গত বছরের ডার্বিতে তিনি ছিলেন সুভাষ ভৌমিকের হাতের তাস। আর আজ তিনি ডার্বির উত্তেজনা থেকে শত যোজন দূরে। তাঁকে ঘিরে সেই উন্মাদনাও নেই। মাহমুদ আল আমনা রবিবারের ডার্বি দেখতে বসবেন একদম টেনশন ফ্রি হয়ে। বড় ম্যাচের উত্তেজনা তাঁকে আর ছুঁয়ে যায় না। দার্শনিক আমনা আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘রবিবার আমি ভাল ফুটবল দেখতে চাইব। আগে যখন ডার্বিতে নেমেছি, তখন দলের ভাল-মন্দ আমার মাথায় ঘুরপাক খেত। এখন আমি ডার্বি থেকে অনেক দূরে। তাই টেনশন আর আমাকে গ্রাস করে না।’’
সে বারের কলকাতা ফুটবল লিগের ইস্ট-মোহন ম্যাচ এখনও জীবন্ত ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতিতে। প্রথমার্ধে দু’গোলে পিছিয়ে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধে দুরন্ত ভাবে ম্যাচে ফিরে আসে ইস্টবেঙ্গল। শেষ পর্যন্ত কলকাতা লিগের ডার্বি ঢলে পড়েছিল ড্রয়ের কোলে। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা ভুলতে পারেননি আমনার মরিয়া লড়াই। একটা সময়ে তিনি একাই মোহনবাগান রক্ষণের পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। সেই ম্যাচ প্রসঙ্গে সাদার্ন সমিতির মিশরীয় তারকা বলছিলেন, ‘‘সে দিন ম্যাচে ফেরা সহজ ছিল না। প্রথমার্ধেই আমরা দু’ গোলে পিছিয়ে পড়েছিলাম। সেই সময়ে মানসিক জোরের খুব দরকার ছিল। আমরা দারুণ ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছিলাম।’’
তার পরেই অতীত আর বর্তমানের তুলনা নিজেই টেনে বলছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের জার্সি পরে আমি যখন ডার্বিতে নেমেছি, সেই সময় আর এখনকার মধ্যে কোনও তুলনাই হয় না। গত দু’ টি ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল জিতেছে। ফলে ইস্টবেঙ্গলই এগিয়ে থেকে শুরু করবে রবিবার। তা ছাড়া ডুরান্ড কাপ ফাইনালে মোহনবাগান হার মেনেছে। ডার্বি জিতলে সেই হারের ক্ষতে প্রলেপ পড়বে। আমি বলব, চাপে রয়েছে মোহনবাগানই। ইস্টবেঙ্গলের চাপ কিন্তু কম।’’
আরও পড়ুন: ‘৯০ মিনিটের পরে পা কেটে ফেলতে হলেও ডার্বিতে মাঠে নামবই’
আরও পড়ুন: আমি নেই তো কী হয়েছে, ডার্বি জিতবে ইস্টবেঙ্গলই, বলছেন জবি
গত মরশুমের কলকাতা লিগের পরে স্পেনীয় কোচ আলেয়ান্দ্রো মেনেন্দেজের হাতে লাল-হলুদ-এর রিমোট কন্ট্রোল ওঠে। চোটের জন্য মরশুমের মাঝপথে ছেড়ে দেওয়া হয় আমনাকে। ঠিকানা বদলান মিশরীয় তারকা। বাকি মরশুম মিনার্ভার হয়ে খেলেন। এ বছর কলকাতা লিগে সাদার্ন সমিতির জার্সি পরে মাঠ মাতাচ্ছেন এক সময়ের ইস্টবেঙ্গলের মাঠমাঠের জেনারেল। ক্লাব বদলে ফেললেও ডার্বি নিয়ে অনর্গল লাল-হলুদের প্রাক্তন তারকা। আমনা বলছেন, ‘‘এটা তো স্প্যানিশ ডার্বি। আসলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিন্তাভাবনাও বদলে যায়। ভারতীয় ফুটবলে এখন স্পেনীয় ফুটবলারদেরই ভিড়। মোহনবাগান কোচের থেকে তুলনামূলক ভাবে বেশি অভিজ্ঞ ইস্টবেঙ্গল-কোচ। কারণ উনি গত বছর থেকেই এখানে রয়েছেন। ডার্বির অভিজ্ঞতা ওঁর বেশি।’’
তা হলে কি রবিবারের ডার্বিতে এগিয়ে আপনার পুরনো দল? আমনা বলছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলে যখন খেলতাম তখন বলতাম, এই ম্যাচ পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। নির্দিষ্ট দিন যে ভাল খেলবে, সেই দলই ম্যাচ জিতবে। তবে আমার মনে হয়, ইস্টবেঙ্গল তুলনামূলক ভাবে ম্যাচটায় এগিয়ে থাকবে। কারণ হাইমে কোলাডো, কাশিম আইদারারা গতবারও খেলেছে। সে দিক থেকে দেখলে মোহনবাগানের স্প্যানিশ ফুটবলারদের কিন্তু একটু সময় দিতে হবে। কোচও নতুন।’’
আমনার ব্যাখ্যাতেই পরিষ্কার রবিবাসরীয় ডার্বিতে এগিয়ে ইস্টবেঙ্গলই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy