এই দৃশ্য এ বারের ফরাসি ওপেনে দেখা যাবে না। — ফাইল চিত্র
রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে ফরাসি ওপেন। কিন্তু এ বারের প্রতিযোগিতা আগের থেকে অনেকটাই আলাদা হতে চলেছে। ফরাসি ওপেনে যিনি সবচেয়ে সফল, সেই রাফায়েল নাদালই এ বার খেলবেন না প্রতিযোগিতায়। কোমরের চোট এখনও সারাতে পারেননি তিনি। এ ছাড়া প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন সিমোনা হালেপ এবং গারবিনে মুগুরুজা খেলবেন না। অবসর নেওয়ায় সেরিনা উইলিয়ামস এবং রজার ফেডেরার নেই। বাকি খেলোয়াড়দের মধ্যে দেখা যাবে না নেয়োমি ওসাকা, অ্যান্ডি মারে, ভিনাস উইলিয়ামস, নিক কিরিয়স, এমা রাডুকানু, মাত্তেয়ো বেরেত্তিনিকে।
তা সত্ত্বেও এ বারের ফরাসি ওপেনে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। দেখা যেতে পারে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতা এবং হয়তো কিছু উত্তেজক ম্যাচও।
সুরকির কোর্টে নতুন রাজা হতে পারেন কার্লোস আলকারাস। মেয়েদের বিভাগে টানা দ্বিতীয় ট্রফি জিততে পারেন ইগা শিয়নটেক। নাদালকে ছাপিয়ে পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যামের অধিকারী হতে পারেন নোভাক জোকোভিচ। কিন্তু কার উপরে চোখ থাকবে টেনিসপ্রেমীদের? নাদালের জায়গা কি কেউ নিতে পারবেন এবং হৃদয় জয় করতে পারবেন?
২০০৪-এর পর থেকে এই প্রথম বার নাদাল ছাড়া ফরাসি ওপেন হচ্ছে। যে গ্র্যান্ড স্ল্যামই বাদ থাকুক না কেন, ফরাসি ওপেন খেলার সুযোগ কখনও হারাননি নাদাল। গত ১৭ বছরে ১৪ বার ট্রফি উঠেছে তাঁর হাতে। প্যারিস তাঁর কাছে দ্বিতীয় বাড়ি। রোলাঁ গারোজের সামনে রয়েছে তাঁর পাথরের মূর্তি। সাধেই কি আর তাঁকে ‘সুরকির রাজা’ বলা হয়। কিন্তু সব ভালরই একটা শেষ থাকে। গত সপ্তাহে স্পেনের খেলোয়াড় বাধ্য হয়ে জানিয়ে দেন, অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে পাওয়া কোমরের চোট এখনও সারেনি। তবে আশ্বাসও দিয়ে যান, পরের বছর আর এক বার চেষ্টা করে দেখবেন।
নাদাল বলেছিলেন, “প্রতিযোগিতা একই রকম থাকে, সে কোনও খেলোয়াড় খেলুক বা না খেলুক। তাই আমি খেলি বা না খেলি, রোলাঁ গারোজ সেটাই থাকবে। সুরকির কোর্টে এটা বিশ্বের সেরা প্রতিযোগিতা। আমি ছাড়া নতুন কাউকে চ্যাম্পিয়ন হতে দেখা যাবে। এটাই তো জীবন।”
ফরাসি ওপেনে আবির্ভাবেই ট্রফি জিতেছিলেন নাদাল। তার পর আরও ১৩ বার। দু’সপ্তাহের টেনিস শেষে নাদাল ছাড়া আর কাউকে ফিলিপ শাঁতিয়ের কোর্টে ট্রফি ছাড়া ভাবা যেত না। ব্যতিক্রম হয়েছে চার বার। ২০০৯ সালে নাদালকে হারিয়ে চমকে দেন রবিন সোডারলিং। ২০১৫ এবং ২০২১ সালে হারেন জোকোভিচের কাছে। ২০১৬-য় চোটের কারণে চতুর্থ রাউন্ডে নাম তুলে নেন। এক সংস্থার করা হিসাব বলছে, এ বারের ফরাসি ওপেন জয়ের দৌড়ে রয়েছেন পাঁচ জন: আলকারাস, জোকোভিচ, হোলগার রুন, ইয়ানিক সিনার এবং স্টেফানোস চিচিপাস।
রোলাঁ গারোজে দু’বারের চ্যাম্পিয়ন জোকোভিচ। সুরকির কোর্টে দু’বার হারিয়েছেন নাদালকে। অনেকেরই মতে, জোকোভিচ এ বার এগিয়ে। দু’বছর আগেই তিনি প্রমাণ করেছেন, সুরকির কোর্টে নাদালকে হারাতে এবং ট্রফি জিততে কী দরকার। এ বার তো তাঁর খিদে আরও বেশি। জোকোভিচ এবং নাদাল দু’জনেরই ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম রয়েছে। নাদালকে টপকে বিশ্বরেকর্ড গড়তে পারেন। পাশাপাশি ওপেন যুগে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার নিরিখে সেরিনাকে স্পর্শ করবেন তিনি।
তার থেকে বড় ব্যাপার, জোকোভিচের বয়স এখন ৩৬। তিনি জানেন সময় কমে আসছে। বয়সের কাছে হার মেনে ফেডেরার নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। নাদালও এগোচ্ছেন সেই পথে। পরের বছরই তাঁর শেষ। ফিটনেস ভাল থাকার কারণে জোকোভিচ হয়তো আরও বছর দুয়েক খেলা চালিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু নতুন প্রজন্মের হাতে ব্যাটন তুলে দেওয়ার আগে ট্রফির ক্যাবিনেটে যে আরও কয়েকটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম ঢোকাতে চাইবেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
তবে সময়টা ইদানীং ভাল যাচ্ছে না তাঁর। সুরকির কোর্টে কোনও প্রতিযোগিতাতেই কোয়ার্টার ফাইনাল পেরোতে পারেননি। মাদ্রিদ থেকে চোটের কারণে নাম তুলে নেন। কিন্তু ফরাসি ওপেন শুরু হওয়ার আগে সবচেয়ে এগিয়ে তিনিই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy