অ্যালেক্সি পপিরিন। ছবি: রয়টার্স।
বিশ্ব টেনিসে এখন আগ্রহের কেন্দ্রে অ্যালেক্সি পপিরিন। ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক নোভাক জোকোভিচকে হারিয়ে দিয়েছেন তিনি। সেটাও আবার ইউএস ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে। ২৫ বছরের পপিরিন এই প্রথম কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের চতুর্থ রাউন্ডে উঠলেন।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে জন্ম পপিরিনের। তাঁর বাবা অ্যালেক্স এবং মা এলিনা রাশিয়ান বংশোদ্ভূত। চার বছর বয়সে টেনিস র্যাকেট হাতে তুলে নিয়েছিলেন পপিরিন। নিউ সাউথ ওয়েলসের কিম ওয়ারনিক টেনিস অ্যাকাডেমিতে শুরু তাঁর টেনিস প্রশিক্ষণ। কিন্তু বাবার কর্মসূত্রে আট বছর বয়সে পপিরিনকে দুবাই চলে যেতে হয়েছিল। দু’বছর সেখানে থাকার পর তাঁরা চলে যান স্পেনে। সেখানে পপিরিনের প্রতিবেশী ছিলেন অ্যালেক্স ডি মিনাউর। ক্রমতালিকার বিচারে তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ার এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড়। দ্বিতীয় স্থানে পপিরিন। তাঁরা একসঙ্গে অনুশীলন করতেন। ২০১৭ সাল থেকে পপিরিন ফ্রান্সের একটি অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করেন।
চারটি দেশে থাকার সুবাদে তিন ধরনের ভাষায় স্বচ্ছন্দ পপিরিন। ইংরাজি, রুশ এবং স্প্যানিশ ভাষা জানেন তিনি। ২৫ বছরের পপিরিন ফুটবলের ভক্ত। স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার ভক্ত তিনি। ইংল্যান্ডের এভার্টনও পছন্দ পপিরিনের। ভিডিয়ো গেম খেলতেও পছন্দ করেন তিনি।
২০১৭ সাল থেকে পেশাদার টেনিস খেলছেন পপিরিন। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছেছিলেন তিনি। সে বার দমিনিক থিয়েমকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে প্রথম ট্রফি জিতেছিলেন পপিরিন। চিনে জিনান চ্যালেঞ্জারে জিতেছিলেন তিনি। ২০২১ সালে জেতেন সিঙ্গাপুর ওপেন। সেটাই তাঁর প্রথম এটিপি ট্রফি। সে বার ফাইনালে হারিয়ে দিয়েছিলেন অ্যালেক্সান্ডার বুবলিককে।
পপরিনের সেরা অস্ত্র তাঁর শক্তিশালী সার্ভ। যা সামলাতে শনিবার বেগ পেতে হল জোকোভিচকেও। ২২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে সার্ভিস করতে পারেন তিনি। সেই সঙ্গে বেসলাইনে প্রচণ্ড আগ্রাসী পপিরিন। যা বিপক্ষকে চাপে ফেলে দেয়। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চির পপিরিন কোর্টের যে কোনও জায়গায় দ্রুত পৌঁছেও যেতে পারেন।
অগস্টের শুরুতেই মন্ট্রিয়ালে এটিপি মাস্টার্স ১০০০-এ জিতেছিলেন পপিরিন। এ বার হারালেন জোকোভিচকে। ছন্দে রয়েছেন পপিরিন। কার্লোস আলকারাজ় এবং জোকোভিচহীন ইউএস ওপেন জিততে পারবেন তিনি?
কেরিয়ারের অন্যতম সেরা জয়ের পর পপিরিন বলেন, “আমি অন্তত ১৫ বার গ্র্যান্ড স্ল্যামের তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছি। কিন্তু কখনও জিততে পারিনি। প্রথম বার সেটা পারলাম। তা-ও আবার সর্বকালের সেরা টেনিস খেলোয়াড়কে হারিয়ে। এটা অবিশ্বাস্য। পরিশ্রমের দাম পেলাম।”
জোকোভিচের বিরুদ্ধে চার বার খেলে এই প্রথম জিতলেন পপিরিন। তার মধ্যে এই বছরেই তিন বার। এর আগে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং উইম্বলডনে জোকোভিচের বিরুদ্ধে হেরে গিয়েছিলেন পপিরিন। শনিবার জোকোভিচকে হারিয়ে আর্থার অ্যাশ কোর্টে দাঁড়িয়ে পপিরিন বলেন, “অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং উইম্বলডনে লড়াই হয়েছিল। ওই ম্যাচগুলোতেও আমি সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি। এই ম্যাচটা আলাদা ছিল। এই ম্যাচে আমি সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছি। ভাল টেনিস খেলেছি।”
চতুর্থ রাউন্ডে পপিরিনকে খেলতে হবে ফ্রান্সেস টিয়াফোর বিরুদ্ধে। ২০২২ সালে ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে উঠেছিলেন টিয়াফো। আমেরিকার সেই টেনিস খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে রবিবার নামবেন অস্ট্রেলিয়ার পপিরিন। লক্ষ্য কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy