Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

সুনীলের জোড়া গোলে মান বাঁচল ভারতের

সুনীল ছেত্রী। মারগাওয়ে দেশের ত্রাতা।

সুনীল ছেত্রী। মারগাওয়ে দেশের ত্রাতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৪ ০৯:৪২
Share: Save:

ভারত: ২ (সুনীল-২)
বাংলাদেশ: ২ (মিঠুন, হেমন্ত)

কাঠমান্ডু থেকে গোয়া। ছবিটা বদলায়নি ছ’মাসেও। এ বারও যে বাংলাদেশকে হারাতে পারল না কোভারম্যান্সের ভারত!

তবে হিমালয়ের কোল থেকে আরব সাগরের তীরদু’জায়গাতেই ভারতের ত্রাতার নাম বদলায়নি। কাঠমান্ডুতেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নব্বই মিনিট পর্যন্ত ০-১ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় ফ্রি-কিক থেকে বিশ্বমানের গোল করে ডাচ কোচ উইম কোভারম্যান্সের মুখরক্ষা করেছিলেন সুনীল ছেত্রী। বুধবার মাণ্ডবী নদীর তীরেও ৮৯ মিনিট পর্যন্ত হারতে থাকা ম্যাচ শেষ লগ্নে ড্র হল ভারত অধিনায়কের মরিয়া প্রয়াসেই। জোড়া গোল করে ম্যাচের নায়ক তিনিই। তাঁর প্রথম গোল বক্সের মধ্যে দুরূহ কোণ থেকে দুর্দান্ত প্লেসিংয়ে বাংলাদেশ গোলকিপার শাহিদুল আলমকে পরাজিত করে। আর ইনজুরি টাইমে দ্বিতীয় গোলটা হল সদ্য পিতৃহারা ডেঞ্জিল ফ্রাঙ্কোর ক্রস থেকে দুর্দান্ত ভলিতে। নাটকীয় ম্যাচে শেষ বেলায় আবার লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে গেলেন ডেনিশ লিগে খেলা ভারত কিপার সুব্রত পাল। নিট ফল, ঘরের মাঠেও বাংলাদেশকে হারানো হল না ভারতের।

ম্যাচের পর তাই অধিনায়ককে নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ কোভারম্যান্স বলে দিলেন, “সুনীলের দ্বিতীয় গোলটার জন্যই হারতে হল না। অনবদ্য ফুটবল খেলল অধিনায়ক। তবে আমাদের বেশ কয়েকটা জায়গায় উন্নতি করতে হবে।”

কোভারম্যান্স যখন এ কথা বলছেন, তখন টিভিতে দেখা যাচ্ছিল পাঁচন গেলার মতো মুখ করে ঘুরছেন কোভারম্যান্সের দেশোয়ালি কোচ লোদউইক দারিউস ডি ক্রুইফ। হেমন্তর ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে অর্ণবের পায়ে লেগে বাংলাদেশ ২-১ এগিয়ে যেতেই তিনি যে ভাবে লাফিয়ে উঠেছিলেন, তার পর ম্যাচ যে অমীমাংসিত হতে পারে তা বোধহয় কল্পনাতে আনেননি বাংলাদেশের ডাচ কোচ। ম্যাচ শেষে তাই তাঁর গলায় হতাশা। তিনিও যে বলছেন ভারত অধিনায়কের কথা। “টাচ ফুটবল খেলেই ভারতীয় রক্ষণকে ভাঙার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। দ্বিতীয়ার্ধে তা অনেকটাই সফল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ বেলায় সুনীল সেই হিসেব গড়বড় করে দিল। জিতে ফিরলে ভালই লাগত।”

তবে মামিনুলদের খেলায় এই দাপট কিন্তু শুরু থেকে ছিল না। ৪-৪-২ ছকে নেমে প্রেসিং ফুটবলের সৌজন্যে বরং প্রথমার্ধ জুড়েই বাংলাদেশ মিডল এবং ডিফেন্সিভ থার্ডে রাজত্ব করছিলেন সুনীল, রবিনরা। যার ফলে শুরুর মিনিট পনেরোর মধ্যেই সুনীলের গোল থেকে এগিয়ে যাওয়া ভারতের। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে সর্বোচ্চ ৪৫ গোল এ দিন করে ফেললেন বেঙ্গালুরু এফসি-র স্ট্রাইকার। পেরিয়ে গেলেন ভাইচুং ভুটিয়ার ৪৩ গোলের রেকর্ড। কিন্তু তার পরেও জয়ের আনন্দ সেলিব্রেট করতে পারলেন না সতীর্থ অলউইন, বলবন্ত, রবিনদের গোল নষ্টের প্রতিযোগিতার সৌজন্যে। ম্যাচ শুরুর প্রথম কুড়ি মিনিট ভারতীয় রক্ষণে সে ভাবে দাঁত ফোটাতে পারেননি বাংলাদেশের সোহেল রাণা, মামিনুলরা। কিন্তু এর পরেই দুই উইং ধরে মিঠুন চৌধুরী এবং হেমন্ত বিশ্বাস পাল্টা আক্রমণে অর্ণব-আইবরদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে শুরু করে দেন। এই সময় ব্লকিং বা স্ন্যাচিং ঠিকঠাক হচ্ছিল না ভারতীয় রক্ষণে। দ্বিতীয়ার্ধে মাঝমাঠে মেহতাবের বদলে নামা রোকাসও মিঠুনদের সামাল দিতে পারেননি।

কোভারম্যান্সের দলে এই টেকনিক্যাল ত্রুটি নিয়ে সরব প্রাক্তন ফুটবলাররাও। সুনীলের প্রশংসার সঙ্গে সুব্রত ভট্টাচার্য, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়রাও ম্যাচ দেখে সেই ত্রুটি নিয়ে সরব। বলছেন, “সুনীলের জন্যই মুখ রক্ষা হল। জাতীয় দলে কিছু পুরনো মুখ পাল্টে নতুনদের সুযোগ দেওয়ার সময় এসেছে। খেলার মান বাড়াতে গেলে এ ধরনের ফ্রেন্ডলি ম্যাচে এশিয়ার প্রথম সারির দলগুলোর বিরুদ্ধে খেলতে হবে। না হলে ভুলত্রুটি সারিয়ে কাজের কাজটাই হবে না।”

অন্য বিষয়গুলি:

india football bangladesh subrata sunil
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy