অ্যাডিলেডের পারফরম্যান্স নিয়ে ভারতের গর্ব হওয়াই উচিত। টেস্টটা শেষ পর্যন্ত জিততে না পারলেও গোটা টিম মাথা উঁচু করে ব্রিসবেন যাচ্ছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে এমন মর্যাদাব্যঞ্জক হারের কোনও লজ্জা থাকে না। তবে এটাও মাথায় রাখা জরুরি, ব্রিসবেনে পিচের চরিত্র কিন্তু একদম আলাদা। আমার বিশ্বাস, ভারতীয় ক্রিকেটাররা সেটা ভাল করেই জানে। আর সেটা মনে রেখেই নিজেদের খেলার ধরনটা এখানে ওরা পাল্টাবে।
পাশাপাশি, সিরিজের এই পর্যায় থেকে পারফরম্যান্সের ধারটা আরও বাড়িয়ে তুলে আরও উন্নত মানের ক্রিকেট খেলে দেখাতে হবে। কারণ দ্বিতীয় টেস্টে পাঁচ দিন শুধু ভাল খেললেই চলবে না, মাঠে কঠিন টক্করের জন্য তৈরি থাকতে হবে। ব্রিসবেনের পিচ এবং পরিবেশ কিন্তু ভারতীয় টিমের কাছে সেটাই দাবি করবে!
দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ভারতের নেতৃত্ব আবার হাতে তুলে নিচ্ছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। অ্যাডিলেডে টেস্ট শেষ হওয়ার পর বিরাট কোহলির মুখে একটা কথা শুনে খুব ভাল লেগেছে। পোস্ট ম্যাচ সাংবাদিক বৈঠকে এসে ও বলে যায় যে, টিমকে ভাল খেলার জন্য তাতিয়ে তুলতে ওর নিজের নামের পাশে ‘ক্যাপ্টেন’ শব্দটার দরকার নেই। সত্যিই তাই। প্রথম টেস্ট সেই কাজটা বিরাট ওর চওড়া ব্যাট দিয়েই করে দেখিয়েছে। বাদবাকি সিরিজেও ওকে এই ভূমিকাটা পালন করে যেতে হবে। অ্যাডিলেডের মতোই সর্বোচ্চ মানের ব্যাটিংটা করে দলকে লড়াইয়ে রাখতে হবে। কারণ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ব্রিসবেন বা মেলবোর্নের মতো মাঠে সিরিজের পরের টেস্টগুলোয় কিন্তু বারবার পরীক্ষার মুখে পড়বে ভারত।
ব্রিসবেনের পিচ বরাবরই সিমারদের স্বর্গ। বুধবার সকালে সবুজ ঘাসের পরত ওয়ালা গ্রিন-টপ দেখলে এতটুকু অবাক হব না। তবে ভারতের তাতে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। বরং মনে রাখতে হবে, বিদেশের মাঠে আমাদের বেশির ভাগ জয় এসেছে সিমিং উইকেটে খেলে। যেখানে দুই ইনিংসে কুড়িটা উইকেটে তোলার জায়গায় থাকে আমাদের পেসাররা। সাম্প্রতিকতম উদাহরণটা লর্ডস টেস্ট।
তবে পিচ আর পরিবেশের চাহিদা মেনেই ভারতকে প্রথম একাদশে কয়েকটা পরিবর্তন করতে হবে। ঋদ্ধিমান সাহার জায়গায় এমনিতেই চলে আসছে ধোনি। টিম ম্যানেজমেন্টকে এর সঙ্গে উমেশ যাদবকেও দলে ঢোকানোর একটা জায়গা খুঁজে বের করতে হবে। সেটা হয় শামি নয় বরুণ অ্যারনের বদলি হিসাবে।
তবে ব্রিসবেনে ভাল খেলার জন্য কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে ভারতীয় পেসারদের পারফরম্যান্স। লাইন আর লেংথে অনেক বেশি ধারাবাহিকতা আমদানি করতে হবে ওদের। অ্যাডিলেডে এই কাজটা একমাত্র ইশান্ত শর্মা করে দেখিয়েছিল। দ্বিতীয় টেস্টে কিন্তু বোলিং ইউনিটের বাকিদেরও ওর পাশে দাঁড়িয়ে দায়িত্বটা ভাগ করে নিতে হবে। টিম ম্যানেজমেন্টকে কর্ণ শর্মার ব্যাপারেও খুব ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো হাতের বাইরের ঘটনা না ঘটলে ব্রিসবেন টেস্টে ফয়সালা হবেই। ওখানকার পিচটাই এমন। কর্ণকে যদি খেলানো হয়, তা হলে নিশ্চত করতে হবে যে, উইকেট না পেলেও ও যেন টাইট বোলিং করে একটা দিক ধরে রাখে। ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যতের কথা ভাবলে কর্ণ খুব ভাল লগ্নি। কিন্তু শর্ত হল, ওকে উন্নতি করে যেতে হবে। এই সিরিজের আরও একটা টেস্টে চার প্রধান বোলারের মধ্যে তিন জনই ওভার প্রতি গড়ে পাঁচ রান করে দিয়ে দেলএই বিলাসিতা দেখানোর কিন্তু ভারতের আর কোনও জায়গা নেই।
শিখর ধবনেরও বিদেশের মাঠে টেস্ট পর্যায়ে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে দেখানোর সময় এসেছে। ওপেনিংয়ে আরও বেশি দায়িত্ব নিয়ে মুরলী বিজয়কে সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে হবে ওকে। মুরলী কিন্তু বিদেশের মাঠে ওপেনার হিসাবে এখনও পর্যন্ত অসাধারণ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy