মাঠে নেমে প্র্যাকটিস শুরুর আগে সবাইকে ডেকে নিলেন শেন ওয়াটসন। বললেন, ‘সবাই এসো, একটা ঘোষণা করার আছে।’ প্র্যাকটিসের আগেই এমন ডাক বড় একটা আসে না অজি ক্রিকেটারদের। তাঁরা বোধহয় একটু অবাকই হলেন।
সবাই গোল হয়ে দাঁড়ানোর পর ওয়াটো নিজেই জানালেন খবরটা, ‘‘বন্ধুরা, এই বিশ্বকাপই আমার শেষ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। আমার শেষ টুর্নামেন্টটা স্মরণীয় করে তুলতে পারলে তোমাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব। তোমরা হাততালি দিলে বুঝব, আমার জন্য তোমরা প্রাণপণ চেষ্টা করবে।’’ কথাটা শোনার পরই দলের সবাই হাততালি দিয়ে উঠলেন। বুঝিয়ে দিলেন, তাঁরা ওয়াটসনের কথা রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।
এর পরই অনুশীলনে ডুব দিলেন সবার প্রিয় ওয়াটো। যিনি গত চোদ্দো বছরে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন ম্যাকগ্রা, ওয়ার্ন, পন্টিং, গিলক্রিস্টদের সঙ্গে। অস্ট্রেলিয়ান গ্রেটরা এক এক করে অবসর নেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের নয়া প্রজন্ম ক্লার্ক, জনসন, হ্যাডিন, হ্যারিসদের সঙ্গে এক ড্রেসিংরুমে কাটিয়েছেন তিনি। অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়ে এ দিন ওয়াটসন মোহালিতে তাঁর দেশের সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি যাদের সঙ্গে খেলেছি, তারা এখন আর কেউ অস্ট্রেলিয়া দলে নেই। সে জন্যই মনে হল, এটাই বিদায় জানানোর সেরা সময়।’’
অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়ার এক প্রতিনিধির মুখেই শোনা গেল, ধর্মশালাতে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের সময়ই নাকি তিনি ঠিক করে নেন, এ বার অবসর নিয়ে ভাববেন। কুইন্সল্যান্ডের এই ৩৪ বছর বয়সি ক্রিকেটতারকা বলেন, ‘‘কেন জানি না, ওখানেই এক সকালে আমার মনে হয়, এ বার থামার সময় এসে গিয়েছে। পরের কয়েক দিন ভাবলাম, কথা বললাম, তার পর এই সিদ্ধান্ত জানাচ্ছি।’’
ওয়াটসনের এই অবসরের সি্দ্ধান্তে কিছুটা হলেও চাপে অস্ট্রেলিয়া। বিদায়ী তারকার শেষ টুর্নামেন্টে ব্যর্থতা নিয়ে দেশে ফিরলে তা যে মোটেই তাঁর প্রতি সম্মান দেখানো হবে না। চাপটা সে জন্যই। তা ছাড়া, পরের দুটো ম্যাচেই তাঁদের জিততে হবে, এই চাপটাও রয়েছে কখনও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না জেতা দলের উপর।
উপমহাদেশের দুই বড় দলের ভাগ্য এখন তাঁদের হাতেই। ধোনি, আফ্রিদিদের হারালে সেমিফাইনালে যে তাঁরাই যাবেন, তা খুব ভাল করেই জানেন। তবে কাজটা যে সোজা হবে না, তাও এ দিন একপ্রকার স্বীকারই করে নিলেন অজি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। বললেন, ‘‘ভারত, পাকিস্তান দুটোই ভাল দল। বুধবার যে ভাবে ভারত বাংলাদেশের জেতা ম্যাচটা বার করে নিল, তার পর ওদের সমীহ করতেই হবে। পাকিস্তানকেও কোনও ভাবেই কম গুরুত্ব দেওয়ার ভুল করা যাবে না।’’
তবে মোহালির উইকেট ও পরিবেশ দেখে খুশি স্মিথ। বললেন, ‘‘প্রায় আমাদের দেশের মতোই কন্ডিশন এখানে। পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে উইকেট যে রকম ছিল, অনেকটা সে রকমই উইকেট হয়তো পাব আমরা। আইপিএলে এই উইকেটে খেলেছি। তাই এর চরিত্র কিছুটা হলেও জানা।’’
কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে খেলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, যাঁর কাছে মোহালির মাঠ ‘হোম গ্রাউন্ড’। তিনি এ দিন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইটে বলেন, ‘‘এখানে স্পিনারদের চেয়ে পেসাররাই বেশি সাহায্য পায়। কয়েক বছর আগে এখানে যে টেস্ট খেলেছিলাম, তাতেও খুব একটা স্পিন ধরেনি। উইকেট দেখে তো মনে হল সেই একই রকম রয়েছে।’’
উইকেট নিয়ে যেমন ম্যাক্সওয়েলের কাছ থেকে তথ্য পাচ্ছেন অজিরা, তেমনই পিএসএলে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের হয়ে খেলে আসা ওয়াটসন বিপক্ষের ক্রিকেটারদের সম্পর্কে তথ্য দিচ্ছেন স্মিথদের। উইকেটকিপার পিটার নেভিলই এই কথা জানান। বলেন, ‘‘ওয়াটোর দেওয়া তথ্য আমাদের খুব কাজে লাগবে মনে হয়।’’
এইসব ব্যাঞ্জন নিয়েই স্মিথরা এখন পাকিস্তানকে হারানোর রেসিপি তৈরিতে ব্যস্ত। এর মধ্যেই যেন একটা উপলক্ষ জুগিয়ে দিলেন ওয়াটো।
অস্ট্রেলিয়া শিবিরে তাই বৃহস্পতিবার থেকে একটাই স্লোগান, ‘ওয়াটোর জন্য জেতো’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy