Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
লঙ্কা শিবিরে অশান্তির ছায়া

নেট পেসারদের বার করে দিলেন ক্ষুব্ধ ব্যাস

আর একটু হলে বোধহয় ঘাড়ধাক্কাই দিতেন! ক্রিকেটজীবনে খুব একটা রাগারাগি বা তর্ক-বিতর্কে জড়িয়েছেন বলে শোনা যায় না। বরং লঙ্কা পেসার বিখ্যাত ছিলেন বাঁ হাতে সিম বোলিংয়ের জন্য। ২ এপ্রিলের ওয়াংখেড়ে-পরবর্তী অধ্যায়কে শুধু বাদ রাখতে হবে। ভারতকে বিশ্বকাপ জিততে দেখে বলে ফেলেছিলেন যে, তিনি টিমে থাকলে কাপটা মহেন্দ্র সিংহ ধোনির হাতে ওঠে না। যে মন্তব্যকে বিতর্কিত না বলে যন্ত্রণাবিদ্ধ প্রতিক্রিয়াও বলা যেতে পারে।

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়
আমদাবাদ শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫০
Share: Save:

আর একটু হলে বোধহয় ঘাড়ধাক্কাই দিতেন!

ক্রিকেটজীবনে খুব একটা রাগারাগি বা তর্ক-বিতর্কে জড়িয়েছেন বলে শোনা যায় না। বরং লঙ্কা পেসার বিখ্যাত ছিলেন বাঁ হাতে সিম বোলিংয়ের জন্য। ২ এপ্রিলের ওয়াংখেড়ে-পরবর্তী অধ্যায়কে শুধু বাদ রাখতে হবে। ভারতকে বিশ্বকাপ জিততে দেখে বলে ফেলেছিলেন যে, তিনি টিমে থাকলে কাপটা মহেন্দ্র সিংহ ধোনির হাতে ওঠে না। যে মন্তব্যকে বিতর্কিত না বলে যন্ত্রণাবিদ্ধ প্রতিক্রিয়াও বলা যেতে পারে।

তর্জনী এবং মধ্যমার মধ্যে যেমন বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য থাকে, ঠিক তেমন বোধহয় একজন ক্রিকেটারের বাইশ গজের জীবন আর কোচিং জীবনের মধ্যেও থাকে। চামিণ্ডা ব্যাসও এখন রেগে যান, চিত্‌কার করেন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কারণে, নাকের ডগায় অপেক্ষারত মিডিয়াকে দেখেও দেখেন না।

“আউট, আউট আই সে। গেট আউট!”

বেচারি উনিশ-কুড়ির নেট বোলারের ঝাঁক। নরেন্দ্র মোদীর শহরে শ্রীলঙ্কার নেট সেশনে যে একটাও স্পিনার দেওয়া হয়নি, তা তাঁদের জানার কথাও নয় এবং সেই দোষে দোষীও নয়। গণ্ডগোলটা বুধবার সর্বপ্রথম খেয়াল করেন মাহেলা জয়বর্ধনে। দেখাও গেল নেট থেকে মাহেলা বেরিয়ে এসে সতীর্থদের বলছেন, “আরে, এরা একটাও স্পিনার দেয়নি। সব পেসার।” তখন নেট সেশন অর্ধেকের একটু বেশি পেরিয়েছে। নেটের ধারে কয়েক জন স্থানীয় পেসার অপেক্ষা করছিলেন ডাকের জন্য। কিন্তু ডাক নয়, ব্যাস অগ্নিমূর্তি ধরে স্রেফ তাঁদের বেরিয়ে যেতে বলেন! যা দেখে কেউ কেউ অস্ফুটে পরে বলেও ফেললেন, “অপরাধটাই বুঝলাম না। এমন কখনও দেখিনি।”

শ্রীলঙ্কা অপমানের অতল সমুদ্রেও তো সাম্প্রতিকে এমন পড়েনি। উপমহাদেশের উইকেটেও তাদের এফোঁড়-ওফোঁড় করে কটক-যুদ্ধ জিতেছে ভারত। সর্বসমক্ষে নতজানু হয়ে এটাও স্বীকার করতে হচ্ছে যে, বিরাট কোহলি ‘পাওয়ার প্লে’ স্ট্র্যাটেজিও তাদের স্তব্ধবাক করে ছেড়েছিল! টিমের অন্দরমহল— আবহ দেখলে মনে হবে সেখানেও খুব শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নেই। যতই টিমটা বলে বেড়াক ‘প্রত্যাশা করবেন না’ বা ‘প্রস্তুতির সময়টাই পাইনি।’

অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজ বনাম তিলকরত্নে দিলশান চলছে। ঠারেঠোরে। কটকে লজ্জার হারের পর ম্যাথেউজ সরাসরি বলে গিয়েছিলেন যে, সাড়ে তিনশো তাড়া করতে নেমে ওপেনারদের ঢিকির-ঢিকির সাড়ে বারোটা বাজিয়েছে। ওপেনারদের মধ্যে দিলশান নামটাও ছিল। তাঁকে এ দিন জিজ্ঞেস করা হল লঙ্কা অধিনায়কের মন্তব্য নিয়ে। বলা হল, বিপর্যয়ের সিংহভাগ দায়টা সিনিয়রদের কি না? উত্তরে ঝাঁঝিয়ে উঠলেন দিলশান, “কেন, একা আমরা কেন? বাকিরাও তো আছে।”

‘দিলস্কুপের’ জন্মদাতা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেন, বৃহস্পতিবার অন্য যুদ্ধ দেখবে আমদাবাদ। দেখবে, শ্রীলঙ্কান ‘ব্র্যান্ড অব ক্রিকেট’। ভাল। কিন্তু দেখাবে কে? দেখাতে পারেন যে দু’জন, তাঁদেরই তো কেমন দিগ্ভ্রষ্ট লাগছে।

মাহেলা জয়বর্ধনে— নিজের ব্যাটিং ছেড়ে বাকিদের ব্যাটিং দেখছেন শূন্য দৃষ্টিতে। ছবি তোলার আবদার গেল। মাহেলা তাকিয়ে বললেন, ‘‘আগে নিশ্চিত করে আসুন, এটার পর আর কোনও ছবি নয়!”

আর এক জন, ঠায় বসে চেয়ারে। সমর্থককুল ঘিরে ধরেছে, অটোগ্রাফ চাইছে, প্রশ্ন ছুড়ছে।

স্যর— “উঁ?”

ইন্ডিয়ায় স্বাগত—“থ্যাঙ্ক ইউ।”

কালকের ম্যাচে পারবেন?

কুমার সঙ্গকারা তাকালেনও না। কষ্টার্জিত হাসিতে শুধু, ‘‘দেখি।”

দোসরা এপ্রিলের ওয়াংখেড়েতে সত্যিই এই টিমটা এমএসডি-র উল্টো দিকে নেমেছিল তো?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy