গবেষণার ফলাফল ফের প্রমাণ করল, বাতাসে মেশার পর অল্প দূরত্বে অল্প সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা থাকে খুব বেশি। -ফাইল ছবি।
কোনও কোভিড রোগীর নিঃশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে করোনাভাইরাস বাতাসে মেশার পর প্রথম পাঁচ মিনিট খুবই বিপজ্জনক। ওই পাঁচ মিনিটের মধ্যে ধারেকাছে থাকা যে কাউকে ভাইরাস সংক্রমিত করতে পারে।
তবে তার পর থেকেই বাতাসে ভেসে থাকা অবস্থায় ভাইরাস সংক্রমণ ক্ষমতা দ্রুত হারাতে থাকে। বাতাসে ২০ মিনিট ভেসে থাকার পর ভাইরাসের আর তেমন কোনও সংক্রমণ ক্ষমতা থাকে না। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষমতা অনেকটাই হারিয়ে ফেলে।
ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের করা সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি পিয়ার রিভিউ পর্যায় পেরিয়ে একটি আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশের অপেক্ষায়। পিয়ার রিভিউ করেছেন বিশেষজ্ঞদেরই একাংশ।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা এও জানিয়েছেন, এই ধরনের বহু গবেষণা হচ্ছে। কোনও একটি গবেষণার ফলাফল যা জানাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রেই অন্য গবেষণার ফলাফলে তার বিপরীত ছবি বেরিয়ে আসছে। অল্প সময়ে কাজ করতে গিয়ে করোনা নিয়ে গবেষণার মান অন্য গবেষণার মানের চেয়েও কিছুটা নেমে গিয়েছে। অনেক সময় পিয়ার রিভিউ হওয়া কোনও গবেষণাপত্র নিয়েও তাই বিতর্ক দানা বাঁধছে। তাই গবেষণাপত্রটিকে আরও বিশেষজ্ঞের মতামতের অপেক্ষায় অনলাইন করা হয়েছে। তবে গবেষণার ফলাফল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‘হু’) বা আমেরিকার ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’ করেছে কি না তা এখনও জানা যায়নি।
এর আগের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কোভিড রোগীদের নিঃশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে করোনাভাইরাস বাতাসের এক ধরনের দূষণ-কণা অ্যারোসলের মধ্যেই তার ঠিকানা খুঁজে নেয়। থাকে অ্যারোসলের মধ্যে। গবেষকরা দেখতে চেয়েছিলেন সেই অ্যারোসলের মধ্যে করোনাভাইরাস কী ভাবে টিকে থাকে, কতক্ষণ খুব সক্রিয় বা সক্রিয় থাকে এবং সক্রিয় থাকে কী ভাবে। সে জন্য করোনাভাইরাস বাতাসে মেশার পাঁচ সেকেন্ড পর থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত গবেষণাগারে ভাইরাসের উপর নজর রেখেছিলেন গবেষকরা।
গবেষণার ফলাফল ফের প্রমাণ করল, বাতাসে মেশার পর অল্প দূরত্বে অল্প সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা থাকে খুব বেশি। এক জন থেকে অন্য জনে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে খুব তাড়াতাড়ি। খুব বিপজ্জনক ভাবে। কিন্তু বাতাসে মেশার পাঁচ মিনিট পর থেকেই ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা দ্রুত কমে যেতে শুরু করে। আর ২০ মিনিট পর সেই ক্ষমতা ভাইরাস এক রকম হারিয়েই ফেলে।
মূল গবেষক ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব কেমিস্ট্রির অধ্যাপক হেনরি পি অসউইন জানিয়েছেন, বাতাসে করোনাভাইরাস কত ক্ষণ সক্রিয় থাকে আর সংক্রমণের নিরিখে কত ক্ষণ পর্যন্ত থাকে খুব বিপজ্জনক তা এই গবেষণায় জানা গেল। তবে গবেষণার ফলাফলে ফের প্রমাণিত হল, সংক্রমণ রুখতে টিকা নেওয়া ছাড়াও নিয়মিত ভাবে মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলার মতো যে সব কোভিডবিধি চালু রয়েছে তা যথার্থ। বাতাসে অল্প দূরত্বেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি। দূরত্ব ও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমে যায়।
এর আগে ২০২০ সালে আমেরিকায় হওয়া একটি গবেষণা জানিয়েছিল, বাতাসে মেশার পরেও তিন ঘণ্টা পরেও করোনাভাইরাস থেকে যায় অ্যারোসলে।
এ বারের গবেষণা নতুন যেটা জানাল তা হল— বাতাসে তিন ঘণ্টা থাকলেও তখন আর সংক্রমণ ক্ষমতা থাকে না করোনাভাইরাসের। ফলে ওই সময় তার বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আশঙ্কা থাকে না বললেই হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy