Advertisement
E-Paper

অটিজম মানে মানসিক প্রতিবন্ধকতা নয়, বললেন বিজ্ঞানী, ডাক্তাররা

সেই আশাই জোরালো করে তুলল অটিজমের মতো একটি ভয়ঙ্কর রোগ সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ‘সম্মিলিত’। নিউটাউনে অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ফাইল ছবি।

ফাইল ছবি।

সুজয় চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২০ ০৭:৪০
Share
Save

‘অটিজম’-এ আক্রান্ত শিশুদের মা, বাবার উদভ্রান্তের মতো ঘোরার দিন কি তবে শেষ হতে চলেছে? স্বাভাবিক করে তোলার অমূলক স্বপ্ন দেখিয়ে আর ওই শিশুদের পরিবারগুলিকে এক চেম্বার থেকে অন্য চেম্বারে ভবঘুরের মতো ছোটাতে পারবেন না কিছু অসাধু চিকিৎসক?

সেই আশাই জোরালো করে তুলল অটিজম সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ‘সম্মিলিত’। নিউটাউনে অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুক্রবার থেকে তিন দিনের জন্য। যার আয়োজক ‘ইন্ডিয়া অটিজম সেন্টার (আইএসি)’।

এই অভিনব সম্মেলনে যেমন এসেছেন অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের মা, বাবা, তেমনই এসেছেন চিকিৎসক, মনোবিদ, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, এমনকী স্নায়ুবিজ্ঞানীরাও। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, বিদেশ থেকেও।

অটিজম-এ আক্রান্ত শিশুদের আঁকা ছবি। অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদর্শনীতে। শুক্রবার, নিউটাউনে। নিজস্ব চিত্র।

অটিজমের প্রাথমিক লক্ষণ শিশু কথা বলতে শেখে না। বললেও জড়িয়ে যায়। গলার স্বরও অন্য রকম হয়। দৃষ্টি ঝাপসা হয়। কারও সঙ্গে মিশতে শেখে না শিশু। এমনকী মা, বাবার থেকেও দূরে থাকতে চায়। চট করে রেগে যায়। জন্মের মাসছয়েক পর থেকেই এটা শুরু হয়। কিন্তু ওই সময় সাধারণত কোনও শিশু কথা বলতে শেখে না বলে চট করে অটিজমের প্রাথমিক লক্ষণগুলি ধরাও পড়ে না।

শুধু ভারতেই অটিজমে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা অন্তত ১ কোটি। প্রতি ৬৮টি শিশুর মধ্যে একটিতে ধরা পড়ে অটিজম। শিশুরা মোটামুটি ৩ বছর বয়সের আগে তেমন ভাবে কথা বলতে শেখে না বলে অটিজম ধরাই পড়ে অনেক দেরিতে। অটিজম-এ আক্রান্ত শিশুদের প্রথমে মানসিক প্রতিবন্ধী ভাবা হয়। তাই অধিকাংশেরই চিকিৎসা হয় না। হলেও ভুল চিকিৎসা হয়।

ইন্ডিয়া অটিজম সেন্টারের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ট্রাস্টি সুরেশ সোমানি ‘আনন্দবাজার ডিজিটাল’কে জানালেন, অটিজম নিয়ে গবেষণা কোন দিক দিয়ে কী ভাবে এগচ্ছে, তা চিকিৎসক, মনোবিদ ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের জানাতে, বোঝাতেই এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ঢাউস স্ক্রিনে ছবি এঁকে। এর আদত কারণটা কী, তা বুঝতে কী কী গবেষণা করে চলেছেন স্নায়ুবিজ্ঞানীরা এ দেশে ও বিদেশে, তা খুব সহজে সকলকে বোঝাতে। এমনকী, অটিজম-এ আক্রান্ত শিশুদের পরিবারগুলিকেও। যাতে তাঁরা বুঝতে পারেন শিশু রোগীদের গলদটা কোথায়। কীসে ধরা পড়ে অটিজম।

কলকাতার ‘অ্যাপোলো’ হাসপাতালের বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জয়রঞ্জন রামের কথায়, ‘‘সম্মেলনের লক্ষ্য, অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের সারিয়ে তুলতে তাদের পরিবার, চিকিৎসক ও ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থগুলিকে আরও সচেতন করা। তবে অটিজমকে এখন আর ‘ডিসঅর্ডার’ বলা হয় না বিদেশে। বলা হয়, ‘কন্ডিশন’। সেই ভাবেই আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করা বা তাদের সঙ্গ দেওয়ার প্রয়োজন। চিকিৎসার ক্ষেত্রে কী ভাবে এগলে শিশু রোগীদের অটিজমের হাত থেকে কিছুটা রেহাই দেওয়া সম্ভব হতে পারে, সেটাও অনেকটা বুঝতে পারবেন ডাক্তাররা। ভারতে কেন, বিশ্বের কোথাও অটিজম নিয়ে এমন সম্মেলন হয়নি। কলকাতায় এটা দ্বিতীয় বছরে পা দিল।’’

সম্মেলনে হাজির বিশেষজ্ঞদের কয়েক জন। অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুক্রবার, নিউটাউনে। নিজস্ব চিত্র।

সম্মেলনের আমন্ত্রিত বক্তা বেঙ্গালুরুর ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস (এনসিবিএস)’-এর অধ্যাপক ও ‘সেন্টার ফর ব্রেন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিপেয়ার’-এর অধিকর্তা সুমন্ত্র (সোনা) চট্টোপাধ্যায় ‘আনন্দবাজার ডিজিটাল’কে জানালেন, অটিজমের তেমন কার্যকরী ওষুধ বাজারে না আসার কারণ, ইঁদুরের উপর পরীক্ষায় সাফল্যের পর মানুষের উপর পরীক্ষায় তা সফল হয়নি। দ্বিতীয়ত, এত দিন জানাই ছিল না বিভিন্ন ধরনের অটিজমের মধ্যে বিশেষ এক ধরনের অ়টিজম (যার নাম ‘ফ্র্যাজাইল এক্স সিনড্রোম’)-এর জন্য মস্তিষ্কের কোন কোন কোষগুলি দায়ী। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার সেটা জানা গিয়েছে। ফলে, ‘ফ্র্যাজাইল এক্স সিনড্রোমে’র কার্যকরী ওষুধ বাজারে আসার সম্ভাবনা যথেষ্টই জোরালো হল।’’

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

Autism India Autism Centre International Conference on Autism 2020 Suresh Somani অটিজম ইন্ডিয়া অটিজম সেন্টার

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।