মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ববিধি কঠোর ভাবে মেনে চলার মাধ্যমেই নাগরিকদের একে অন্যের প্রতি দায়িত্ববোধ, বিশ্বাসের প্রমাণ মিলেছে। -ফাইল ছবি।
নাগরিকদের মধ্যে দায়িত্ববোধ, বিশ্বাস, আস্থা, ভরসা যে দেশে যত বেশি সেই দেশই করোনা সংক্রমণ ও কোভিড মৃত্যু-হার শীর্ষবিন্দু থেকে তত তাড়াতাড়ি নামিয়ে আনতে পেরেছে।
সংক্রমণ রুখতে নির্ভুল ভাবে নিয়মিত ভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ববিধি কঠোর ভাবে মেনে চলার মাধ্যমেই নাগরিকদের একে অন্যের প্রতি দায়িত্ববোধ, বিশ্বাস, আস্থা, ভরসার প্রমাণ মিলেছে।
দেড়শোটিরও বেশি দেশের নাগরিকদের উপর চালানো একটি নজরকাড়া গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’-এ।
গবেষকরা দেখেছেন, সেই বিশ্বাস, ভরসা, আস্থা বিশেষ কোনও রাষ্ট্রনেতা, তাঁর বা তাঁর দলের মতাদর্শ বা সরকারি শাসনব্যবস্থার উপর নয়। সেটা এক নাগরিকের বিশ্বাস দেশের অন্য নাগরিককে। যা প্রতিফলিত হয়েছে কোভিডবিধি যতটা সম্ভব অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার মাধ্যমে।
গবেষণা জানিয়েছে, যে দেশের অন্তত ৪০ শতাংশ নাগরিক মনে করেন তাঁর দেশের বেশির ভাগ মানুষের উপরেই ভরসা রাখা যায়, হওয়া যায় আস্থাবান সেই দেশ করোনার ঢেউগুলি তত বেশি সফল ভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছে। সংক্রমণের হারকে তত তাড়াতাড়ি নামিয়ে আনতে পেরেছে। নামিয়ে আনতে পেরেছে কোভিডে মৃত্য-হারকেও।
গবেষকরা ২০১৯-এর ডিসেম্বরে চিনের উহান প্রদেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২০-র ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত, বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু-হারের বাড়া-কমার যাবতীয় তথ্যাদি বিশ্লেষণ করেছেন। যে সময়ে টিকাদান সে ভাবে শুরু হয়নি কোনও দেশেই।
গবেষণা জানিয়েছে, নাগরিকদের এক অন্যের উপর বিশ্বাস সবচেয়ে বেশি ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেনের মতো স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলিতে। কোথাও ৬০ শতাংশ কোথাও বা তারও বেশি। আর ব্রিটেনে সেটা ৪০ শতাংশ। চিনেও নাগরিকদের একে অন্যের উপর বিশ্বাস যথেষ্টই উচ্চমাত্রার।
গবেষণাটি যৌথ ভাবে চালিয়েছেন এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয় ও ভাগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষকরা।
অন্যতম মূল গবেষক এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিম লেন্টন বলেছেন, ‘‘এই গবেষণার ফলাফল বোঝাল, দেশে দেশে নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস আরও বাড়িয়ে তোলা সম্ভব হলে আগামী দিনে অন্যান্য মহামারি ও অতিমারি পরিস্থিতির মোকাবিলা করার কাজটা আরও সহজ হবে।’’
গবেষকরা এও দেখেছেন, কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রায় সব দেশের সব ধরনের সরকারই লকডাউন ও কোভিড আচরণবিধি জারির মতো খুব কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও সব দেশ সংক্রমণ ও মৃত্যর হার শীর্ষবিন্দু থেকে একই হারে নামিয়ে আনতে পারেনি। কোথাও তা অনেক বেশি হয়েছে। কোথাও বা তা হয়েছে খুব ধীরলয়ে।
গবেষণা বরং উল্টো ছবিই পেয়েছে। যে দেশের সরকার কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলায় যত বেশি কঠোর হয়েছে বা হতে চেয়েছে সেই দেশে কিন্তু সংক্রমণ ও মৃত্যর হার শীর্ষবিন্দু থেকে খুব তাড়াতাড়ি নেমে আসেনি। বরং তা দ্রুত নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছে নাগরিকদের একে অন্যের প্রতি দায়িত্ববোধ, আস্থা, ভরসা ও বিশ্বাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy