বিস্ফোরণের সেই রহস্যময় আলো যা ধরা পড়েছে চিনে বসানো টেলিস্কোপে। ছবি- ‘ফাস্ট’-এর সৌজন্যে।
আধুনিক পৃথিবীতে এত ঘনঘন এত ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয়নি কখনও। দু’ থেকে তিন দিনের মধ্যে দেড় হাজারেরও বেশি বিস্ফোরণ।
সেই বিস্ফোরণের পর ঠিকরে বেরিয়ে আসা আলো যে খুব বেশি সময় ধরে দেখা যাচ্ছে, তাও নয়। আলো দেখা যাচ্ছে, আবার তা উধাও হয়ে যাচ্ছে। তার পরেই আবার বিস্ফোরণ। আবার আলো ঠিকরে বেরচ্ছে। ফের উধাও হয়ে যাচ্ছে। এ কি ভিন্গ্রহীদের আলো?
এর শক্তির কাছে নস্যি সূর্যও
দু’ থেকে তিন দিনে এমন ১ হাজার ৬৫২টি বিস্ফোরণ নজরে পড়েছে। প্রতিটি বিস্ফোরণের পর ঠিকরে বেরনো আলো স্থায়ী হচ্ছে এক সেকেন্ডের কয়েক হাজার ভাগের মাত্র এক ভাগ সময়। কিন্তু তাতেই যে পরিমাণ শক্তি উগরে দিচ্ছে, সূর্য সেই পরিমাণ শক্তি উগরে দিতে পারে সারা বছরে।
অভাবনীয় রকমের শক্তি বেরিয়ে আসছে প্রতিটি বিস্ফোরণ থেকে!
বিস্ফোরণের কারণ কী?
কেন এত ঘনঘন বিস্ফোরণ, তা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। শুধু এটুকু জানতে পেরেছেন এই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণগুলির উৎস আলাদা আলাদা নয়। সেগুলি হচ্ছে বিশেষ একটি জায়গায়। তা ধরা পড়েছে চিনে বসানো বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রেডিয়ো টেলিস্কোপ- ‘ফাইভ হান্ড্রেড মিটার অ্যাপার্চার স্ফেরিক্যাল রেডিয়ো টেলিস্কোপ’-এ। সংক্ষেপে যার নাম ‘ফাস্ট’।
কোথায় সেই বিস্ফোরণ?
ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের ঠিকানা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বাইরে হচ্ছে সেই একের পর এক ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। পৃথিবী থেকে ৩০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরের একটি বামন ছায়াপথে। যা হতে হতেও কোনও কারণে আকাশগঙ্গা বা অন্যগুলির মতো পূর্ণাঙ্গ ছায়াপথ হয়ে উঠতে পারেনি। বামন হয়েই থেকে গিয়েছে সেই ছায়াপথ। জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম- ‘ডোয়ার্ফ গ্যালাক্সি’।
ভিন্গ্রহীদের আলো?
আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বাইরে এই ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা বিজ্ঞানীদের প্রথম নজরে এসেছিল আজ থেকে ১৪ বছর আগে। ২০০৭ সালে। তাঁরা সেগুলির নাম দেন ‘ফাস্ট রেডিয়ো বার্স্ট’। বা ‘এফআরবি’। আলোকবর্ণালির একটি প্রান্তের কাছাকাছি থাকা রেডিয়ো তরঙ্গ বেরিয়ে আসে এই ধরনের বিস্ফোরণ থেকে। এগুলি সাধারণত দু'ধরনের হয়। কোনওটিতে এক বারই বিস্ফোরণ হয়। বেরিয়ে আসে আলো। তার পর সেই আলো ওই উৎস থেকে আর দেখা যায় না। কোনওটিতে আবার বার বার বিস্ফোরণ হয়।
আর তা থেকে একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর ঠিকরে বেরিয়ে আসে আলো। যার স্থায়ীত্ব যৎসামান্য হলেও সেইটকু সময়েই যে শক্তি বেরিয়ে আসে সারা বছর ধরে আলো ফেলেই শুধু সেই পরিমাণ শক্তির জন্ম দিতে পারে সূর্য। বার বার এই ধরনের যে উৎসগুলি থেকে আলো বেরিয়ে আসে, বিজ্ঞানীরা তাদের বলেন ‘রিপিটার’। অথবা, ‘রিপিটিং ফাস্ট রেডিয়ো বার্স্ট’।
কিন্তু এর আগে কোনও এফআরবি-তেই এত ঘনঘন এত ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হতে দেখা যায়নি। এর নাম- ‘এফআরবি-১২১১০২’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy