গ্রহাণু ‘বেন্নু’। ছবি-নাসার সৌজন্যে।
ইতিহাস গড়ল নাসা। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার মহাকাশযান ‘ওসিরিস-রেক্স’ পা ছোঁয়াল গ্রহাণু ‘বেন্নু’তে। এই প্রথম নাসার কোনও মহাকাশযান পদার্পণ করল কোনও গ্রহাণুতে। শুধু পা ছোঁয়ানোই নয়, সেই গ্রহাণুর ‘মাংস’ও উপড়ে আনা হবে।
ভারতীয় সময় মঙ্গলবার রাতে বেন্নুতে প্রথম পদার্পণ ঘটে নাসার মহাকাশযানের। নাসার এক বিবৃতিতে এই খবর জানানো হয়েছে।
কোনও গ্রহাণুতে পদার্পণ অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ, গ্রহাণুদের পিঠ (সারফেস) এতটাই এবড়োখেবড়ো যে সেখানে পা ছোঁয়াতে গেলেই বিপদ ঘটে যেতে পারে যে কোনও মুহূর্তে।
তা-ও আবার আমাদের কাছেপিঠে নয়, সেই গ্রহাণুটি রয়েছে অনেক অনেক দূরে, ২০ কোটি ৭০ লক্ষ মাইল (বা ৩৩ কোটি ৪০ লক্ষ কিলোমিটার)। মঙ্গল আর বৃহস্পতির মাঝখানে রয়েছে যে গ্রহাণপুঞ্জ (‘অ্যাস্টারয়েড বেল্ট’), এই গ্রহাণুর ঠিকানা সেই মুলুকেই। তার নাম- ‘বেন্নু’।
১৬ সেকেন্ডে ৬০ গ্রাম
১৬ সেকেন্ডেরও কম সময়ের জন্য নেমে সেই গ্রহাণুর ‘মাংস’ (মাটি, নুড়ি, পাথর) উপড়ে নিয়ে সেগুলি পৃথিবীতে আনবে নাসার একটি মহাকাশযান। সেই নমুনাও একটু-আধটু নয়। ৬০ গ্রাম।
আকারে বড় একটা বাসের মতো নাসার মহাকাশযান ‘ওসিরিস-রেক্স’। যেন বাজপাখি বা চিল-শকুন!
পৃথিবীতে আনা হবে ২০২৪-এ
নমুনা সংগ্রহের পর আগামী বছরের মাঝামাঝি বেন্নু ছেড়ে পৃথিবীর উদ্দেশে পাড়ি জমাবে ওসিরিস-রেক্স। সব কিছু ঠিকঠাক ভাবে চললে পৃথিবীতে তার পৌঁছনোর কথা চার বছর পর। ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর।
আরও পড়ুন- হকিং, পেনরোজ কি উদ্ভাসিত অমল আলোয়? কী বলছে ইতিহাস
আরও পড়ুন- কোদাইকানালের রেকর্ড খুঁড়ে সূর্যের প্রাচীনতম ইতিহাস জানালেন তিন বাঙালি
তবে ৬০ গ্রামের বেশি নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব নয় নাসার মহাকাশযানটির পক্ষে। চাঁদে ‘অ্যাপোলো মিশন’গুলির পর অবশ্য এত বেশি পরিমাণে কোনও মহাজাগতিক বস্তুর অংশবিশেষ কুড়িয়ে আনতে পারেনি সভ্যতা।
টাচ অ্যান্ড গো...
তবে কোনও গ্রহ বা উপগ্রহে যে ভাবে কোনও ল্যান্ডার নামানো হয়, ৪ বছর আগে যে ভাবে প্রথম ল্যান্ডার নামানো হয়েছিল ধূমকেতু ‘৬৭/পি শুরুমোভ-গেরাশিমেঙ্কো’তে, এ বার বেন্নুতে পদার্পণ ঠিক সে ভাবে হয়নি। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য পা ছুঁইয়েই বেন্নু থেকে নমুনা উপড়ে আনা হবে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘টাচ অ্যান্ড গো' (সংক্ষেপে 'টিএজি' বা 'ট্যাগ')।
নাসার মহাকাশযানটির রোবটের পা বেন্নুকে ছুঁল তার উত্তর গোলার্ধে। জায়গাটার নাম- ‘নাইটিঙ্গেল’। খুবই এবড়োখেবড়ো। পাহাড়ি এলাকা। যার ব্যাস ৫২ ফুট বা ১৬ মিটার।
ছবি সৌজন্যে: নাসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy