জিকায় আক্রান্ত রোগীর রক্তপরীক্ষা। -ফাইল ছবি। ফাইল ছবি
এমন ১২টি প্রোটিন বা পেপটাইডের হদিশ মিলল যা দিয়ে খুব দ্রুত কাবু করে দেওয়া যেতে পারে সব রকমের ডেঙ্গি ও জিকা ভাইরাসদের। সেই ক্ষমতাশালী প্রোটিন বা পেপটাইডগুলি পাওয়া গিয়েছে ভারতের পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় বিশেষ একটি প্রজাতির সোনা ব্যাঙের ত্বকে।
এই প্রোটিন বা পেপটাইডগুলির হদিশ মেলায় এ বার একই সঙ্গে ডেঙ্গি ও জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ রোখার নতুন ওষুধ ও টিকা আবিষ্কারের পথ খুলে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক গবেষকদলের এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’-এ। খবরটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার ইন্ডিয়া’তেও। গবেষকদলে রয়েছেন কেরলের ‘রাজীব গাঁধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি’র বিজ্ঞানীরাও।
মশা কামড়ানোর পরেই তাদের হুল থেকে মানবশরীরে ঢোকে জিকা এবং ডেঙ্গি ভাইরাস। নিজেদের দ্রুত বদলিয়ে ফেলে আমাদের দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে (‘ইমিউন সিস্টেম’) একেবারে বোকা বানিয়ে দেয় এই দু’টি ভাইরাস। ফলে, আমাদের দেহে তাদের সংক্রমণ রোখা সম্ভব হয় না। মশার কামড় থেকে প্রসূতিদের শরীরে জিকা ও ডেঙ্গি ভাইরাস ঢুকলে তা মাতৃগর্ভে থাকা ভ্রূণের মস্তিষ্কের প্রচণ্ড ক্ষতি করে। জিকার জন্য যে টিকাগুলি বাজারে চালু হয়েছে তার কোনওটিই আমাদের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ পুরোপুরি রুখতে পারে না।
গবেষকরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই ১২টি প্রোটিন বা পেপটাইড পেয়েছেন পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় থাকা বিশেষ একটি প্রজাতির সোনা ব্যাঙের ত্বকে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যে সোনা ব্যাঙের নাম- ‘ইন্দোসিলভিরানা অরান্টিয়াকা’।
১২টি প্রোটিন বা পেপটাইডের মধ্যে এমন অন্তত ১টি প্রোটিন বা পেপটাইড অণুর হদিশ মিলেছে যা জিকা বা ভাইরাসদের অকেজো করে দিতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে। কোষে ওই ভাইরাসদের বংশবৃদ্ধিও রুখে দিতে পারে পুরোপুরি। যেটা আরও উল্লেখযোগ্য, এই প্রোটিন বা পেপটাইডের কোনও বিষক্রিয়া নেই আমাদের শরীরে। এই প্রোটিন আমাদের শরীরে কৃত্রিম ভাবে ঢোকানো হলে রক্তের লোহিত কণিকার (আরবিসি) কোনও ক্ষতি হয় না। ফলে, কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ারও আশঙ্কা নেই, এমনটাই দাবি করেছেন গবেষকরা।
সদ্য আবিষ্কৃত এই প্রোটিন বা পেপটাইডের নাম দেওয়া হয়েছে ‘যোধা’। সংস্কৃত শব্দ। বাংলায় যার অর্থ, ‘যোদ্ধা’।
গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, শরীরে ঢোকানোর ৫ মিনিটের মধ্যেই এই প্রোটিন বা পেপটাইডটি পুরোপুরি কাবু করে দিতে পারে জিকা ও ডেঙ্গি ভাইরাসকে।
এও দেখা গিয়েছে, প্রোটিনটি শরীরে আগে থেকে থাকলে আফ্রিকান বাঁদরদের থেকে অন্য প্রাণীর শরীরে ঢুকতে পারছে না জিকা ও ডেঙ্গি ভাইরাস।
ইঁদুরের শরীরে এই প্রোটিন বা পেপটাইড অণুটিকে ঢুকিয়ে দিয়ে সফল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এ বার মানবশরীরে পরীক্ষা করে দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy