Advertisement
E-Paper

Global Warming: উষ্ণায়নে অপরিণত শিশু বেশি জন্মাচ্ছে, বাড়ছে শিশুর ওজন, কমছে প্রজনন ক্ষমতা: রিপোর্ট

উষ্ণায়ন মাতৃগর্ভে থাকা ভ্রূণ, সদ্যোজাত শিশু ও শিশুর শৈশবকে কতটা বিপজ্জনক করে তুলেছে তার ভয়াবহ ছবি বেরিয়ে এল সাম্প্রতিক ছ’টি গবেষণায়।

জন্মের পর শিশুদের ওজন বাড়ছে অবাঞ্ছিত ভাবে। তার ফলে প্রথম শৈশবেই অনাকাঙ্খিত স্থূলত্বের শিকার হচ্ছে শিশুরা। গ্রাফিক- শৌভিত দেবনাথ।

জন্মের পর শিশুদের ওজন বাড়ছে অবাঞ্ছিত ভাবে। তার ফলে প্রথম শৈশবেই অনাকাঙ্খিত স্থূলত্বের শিকার হচ্ছে শিশুরা। গ্রাফিক- শৌভিত দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২২ ১২:৩৫
Share
Save

পৃথিবীর ‘জ্বর’ উত্তরোত্তর বাড়ায় খুব ক্ষতি হচ্ছে মাতৃগর্ভে থাকা ভ্রূণের। সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে অপরিণত সদ্যোজাতের।

জন্মের পর শিশুদের ওজন বাড়ছে অবাঞ্ছিত ভাবে। তার ফলে প্রথম শৈশবেই অনাকাঙ্ক্ষিত স্থূলত্বের শিকার হচ্ছে শিশুরা।

বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের শিকার হয়ে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনাও উত্তরোত্তর বাড়ছে।

উষ্ণায়ন ও তার জেরে দ্রুত হারে জলবায়ু পরিবর্তন মাতৃগর্ভে থাকা ভ্রূণ, সদ্যোজাত শিশু ও শিশুর শৈশবকে কতটা বিপজ্জনক করে তুলেছে তার এমনই ভয়াবহ ছবি বেরিয়ে এল সাম্প্রতিক ছ’টি গবেষণায়। গবেষণাপত্রগুলি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল পিডিয়াট্রিক অ্যান্ড পেরিন্যাটাল এপিডিমিয়োলজি’-র বিশেষ সংখ্যায়।

গবেষণাপত্রগুলির মধ্যে কয়েকটি এ-ও জানিয়েছে, উষ্ণায়ন ও খুব দ্রুত হারে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশ্বজুড়ে দাবানলের ঘটনা ও তার তীব্রতা বেড়েছে। বেড়ে চলেছে। তার ফলে যে ক্ষতিকারক ধোঁয়ার সৃষ্টি হচ্ছে তা সদ্যোজাতের নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার জন্ম দিচ্ছে। যার বোঝা তাদের অনেক বেশি বয়স পর্যন্ত বয়ে যেতে হচ্ছে।

পাশাপাশি, জীবাশ্ম-জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের জন্য যে মাত্রাধিক বায়ুদূষণ হচ্ছে তার জেরে মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে।

আমেরিকা, ডেনমার্ক, ইজরায়েল, অস্ট্রেলিয়া-সহ গোটা বিশ্বে গবেষণা চালিয়ে লেখা হয়েছে এই গবেষণাপত্রগুলি। বিষয়টিকে ‘ফোকাস’ করতেই সেগুলি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকার বিশেষ সংখ্যায় একই সঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছে বলে পত্রিকা প্রকাশকের তরফে জানানো হয়েছে।

উষ্ণায়নের সঙ্গে সদ্যোজাতের ওজন-বৃদ্ধির বিপজ্জনক প্রবণতা ধরা পড়েছে কয়েকটি গবেষণায়। ইজরায়েলে ২ লক্ষ শিশুর উপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, উষ্ণায়নের জন্য জন্মের এক বছরের মধ্যেই অস্বাভাবিক ওজন-বৃদ্ধির শিকার হচ্ছে শিশুরা। সেই ওজন-বৃদ্ধি পরে অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠছে অন্তত পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে। এর জেরে বিশ্বে শিশুদের অস্বাভাবিক স্থূলত্ব মহামারির আকার নিয়েছে বলেও কয়েকটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। গবেষণাপত্রগুলি জানিয়েছে, এই মূহূর্তে বিশ্বের অন্তত ১৮ শতাংশ শিশুই অস্বাভাবিক ওজন বা স্থূলত্বের শিকার।

দাবানলের ধোঁয়া অন্তঃসত্ত্বা ও সদ্যোজাতের কতটা ক্ষতি করছে সেই ছবিও স্পষ্ট হয়েছে কয়েকটি গবেষণাপত্রে। দেখা গিয়েছে, দাবানলের ধোঁয়া সন্তান ধারণের সামান্য সময় আগে কোনও মহিলার নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার আশঙ্কা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। তার জেরে সন্তানের জন্মের পর মায়েরা যেমন দীর্ঘমেয়াদি নানা ধরনের রোগের শিকার হচ্ছেন, তেমনই জন্মের পর থেকেই সদ্যোজাতরাও নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার শিকার হয়ে পড়ছে। অপরিণত শিশুর জন্মের সংখ্যা বাড়ছে। ‘গ্যাস্ট্রোস্কাইসিস’ নামে একটি জটিল রোগের শিকার হচ্ছে সদ্যোজাতরা। যে রোগে সদ্যোজাতের অন্ত্র বা অন্য অঙ্গগুলি প্রসারিত হয়ে ত্বকে ছিদ্র তৈরি করে বেরিয়ে আসে শরীরের বাইরে।

জীবাশ্ম জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের জন্য যে মাত্রাধিক বায়ুদূষণ হচ্ছে তার জেরে মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। -ফাইল ছবি।

জীবাশ্ম জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের জন্য যে মাত্রাধিক বায়ুদূষণ হচ্ছে তার জেরে মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। -ফাইল ছবি।

গবেষণাগুলির কয়েকটি জানিয়েছে, দাবানলের ধোঁয়ার জন্য মাতৃগর্ভে থাকা ভ্রূণের এই ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিপদ ২৮ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। সেটা হচ্ছে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রথম তিন মাসেই।

উষ্ণায়ন, বায়ুদূষণ ও অত্যধিক তাপপ্রবাহের ঘটনা অপরিণত শিশুর জন্ম-হারও বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে ১০ বছর ধরে চালানো কয়েকটি গবেষণা জানিয়েছে, পৃথিবীর ‘জ্বর’ উত্তরোত্তর বেড়ে চলার জন্য অপরিণত শিশুর (গর্ভবতী হওয়ার ৩৭ সপ্তাহের মধ্যেই প্রসব) জন্ম-হার পাঁচ থেকে সাত শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। যে সব জায়গায় উষ্ণায়নের হার আরও বেশি, সেখানে অপরিণত শিশুর জন্ম-হার ১৬ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।

গবেষণাগুলি আরও জানিয়েছে, উষ্ণায়ন ও অত্যধিক তাপপ্রবাহের ঘটনা আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বেই শিশুদের হাসপাতালের আপৎকালীন বিভাগে ভর্তি হওয়ার ঘটনার হার বাড়িয়ে দিয়েছে।

গবেষণাগুলির কয়েকটি জানিয়েছে, কোনও কোনও দেশে বা অঞ্চলে সর্বাধিক তাপমাত্রার সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধিতে অপরিণত ও বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম-হার পাঁচ থেকে সাত শতাংশ বেড়েছে।

কয়েকটি গবেষণার ফলাফলে এও স্পষ্ট হয়েছে, বায়ুদূষণ কী ভাবে মহিলাদের ঋতুচক্রে পরিবর্তন ঘটিয়ে তাঁদের প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। এই হারও উদ্বেগজনক। আট থেকে ১৪ শতাংশ।

Global Warming Climate Change
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy