প্রতীকী ছবি। ইনসেটে, বিজ্ঞানী তাপস মাজি।
বাঁকুড়ার খুব প্রত্যন্ত একটি গ্রামের এক ‘ম্যাজিশিয়ানে’র গল্প! অআকখ শিখতে স্কুলে যাওয়ার বাস ধরতে যাঁকে হাঁটতে হত ১০ কিলোমিটার পথ। আর উচ্চমাধ্যমিকের আগে স্কুলে দিনে যে বেঞ্চে বসে ক্লাস, রাতে সেই বেঞ্চ জোড়া লাগিয়েই বিছানা পাততেন ঘুমনোর জন্য!
সেই ম্যাজিশিয়ান জাদু দেখাতে পারেন অটোরিক্সা চালানোর জ্বালানি (‘কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস’ বা ‘সিএনজি’) নিয়ে। ‘ফুস্ মন্তর’ দিয়ে বাড়িয়ে দিতে পারেন সেই অটোর গ্যাসের ক্যালোরি-মূল্য (ভ্যালু)। যাতে অনেক কম গ্যাসে দিনভর অনেক বেশি দূরত্ব পাড়ি দিতে পারেন অটোচালক। যে গ্যাস বাতাসকে ভারী করে তোলে না বিষে।
অনায়াস হাতসাফাইয়ে সেই ম্যাজিশিয়ান টেনে বের করে নিতে পারেন শিল্পের বর্জ্য মেশা অত্যন্ত দূষিত জলের সবটুকু বিষ। এক লহমায়।
সেই জাদুকর ক্ষয়-ক্ষতির হাত থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারেন আমাদের রোজকার জীবনে আকছার কাজে লাগা পলিথিন তৈরির প্রক্রিয়াকে।
ব্লটিং পেপারের মতো মুহূর্তে শুষে নিতে পারেন বাতাসের মারাত্মক বিষ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসকে।
গত পাঁচ বছর ধরে একের পর এক ‘ম্যাজিক’ দেখিয়ে চলেছেন বেঙ্গালুরুর ‘জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চ (জেএনসিএএসআর)’-এর অধ্যাপক তাপস কুমার মাজি। তারই স্বীকৃতি হিসাবে এ বছর রসায়নে দেওয়া হয়েছে তাঁকে ‘শান্তিস্বরূপ ভাটনগর’ পুরস্কার।
কী সেই জাদুদণ্ড?
অটোর গ্যাস থেকে শিল্পবর্জ্যে দূষিত জল। পলিথিন থেকে শুরু করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাতাস। সর্বত্রই বিষ হঠানোর কয়েকটা অবাক করা ‘জাদুদণ্ড’ রয়েছে তাপসের হাতে! বিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম- ‘মেটাল অরগ্যানিক ফ্রেমওয়ার্কস (এমওএফ)’।
তাপস সেই জাদুদণ্ডগুলি বানিয়েছেন ধাতু আর নানা রকমের জৈব পদার্থের হাতে হাত ধরিয়ে। যে জাদুদণ্ডগুলিতে রয়েছে খুব ছোট ছোট ছিদ্র (পোর্স)। ওই ছিদ্রগুলিই তাপসের হাতের জাদুদণ্ডের প্রধান বল-ভরসা।
এই ছিদ্রগুলিই অটোর গ্যাসে মিথেনের সঙ্গে মিশে থাকা অপ্রয়োজনীয় কার্বন ডাই-অক্সাইডকে শুষে নেয়। মিথেনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে অটোর গ্যাসে তার ক্যালোরি-মূল্য বাড়িয়ে দেয়। এই ছিদ্রগুলিই শিল্প-বর্জ্য মেশা জলে থাকা বিষাক্ত ধাতুগুলিকে শুষে নিতে পারে ব্লটিং পেপারের মতো। শুষে নিতে পারে বাতাসের বিষ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসকেও, মুহূর্তের মধ্যে।
কী ভাবে সেগুলি বানিয়েছেন তাপস?
তাপসের বানানো সেই জাদুদণ্ডে ধাতু হিসেবে তাদেরই ব্যবহার করা হয়েছে, যাদের খুব সহজে পাওয়া যায় পৃথিবীতে। দামও কম। সেই ধাতুগুলি রয়েছে আমাদের ছোটবেলায় পড়া মেন্ডেলিয়েভের পর্যায় সারণী বা ‘পিরিয়ডিক টেবিলে’র তৃতীয় সারিতে (‘রো’)। সেই ধাতব মৌলগুলির মধ্যে রয়েছে লোহা, জিঙ্ক, তামা, নিকেল, ম্যাঙ্গানিজ, ক্রোমিয়াম। রসায়নশাস্ত্রের পরিভাষায় যাদের নাম- ‘ট্রানজিশনাল মেটাল’ বা ‘রূপান্তর ধাতু’।
জাদুর ভেল্কি দেখানোর এক একটা কাজের জন্য তাপস সেই ধাতব মৌলগুলির হাতে হাত মিলিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের জৈব যৌগের। তার ফলেই তৈরি হয়েছে তাপসের সেই অবাক করা জাদুদণ্ড। যার নাম- ‘এমওএফ’ বা ‘মফ’।
কয়লা পোড়ানোর ফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে যে গ্যাস বেরিয়ে আসে, তার নাম- ‘ফ্লু গ্যাস’। এই গ্যাসে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ নাইট্রোজেনের সঙ্গে মিশে থাকে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড। যা বাতাসে বিষের বোঝা বাড়ায়।
তাপসের হাতের সেই নানা রকমের ‘জাদুদণ্ড’। বিভিন্ন ধরনের ‘মফ’।
তাপস তাঁর জাদুদণ্ড দিয়ে ফ্লু গ্যাসের সেই বিষকে শুষে নিয়ে তাকে আমাদের রোজকার জীবনে কাজে লাগে এমন সব জিনিস বানানোর সহায়ক পদার্থে বদলে দিতে পেরেছেন। শুধু বাতাসের বিষ হরণ করাই নয়, সেই বিষকেই তাপস বদলে দিতে পেরেছেন আমাদের কাজে লাগার জিনিসে।
সেটা করতে তাপস তাঁর ‘মফ’ জাদুদণ্ডটা বানিয়েছেন আকছার মেলে দামেও সস্তা ধাতু তামার সঙ্গে একটি জৈব যৌগের জোট বাঁধিয়ে। যাতে রয়েছে খুব ছোট ছোট বহু ছিদ্র। ওই ছিদ্রগুলিই ফ্লু গ্যাসে মিশে থাকা কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসকে শুষে নেয় ব্লটিং পেপারের মতো। তার পর তাকে বদলে দিতে পারে একটি সাইক্লিক কার্বনেট যৌগে। যা কি না লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি তৈরির সময় লাগে। প্লাস্টিক তৈরির সময়েও যার খুব প্রয়োজন হয়।
অটো রিক্সা চালাতে প্রয়োজন হয় ‘কমপ্রেস্ড ন্যাচারাল গ্যাস’ বা ‘সিএনজি’-র। যার মূল উপাদান মিথেন। একটি জৈব যৌগ। সিএনজি-তে মিথেন থাকে ৯০ শতাংশ। এই মিথেনই অটো রিক্সা চালানোর জ্বালানি। চালিকাশক্তি। কিন্তু সিএনজি-তে শুধু মিথেনই থাকে না। এমন সব গ্যাসও ১০ শতাংশ থাকে যা আমাদের পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক। বাতাসে বিষের বোঝা বাড়ায়। বাড়ায় গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ। যা পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে অস্বাভাবিক ভাবে। যার জেরে দ্রুত গলে যাচ্ছে দুই মেরুর বরফ। বাড়িয়ে তুলছে সমুদ্রের জলের স্তর। এক-দেড় দশকের মধ্যে সভ্যতার সলিল সমাধির দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়ে যাচ্ছে।
যে হারে অটো রিক্সার সংখ্যা বাড়ছে শহরে শহরে তাতে উত্তরোত্তর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে সিএনজি। তাপস তাঁর জাদুদণ্ড দিয়ে সিএনজি-র সেই বিষকে টেনে নেওয়ার উপায় বাতলেছেন। দেখিয়েছেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ও সালফার ডাই-অক্সাইডের মতো বিষকে নিমেষে শুষে নেওয়ার ফলে কী ভাবে সিএনজি-তে অটো রিক্সার জ্বালানি মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। যা সিএনজি-র ক্যালোরি-মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাড়িয়ে দিচ্ছে তার কার্যক্ষমতা। তার ফলে, যে পরিমাণ সিএনজি-তে এখন সর্বাধিক যতটা দূরত্ব পাড়ি দিতে পারে অটো রিক্সা, সেই পরিমাণ সিএনজি-তে এখন তার অনেক বেশি পথ যেতে পারবেন অটোচালক। তাতে অটোচালকের যেমন সাশ্রয় হবে, তেমনই বাঁচবে পরিবেশও।
এটা করার জন্য তাপস জাদুদণ্ড বানিয়েছেন জিঙ্ক/নিকেল/তামা/লোহার মতো ধাতু দিয়ে। যেগুলি খুব সহজে মেলে, দামে সস্তা। আবার বিষাক্তও নয়। ফলে তাপসের দেখানো পথে পরিবেশবান্ধব সিএনজি বানাতে আর অসুবিধা হবে না।
বেঙ্গালুরুর গবেষণাগারে ‘ভাটনগর’ পুরস্কারজয়ী রসায়নবিদ অধ্যাপক তাপস মাজি।
একই ভাবে ‘ফুস মন্তর’ বলে তাপস শিল্প-বর্জ্য মেশা জলের বিষও শুষে নেওয়ার পথ দেখিয়েছেন। শিল্প-বর্জ্য ফেলা হয় মূলত গঙ্গার মতো বড় বড় নদী বা খালবিলের জলে। তাতে সেই জল দ্রুত বিষিয়ে যায়। যা জলজ জীবের সংখ্যা কমাচ্ছে। জলজ জীবের বহু প্রজাতিকে বিপন্ন করে তুলছে।
জলে সেই বিষটা আসে মূলত শিল্প-বর্জ্যের বিভিন্ন রং থেকে। যে রঙে থাকে ক্যাডমিয়াম, পারদ, সিসা ও ক্রোমিয়ামের মতো অত্যন্ত বিষাক্ত ধাতু। তাপসের জিঙ্ক বা তামা দিয়ে বানানো ‘মফ’ সেই বিষ শুষে নিতে পারে এক লহমায়।
ম্যাজিকের শেষ নেই তাপসের!
তাপসের ম্যাজিক এখানেই শেষ হয়নি। আরও আছে। ন্যাপথা বা ইথেন থেকে ইথিলিন তৈরির সময় কিছুটা অ্যাসিটিলিনও তৈরি হয়। পলিথিন তৈরির প্রক্রিয়াকে জোরদার করতে দরকার হয় তামা অনুঘটকের। অ্যাসিটিলিনের আবার তামার প্রতি খুব আসক্তি। তামা পেলেই তাকে কাছে টেনে নেয় অ্যাসিটিলিন। তামার হাতে হাত ধরে ঝটিতি বানিয়ে পেল কপার অ্যাসিটিলাইড নামে এক ধরনের যৌগ। যা পলিথিনকে ক্ষইয়ে দেয় দ্রুত। তা ছাড়াও অ্যাসিটিলিন তামাকে টেনে নেওয়ার ফলে পলিথিন তৈরির প্রক্রিয়ায় জরুরি তামা অনুঘটকের পরিমাণে ঘাটতি হয়। ফলে, নির্দিষ্ট সময়ে যতটা পলিথিন উৎপাদনের কথা, ততটা হয় না। অথচ পলিথিন আমাদের রোজকার জীবনের সর্বত্র লাগে।
তাপসের ‘মফ’ যে ভাবে গ্যাসের মিশ্রণ থেকে টেনে বেরে করে নিচ্ছে বিষ
তাপসের জাদুদণ্ড এই অ্যাসিটিলিনকে ‘গিলি গিলি গে’ বলে হাপিস করে দেওয়ার পথ দেখিয়েছে। ভারতে এর আগে যা আর কেউই পারেননি।
এ ক্ষেত্রে তাপস তাঁর জাদুদণ্ড বানিয়েছেন ম্যাঙ্গানিজ বা জিঙ্ক অথবা তামার মতো ধাতুগুলি দিয়ে। যেগুলি সস্তা, সহজলভ্য, বিষাক্তও নয়।
দিনে ক্লাসের বেঞ্চ, রাতে সেগুলি জোড়া লাগিয়ে বিছানা!
এত সব ম্যাজিক দেখিয়ে চলেছেন যে ম্যাজিশিয়ান, সেই তাপসের জীবনটা কিন্তু ম্যাজিকের মতো গড়িয়ে চলেনি। বিস্তর লড়তে হয়েছে তাপসকে। অনেক পথ হাঁটতে হয়েছে। মেজিয়া থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বাঁকুড়ার পায়রাশোলের প্রত্যন্ত গ্রামে তাপসের জন্মভিটে। ছোটবেলায় স্কুলে যাওয়ার জন্য বাস ধরতে হাঁটতে হত ১০ কিলোমিটার পথ। পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হলেন ২০ কিলোমিটার দূরের শ্যামপুর হাইস্কুলে। উচ্চমাধ্যমিকের আগে স্কুলে যে বেঞ্চে বসে ক্লাস করতেন, রাতে সেই বেঞ্চগুলিই জোড়া লাগিয়ে বিছানা পাততেন ঘুমনোর জন্য। হাইস্কুল তো বোর্ডিং হস্টেলও বটে! সেখান থেকেই মাধ্যমিক। কমলপুর নেতাজি হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে রসায়নে অনার্স নিয়ে তাপস বিএসসি পড়তে গেলেন রাণীগঞ্জের টিডিবি কলেজে। সেখান থেকেই ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে এমএসসি পড়তে গেলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিএইচডি করলেন কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স (আইএসিএস)’ থেকে। পোস্ট ডক্টরাল হলেন জাপানে গিয়ে। বেঙ্গালুরুর জেএনসিএএসআর-এ পড়াতে গেলেন ২০০৬ সালে।
কী বলছেন অন্য রসায়নবিদরা?
তাপসের সঙ্গে একই ব্যাচে রাণীগঞ্জের টিডিবি কলেজে পড়েছেন অধুনা বেঙ্গালুরুর ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএস)’-এর ইনঅরগ্যানিক অ্যান্ড ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের ‘ভাটনগর’ পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক পার্থসারথী মুখোপাধ্যায়। দু’জনে একই সঙ্গে পিএইচডি করেছেন কলকাতায় অধ্যাপক এন রায়চৌধুরীর অধীনে।
পার্থসারথীর কথায়, ‘‘আমি সর্বত্রই বলি তাপস ‘ইন্ডিয়ান আইকন অফ মফ’। মফ নিয়ে বহু দিন ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ হচ্ছে। ভারতেও মফ-এর আকার-আকৃতি, তৈরির পদ্ধতি নিয়ে কাজ করেছেন অধ্যাপক সি এন আর রাওয়ের মতো সর্বজনশ্রদ্ধেয় বিজ্ঞানীরা। কিন্তু মফ-কে কী ভাবে রোজকার জীবনে কাজে লাগানো যায়, ভারতে তাপসের আগে তা আর কেউই করে দেখাতে পারেননি।’’
আর এক ‘ভাটনগর’ পুরস্কারজয়ী রসায়নবিদ মোহনপুরের ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার-কলকাতা)’-এর অধ্যাপক রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় আবু ধাবি থেকে বললেন, ‘‘তাপসের অভিনবত্ব, ও একই সঙ্গে বহু ক্ষেত্রে মফ-এর ব্যবহার দেখাতে পেরেছে। যা অভূতপূর্ব।’’
একই স্ফূটনাঙ্ক (বয়েলিং পয়েন্ট, যে তাপমাত্রায় কোনও তরল গ্যাসীয় অবস্থায় চলে যায়) থাকা গ্যাসগুলিকে আলাদা করার ক্ষেত্রে তাপসের দেখানো পথ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পেরেছে, জানালেন পার্থসারথী। যাতে যথেষ্টই উপকৃত হতে পারে তেল শিল্প।
‘মফ’-এর সঙ্গে জোর লড়াই ‘কফ’-এর!
কার্বন ডাই-অক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাসগুলিকে আলাদা করার যে কাজটা করে চলেছেন তাপস, তা আরও একটা উপায়ে করার চেষ্টা চলছে বিশ্বজুড়ে। তার নাম- ‘কোভ্যালেন্ট অরগ্যানিক ফ্রেমওয়ার্ক (‘সিওএফ’ বা কফ)’। যেখানে ধাতুর ব্যবহার নেই।
‘‘তবে ‘কফ’-এর চেয়ে ‘মফ’-এ সেই সুবিধাটা অনেক বেশি। কারণ, কোনও কোনও মফ অণুর সারফেস এরিয়াটা হতে পারে একটা বড় ফুটবল মাঠের মতো। কফ-এর ক্ষেত্রে সেই সুবিধাটা কম পাওয়া যায়’’, মনে করেন পার্থসারথী।
‘কফ’ নিয়ে গবেষণায় ভারতে যিনি অগ্রদূত, সেই রাহুল অবশ্য এ কথা মানতে রাজি নন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মফ যেহেতু ধাতু দিয়ে বানানো হয়, তাই বাতাসের জলীয় বাষ্প টেনে নিয়ে তাদের ধাতব অক্সাইডে বদলে যাওয়ার প্রবণতা থাকে বেশি। ফলে, মফ খুব একটা স্থায়ী হয় না। তা ছাড়াও ধাতুর হাতে হাতে মেলাতে যে সব জৈব যৌগ বানানো হয়, তাদের বানানোর কাজটাও খুব সহজ নয়। তুলনয়া কফ অনেক বেশি কেলাসাকার। চট করে বাতাসের জলীয় বাষ্প টেনে নিয়ে অন্য কোনও পদার্থে তাদের বদলে যাওয়ার প্রবণতা কমই।’’
‘নানা মুনির নানা মত’ থাকলেও এ দেশে তাপসের কাজের অভিনবত্ব কিন্তু মেনে নিচ্ছেন প্রায় সকলেই। কোনও দ্বিধা না রেখে! কোনও প্রশ্ন না তুলেই!
ছবি সৌজন্যে: অধ্যাপক তাপস মাজি
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy