ফাটল বড় হচ্ছে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের। ছবি সৌজন্যে: নাসা।
পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে ফাটল আরও বড় হয়ে গিয়েছে। একটা ফাটল ভেঙে দু’টুকরো হয়ে গিয়েছে। ফলে, ওই এলাকায় পার্থিব সভ্যতাকে ভয়ঙ্কর সৌরকণা, সৌর বিকিরণ ও মহাজাগতিক রশ্মির ছোবল সামলাতে হবে।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই খবর দিয়েছে। জানিয়েছে, এর ফলে, সমূহ ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে ওই এলাকা দিয়ে প্রদক্ষিণরত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহগুলির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের। ব্যাহত হতে পারে ওই এলাকার টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগ ও নেভিগেশন ব্যবস্থাও।
পৃথিবীর এই চৌম্বক ক্ষেত্রটি আমাদের নীলাভ গ্রহটিকে ঘিরে মহাকাশে কয়েক লক্ষ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে। এর অন্য নাম- ‘জিওম্যাগনেটিক ফিল্ড’। এই চৌম্বক ক্ষেত্রটিই ভয়ঙ্কর সৌর বিকিরণ ও অত্যন্ত বিষাক্ত মহাজাগতিক রশ্মির ছোবল থেকে আমাদের প্রতি মুহূর্তে বাঁচায়। সৌর বিকিরণ ও মহাজাগতিক রশ্মি এসে পড়লে পৃথিবীর এই চৌম্বক ক্ষেত্রই তাকে দূরে ঠেলে সরিয়ে দেয়, যতটা সম্ভব।
গত শতাব্দীর সাতের দশক থেকেই পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রটি দুর্বল হয়ে পড়তে শুরু করে। তখনই এই চৌম্বক ক্ষেত্রে একটি বড়সড় ফাটল দেখা দেয়। যার নাম- ‘সাউথ আটলান্টিক অ্যানোমালি (এসএএ)’। এই ফাটলটি রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ অতলান্তিক মহাসাগরের উপরে থাকা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন- পানীয় জলে বিষ মেশায় এই দুই ব্যাকটেরিয়া, হদিশ মিলল এই প্রথম
আরও পড়ুন- বিষে বিষে বিষক্ষয়! ভয়ঙ্কর মানসিক রোগ সারানোর পথ দেখালেন তিন বাঙালি
নাসার সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গত ৫০ বছরে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ অতলান্তিক মহাসাগরের উপরে থাকা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ফাটলটা আকারে আরও বড় তো হয়েইছে, এমনকী, তা ভেঙে গিয়ে দু’টুকরো হয়েছে। তৈরি হয়েছে দু’টি বড় বড় ফাটলের।
নাসা দেখেছে, ‘‘পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ফাটলটা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে পশ্চিম দিকে। আর ওই এলাকার চৌম্বক ক্ষেত্রটি ক্রমশই কমজোরি হয়ে পড়ছে।’’
নাসার তরফে সতর্ক করে বলা হয়েছে, এর ফলে, ওই এলাকায় আগামী দিনে সমূহ বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। যাঁরা ওই এলাকায় বসবাস করেন, তাঁদের উপর সৌরকণা, সৌর বিকিরণ ও মহাজাগতিক রশ্মির হানাদারি ঠেকানোর প্রাকৃতিক চৌম্বকীয় ‘ঢাল’টি যথেষ্টই কমজোরি হয়ে পড়েছে। এর ফলে, ওই এলাকা দিয়ে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণরত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, কৃত্রিম উপগ্রহগুলির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ভয়ঙ্কর ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে সৌর বিকিরণ ও মহাজাগতিক রশ্মির ঝাপ্টায়।
এর আগে মে মাসে ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এসা)’ জানিয়েছিল, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র গত ২০০ বছরে ৯ শতাংশ কমজোরি হয়ে পড়েছে। আর সেই চৌম্বক ক্ষেত্রের যে এলাকায় ফাটলটি আকারে বেড়েছে ও সেটি ভেঙে দু’টুকরো হয়েছে, সেখানে চৌম্বক ক্ষেত্র গত ৫০ বছরে ৮ শতাংশ দুর্বল হয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের এই ফাটল-বৃদ্ধির কারণটা অবশ্য ভূ-প্রাকৃতিক। পৃথিবীর একেবারে অন্দরে গলিত লাভাস্রোত আর চৌম্বক অক্ষ একটু বেশি ঝুঁকে থাকার জন্যই এই ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে ও বৃদ্ধি ঘটছে। পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরুদু’টি সঠিক ভাবে যথাক্রমে উত্তর ও দক্ষিণে নেই বলেও ফাটল বেড়ে চলেছে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy