-প্রতীকী ছবি।
হ্যাঁ, ‘ইনফেকশন’ (কোভিড সংক্রমণ)-এর সঙ্গে লড়াইয়ে আপাতত হেরেই গিয়েছে ইঞ্জেকশন। অতিমারির ঘন অন্ধকার ফুঁড়ে আলোর পথে বেরিয়ে আসতে এখনই বিশ্ব জনসংখ্যার অন্তত ৭০ শতাংশকে কোভিড টিকা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। অথচ, গত ২১ জুন পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র ১০.০৪ শতাংশ মানুষকে কোভিড টিকার দু’টি ডোজই দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তবে বিশ্বের প্রায় ৮০০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে যে ১০০ কোটি মানুষকে ইতিমধ্যেই কোভিড টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে তাদের বড় অংশই হয় আমেরিকা, কানাডা বা ইউরোপের দেশগুলির নাগরিক। অর্থনৈতিক ভাবে যাঁরা অনেক বেশি সমৃদ্ধ। সেখানে ভারত-সহ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলিতে কোভিড টিকার অন্তত ১টি ডোজ পেয়েছেন সাকুল্যে ০.৯ শতাংশ মানুষ।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার’–এ লেখা একটি বিশেষ নিবন্ধে এ কথা জানিয়েছেন ‘আমেরিকান ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস’-এর সেন্টার অন হেল্থ, রিস্ক অ্যান্ড সোসাইটির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মারিয়া দ্য জেসাস।
মারিয়া লিখেছেন, ‘গত মে মাসে ‘ইউনিসেফ’ একটি বিবৃতিতে বলেছিল, এই পরস্পর-নির্ভর আধুনিক পৃথিবীতে সকলেরই নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা না গেলে কোনও এক জনের নিরাপত্তা দেওয়াও অসম্ভব। কিন্তু সেই লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা তো দুরের কথা, কোভিড টিকাকরণ তার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি। অথচ অতিমারির অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার জন্য যা বিশ্ববাসীর খুবই প্রয়োজন ছিল।’
কেন পারিনি?
মারিয়ার বক্তব্য, এর অন্যতম প্রধান কারণ তিনটি। প্রথমত, বিভিন্ন দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে টিকা উৎপাদনে ঘাটতি দ্বিতীয়ত, প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে টিকা উৎপাদন করে কয়েকটি ধনী দেশের সেগুলিকে নিজের দেশেই সঞ্চয় করে রাখার প্রবণতা আর তৃতীয়ত টিকা বণ্টনব্যবস্থার অপ্রতুলতা। তাদের মোট জনসংখ্যাকে টিকার দুটি ডোজ দিতে হলে যে পরিমাণ টিকা উৎপাদনের প্রয়োজন আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপানের মতো কয়েকটি দেশ তার ৩ বা ৪ গুণ টিকা বানিয়ে সঞ্চয় করে রেখেছে। আর বেশির ভাগ দেশ যে পরিমাণ টিকা বানিয়েছে তাতে তাদের জনসংখ্যার বড়জোর এক-চতুর্থাংশের টিকাকরণ সম্ভব। আমেরিকার কাছে এই মুহূর্তে কোভিড টিকার ১২০ কোটি ডোজ রয়েছে। যার অর্থ, সে দেশের এক জনকে টিকার ৩.৭টি ডোজ দেওয়া যায়। কানাডা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের কাছে টিকার ৩৮ কোটি ১০ লক্ষ ডোজ সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছে। যা দিয়ে সে দেশের মোট জনসংখ্যাকে টিকার দু’টি ডোজ ৫ বারেরও বেশি দেওয়া যায়। গত ২১ জুন পর্যন্ত বিশ্বে যে পরিমাণ কোভিড টিকা তৈরি হয়েছে তার অর্ধেকেরও বেশি সঞ্চয় করে রেখেছে ধনী দেশগুলি। যাদের মোট জনসংখ্যা বিশ্ব জনসংখ্যার এক-সপ্তমাংশ।
তার ফলে নিম্ন আয়ের দেশগুলির কী অবস্থা তা-ও সবিস্তারে লিখেছেন মারিয়া।
তাঁর কথায়, “এর ফলে, চিনের ‘সাইনোভ্যাক’ কোভিড টিকা বেনিনে পৌঁছেছে সাকুল্যে ২ লক্ষ ৩ হাজার ডোজ। যা দিয়ে সে দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশকে টিকার দু’টি ডোজ দেওয়া সম্ভব। মূলত অ্যাস্ট্রাজেনেকা-র উপরেই ভরসা রেখে হন্ডুরাস পেয়েছে কোভিড টিকার মাত্র ১৪ লক্ষ ডোজ। যা দিয়ে সে দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৭ শতাংশকে টিকার দু’টি ডোজ দেওয়া সম্ভব। একই সঙ্কটে হাইতিও।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy