কোভিড ভয়াবহ হয়ে ওঠায় মদত থাকে রক্তেরও! -ফাইল ছবি।
যেমন বয়স, প্রবীণত্ব, দেহের খুব বেশি ওজন বা অতিরিক্ত ধূমপানের অভ্যাসের জন্য হয়, তেমনই কোভিড কারও কারও ক্ষেত্রে ভয়াবহ হয়ে ওঠার কারণ হয় রক্তও। তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে মানবরক্তে থাকা বেশ কয়েকটি প্রোটিনের।
রক্তে এই প্রোটিনগুলির মাত্রা-বৃদ্ধি পেলে কারও কারও ক্ষেত্রে কোভিড ভয়াবহ হয়ে ওঠে। রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। যাঁদের সেই মাত্রা-বৃদ্ধির পরিমাণ আরও বেশি হয় কোভিডে তাঁদের মৃত্যু আটকানো ততটাই কঠিন হয়ে পড়ে।
সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে চিকিৎসাবিজ্ঞান সংক্রান্ত ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন-এর জার্নালে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই গবেষণা আগামী দিনে কোভিডের ভয়াবহ হয়ে ওঠা রুখতে প্রয়োজনীয় ওষুধ আবিষ্কারের পথ খুলে দিতে পারে। যে ওষুধগুলি ওই জরুরি সময়ে মানবরক্তে ওই প্রোটিনগুলির মাত্রাকে ফের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারবে।
গবেষকরা মানবরক্তে এই প্রোটিনগুলিকে খুঁজে বার করতে মানবদেহে থাকা প্রায় তিন হাজার প্রোটিনকে খতিয়ে দেখেছেন। কোভিডে তারা কে কী রকম ভূমিকা নেয়, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণ করেছেন।
আগের বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানবরক্তে থাকা বহু প্রোটিনেরই বিভিন্ন সময়ে মাত্রা কমে-বাড়ে। সেটা হয় জীবনধারণ, খাদ্যাভ্যাস এমনকি, পরোক্ষে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যও।
গবেষকরা তাই শুধুই মানবরক্তে ওই প্রোটিনগুলির মাত্রার বাড়া-কমা পর্যবেক্ষণ করেই থেমে যাননি। সেই সবের নিয়ন্ত্রক যে জিনগুলি, তাদেরও পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে এই প্রথম।
মানবরক্তে কাজকর্মের নিরিখে সাধারণত দু’টি শ্রেণির প্রোটিন থাকে। রক্তে থাকা এক ধরনের প্রোটিন যে কোনও ভাইরাসের সংক্রমণ রোখার জন্য দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। আর এক ধরনের প্রোটিন থাকে রক্তে, যারা সারা শরীরে কোনও বার্তা বা কোনও যৌগকে পৌঁছে দেয়।
গবেষকরা দেখেছেন, মানবরক্তে থাকা এই দ্বিতীয় শ্রেণির (যারা সারা শরীরে কোনও বার্তা বা কোনও যৌগকে পৌঁছে দেয়) প্রোটিনের মাত্রা-বৃদ্ধিই কোভিডের দ্রুত ভয়াবহ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেয়।
বিশেষ ভাবে এই ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে, মানবরক্তের একটি প্রোটিনকে। তার নাম— ‘এফএএএইচ২’। গবেষকরা দেখেছেন, যখনই রক্তে এই প্রোটিনের মাত্রা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছে তখনই কোভিড ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। মাত্রা আরও বাড়লে পরিস্থিতি এতই জটিল হয়ে উঠেছে যে, কোভিড রোগীদের আর বাঁচানো যায়নি।
আরও একটি প্রোটিনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তার নাম— ‘এবিও এনজাইম’। রক্তের গ্রুপ নির্ধারণে বিশেষ ভূমিকা থাকে এই প্রোটিনের। অথচ এই খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিনের মাত্রা যখন অস্বাভাবিক ভাবে রক্তে বেড়ে যায় তখনই তা বিপদ ডেকে আনে কোভিড রোগীদের জন্য। তাঁদের রোগকে দ্রুত ভয়াবহ করে তোলে। সেই কোভিড রোগীদের তখন হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। তাঁদের মৃত্যুও ঠেকানো যায় না সেই প্রোটিনের মাত্রা আরও বেড়ে গেলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy