পৃথিবীর কাছেপিঠে এসে পড়ার সময় গ্রহাণুটির গতিবেগ দাঁড়াবে সেকেন্ডে সাড়ে ১৯ কিলোমিটার বা ঘণ্টায় ৪৩ হাজার ৭৫৪ মাইল। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের আড়াই গুণ উচ্চতার একটি দানবাকৃতি গ্রহাণু ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে। অসম্ভব গতিবেগে। পৃথিবীর খুব কাছেপিঠে এসে পড়ার সময় গ্রহাণুটির গতিবেগ দাঁড়াবে সেকেন্ডে প্রায় সাড়ে ১৯ কিলোমিটার বা ঘণ্টায় ৪৩ হাজার ৭৫৪ মাইল।
আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বৃহস্পতিবার এই খবর দিয়ে জানিয়েছে, আকারে এত বিশাল বলে গ্রহাণুটি পৃথিবীর পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শুধুই বিশালত্ব নয়; গ্রহাণুটি সভ্যতার পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আরও একটি কারণ রয়েছে— গ্রহাণুটি খানিকটা ঘন ঘনই এসে পড়ছে পৃথিবীর কাছাকাছি। গ্রহাণুদের কক্ষপথ সাধারণত আগেভাগে খুব একটা আঁচ করা যায় না। তা বদলায়ও ঘন ঘন। কোনও গ্রহের খুব কাছাকাছি এসে পড়লে সেই গ্রহের জোরালো অভিকর্ষ বলের টানে গ্রহাণুদের আছড়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এমনই একটি গ্রহাণু আছড়ে পড়ায় ডাইনোসরদের বিলুপ্তি হয়েছিল বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের একটি বড় অংশের।
নাসা জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহের গোড়ার দিকে আমেরিকার এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের উচ্চতার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি উঁচু যে গ্রহাণুটি পৃথিবীর খুব কাছাকাছি এসে পড়বে সেটি দৈর্ঘ্যে এক কিলোমিটার বা ৩ হাজার ২৮০ ফুট। গ্রহাণুটির নাম— ‘(৭৪৮২) ১৯৯৪ পিসি-১’।
এই সৌরমণ্ডলে গ্রহাণুদের আদত ঠিকানা মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানে থাকা গ্রহাণুপুঞ্জ (‘অ্যাস্টারয়েড বেল্ট’) থেকে আসছে না এই গ্রহাণু। দানবাকৃতি গ্রহাণুটি আসছে পৃথিবীর খুব কাছেপিঠের এলাকা থেকেই। তাই এদের ‘নিয়ার-আর্থ অবজেক্টস (এনইও)’-এর শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এমন প্রায় ২৬ হাজার এনইও-র কথা এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছে নাসা। যাদের মধ্যে অন্তত এক হাজারটি গ্রহাণুকে পৃথিবীর পক্ষে ‘আজ নয়তো কাল বিপজ্জনক হতে পারে’ বলে চিহ্নিত করেছে তারা।
১৯৯৪ সালে প্রথম এই দানবাকৃতি গ্রহণুটির হদিশ পান জ্যোতির্বিজ্ঞানী রবার্ট ম্যাকনট। অস্ট্রেলিয়ার সাইডিং স্প্রিংস অবজারভেটরিতে আকাশ পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে। তার ২০ বছর আগে, ১৯৭৪-এও এই দানবাকৃতি গ্রহাণুটি পৃথিবীর কাছাকাছি এসে পড়েছিল। তবে খুব কাছে এসে পড়েছিল ৮৯ বছর আগে। ১৯৩৩ সালের ১৭ জানুয়ারি।
নাসা জানিয়েছে, গ্রহাণুটি ফের পৃথিবীর খুব কাছে এসে পড়বে ৮৩ বছর পর। ২১০৫ সালের ১৮ জানুয়ারি।
নাসার খবর, এখনও পর্যন্ত গ্রহাণুটির গতিপথ যা সেই হিসাবে বলা যায় খুব কাছে এসে পড়লেও এ বার হয়তো তেমন বিপদ নেই পৃথিবীর। কারণ, এখনকার গতিপথ বজায় থাকলে গ্রহাণুটি খুব কাছে আসার সময় পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব থাকবে চাঁদের দূরত্বের ৫ গুণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy