কৌশানী মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির কালীপুজো এ বার সাত বছরে পা দেবে। বৃহস্পতিবার পুজো, তবে আয়োজন শুরু গিয়েছে সপ্তাহখানেক আগে থেকেই। প্রতি বছরই নির্জলা উপোস করে ভক্তিভরে বাড়ির পুজোয় বসেন কৌশানী। এ বারও সেই নিয়মের অন্যথা হবে না। তবে এ বছর পুজো নিয়ে একটু বেশি আবেগপ্রবণ কৌশানী। ‘বহুরূপী’তে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। দর্শকের উজাড় করা ভালবাসা পেয়েছেন তিনি। কৌশানী বিশ্বাস করেন, মা কালীর আশীর্বাদ ছাড়া এই প্রাপ্তি তাঁর হত না। পুজোর পরেও প্রেক্ষাগৃহে রমরমিয়ে চলছে তাঁর ছবি। মাঝেমাঝেই দর্শককে চমকে দিতে পৌঁছে যাচ্ছেন সিনেমাহলে। তবে ব্যস্ততা এক দিকে, আর পুজোর আয়োজন অন্য দিকে। আপাতত দ্বিতীয়টি কৌশানীর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
চন্দন বাটা থেকে মালা গাঁথা, পুজোর খুঁটিনাটি জোগাড় নিজের হাতেই করেন কৌশানী। তবে ভোগের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেননি অভিনেত্রী। ভোগ রাঁধেন বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠরা। কৌশানী বলেন, ‘‘আমি ভোগ রান্নার ঝুঁকি নিইনি। রান্নাবান্নায় একেবারেই পটু নেই। তাই ভয় করে, যদি কিছু গোলমাল করে ফেলি। কালীপুজোয় আরও অনেক কাজ থাকে। আমি সেগুলিই করি।’’ তবে সাহস করে হাতা-খুন্তি না নাড়লেও, ঠাকুরকে ভোগে কী কী অর্পণ করা হয় জানালেন কৌশানী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির পুজোয় ঠাকুরকে ভোগে খিচুড়ি, লাবড়া, আলুর দম, লুচি, পায়েস, অনেক ধরনের মিষ্টি দেওয়া হয়। এগুলি মূলত ভোগে থাকে। এ ছাড়া ফল, নাড়ু, খই-মুড়কি তো আছেই। ঠাকুরের ভোগ রাঁধা হয় একেবারে আলাদা ঘরে। ভোগ রান্নার সময় সেখানে অন্য কাউকে যেতে দেওয়া হয় না। রাতে প্রচুর অতিথিও আসেন বাড়িতে। তাঁদের জন্য আলাদা রান্না হয়। তবে সবটাই নিরামিষ। পুজোর আগের দিন থেকেই নিরামিষ খাই আমরা।’’
ভোগের খিচুড়ি, লাবড়ার স্বাদের সঙ্গে কোনও কিছুর তুলনা চলে না। পুজোর দিন ডায়েট ভুলে তৃপ্তি করে ভোগ খান কৌশানী। ভাজা মশলা দিয়েই ভোগ রান্না হয় তাঁর বাড়িতে। তবে ভোগের মধ্যে আলুর দম কৌশানীর সবচেয়ে বেশি প্রিয়। আলুর দম বলতে যা বোঝায়, এটা ঠিক তেমন নয়। আলুর মধ্যে ছানার পুর ভরে রান্না হয়। কৌশানী সে পদের নাম দিয়েছেন, ছানার পুর ভরা আলুর দম। রান্না করা নিয়ে ভয় থাকলেও, এই নতুন ধরনের আলুর দমের উপকরণ আর প্রণালী নায়িকার ঠোঁটস্থ। গড়গড়িয়ে বলে গেলেন তিনি।
উপকরণ:
১ কেজি আলু
৫০০ গ্রাম ছানা
২ চা চামচ শুকনো খোলায় ভেজে গুঁড়ো করা মৌরি
২ চা চামচ কাশ্মিরী লঙ্কার গুঁড়ো
আধ কাপ কাজু
আধ কাপ কিশমিশ
২ চা চামচ জিরে গুঁড়ো
৩ চা চামচ আদা বাটা
১৫০ গ্রাম টক দই
গোটা গরমমশলা (দারচিনি, ছোট এলাচ, লবঙ্গ)
৩ টেবিল চামচ কাজু বাটা
আধ কাপ টম্যাটো বাটা
২ চা চামচ কসুরি মেথি
২ চা চামচ হলুদ
৩ টেবিল চামচ ঘি
পরিমাণ মতো সর্ষের তেল
স্বাদ অনুযায়ী নুন এবং চিনি
প্রণালী:
প্রথমে আলুর খোসা ছাড়িয়ে অর্ধেক করে কেটে চামচ দিয়ে কুরিয়ে পুর ভরার জন্য মাঝখানে গর্ত করে নিতে হবে। সেটা হয়ে গেলে আলুতে নুন এবং হলুদ মাখাতে হবে।
এ বার কড়াইয়ে জল ঝরিয়ে রাখা ছানা, মৌরি গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, নুন, চিনি, কাজু, কিশমিশ একসঙ্গে গিয়ে হালকা কষিয়ে পুর তৈরি করে নিতে হবে।
পুর একটু ঝুরো ঝুরো হওয়া চাই। তবে সব উপকরণ যাতে একসঙ্গে ভাল করে মেশে, সে দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। গরম পুর আলুতে ভরা যাবে না। তার জন্য কড়াই থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করতে দিতে হবে। ঠান্ডা হয়ে এলে আলুর মধ্যে ঠেসে ঠেসে পুর ভরে দিতে হবে। রান্নার সময় এই পুর আলু থেকে বাইরে বেরিয়ে যায়। তবে পুর ভরা আলুর মুখে যদি খানিকটা বেসন মাখিয়ে দেওয়া যায়, তা হলে পুর বেরিয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
এ বার পুর ভরা আলুগুলি হালকা করে সাবধানে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আলু ভাজার তেলেই গোটা গরমমশলা ফোড়ন দিয়ে একে একে টম্যাটো বাটা, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, নুন, চিনি আর পরিমাণ মতো হলুদ দিয়ে কষিয়ে নিতে হবে।
কষানো হয়ে এলে তার মধ্যে শাহী গরম মশলা, টক দই আর কাজু বাটা দিয়ে আর কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করে আলুগুলি দিতে হবে। আলু দেওয়ার পর বেশি নাড়াচাড়া না করাই শ্রেয়। খুন্তি দিয়ে হালকা হাতে আলুর গায়ে মশলা মাখিয়ে দিয়ে অল্প জল ঢেলে দিতে হবে।
বেশি জল দিলে আবার আলুর পুর ধুয়ে যেতে পারে। তাই একেবারে সামান্য জল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। আলু সেদ্ধ হয়ে এলে নামিয়ে উপর থেকে কাজু, কিশমিশ দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy