—ফাইল চিত্র।
শুঁটকি মাছ নিয়ে গর্ব করেন ওপার বাংলার মানুষজন। রোদে খরখরে করে শুকিয়ে নেওয়া মাছকে কী ভাবে তেল-মশলা দিয়ে কষিয়ে রগরগে করে রাঁধতে হয়, তা তাঁরা ভাল জানেন। রাঁধার আগে বিকট গন্ধে গোটা পাড়ায় নিজের উপস্থিতি জানান দেয় যে মাছ, রান্নার গুণে সেই মাছই কতখানি স্বাদু আর লোভনীয় হতে পারে, তা যিনি ‘বাঙাল’ বাড়িতে ওই খাবার খেয়েছেন, তিনিই জানেন। এ ব্যাপারে ‘ঘটি’রা যতই পড়শি ‘বাঙাল’দের কটাক্ষ করুন, তাঁরাও মানবেন, শুঁটকি মাছ অমন ভাবে রাঁধতে হলে বাড়তি এলেম লাগে। তা বলে শুঁটকির উপর দখল কি একা ওপার বাংলার? মোটেই না, এ দেশেও রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা মাছ খাওয়ার চল আছে পুরোদস্তুর। এতটাই যে, এদেশীয় শুঁটকি মাছে নিজেদের আধিপত্য দাবি করে জিআই ট্যাগ চেয়েছে তামিলনাড়ু।
মূলত অপরিমিত মাছ যাতে নষ্ট না হয়ে যায়, সেই ভাবনা থেকেই মাছকে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। উপকূল এলাকাতে যে হেতু মাছের জোগান বেশি, তাই মাছ শুকিয়ে সংরক্ষণ করার চল উপকূল অঞ্চলেই বেশি। নানা রাজ্য বা প্রদেশে সংরক্ষণের পদ্ধতি ভিন্ন। এর মধ্যেই দক্ষিণের উপকূলবর্তী রাজ্য তামিলনাড়ুতে মাছ সংরক্ষণ করা হয় বালির নীচে চাপা দিয়ে রেখে। তামিলনাড়ুর দাবি, কয়েকশো বছর ধরে চলে আসছে ওই পদ্ধতি। তখন থেকে যখন রেফ্রিজ়ারেটর তো দূর, বরফও মিলত না ভারতে।
আঠারোশো শতকে জাহাজে করে বরফ আনানো হত এ দেশে। তাতেও সাধারণ মাছ ব্যবসায়ীদের অধিকার ছিল না। সমুদ্র থেকে পাওয়া বাড়তি মাছ কি তা হলে নষ্ট হত? একেবারেই না। মাছ যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য সেকালে সৈকতের বালির নীচে মাছ চাপা দিয়ে রাখতেন তামিলনাড়ুর বাসিন্দারা। বিশেষ করে তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে, যেখানে মাছ ধরাই ছিল অধিকাংশ মানুষের পেশা।
বড় বড় মাছে হলুদের গুঁড়ো মাখিয়ে সৈকতের বালির নীচে চাপা দিয়ে রাখা হত। সেই পদ্ধতি কাজেও দিত। হলুদ আর বালিতে মিশে থাকা সামুদ্রিক লবণে দীর্ঘ দিন ভাল থাকত মাছ। ধীরে ধীরে মাছ সংরক্ষণের ওই পদ্ধতি একটি নামও পায়— পত্তরাই কারুভারু। সম্প্রতি সেই বিশেষ পদ্ধতিতে শুকনো মাছেই নিজেদের আধিপত্য দাবি করে সরকারি সিলমোহর চেয়েছে তামিলনাড়ু। অক্টোবরেই এক খাবার প্রস্তুতকারী সংস্থা রামনাথপুরম পত্তরাই কারুভারুর উপর জিআই ট্যাগ চেয়ে আবেদন করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy