ইদের সময়ে মোগলাই খাবার চাখতে কতশত পশরা সাজিয়ে বসে কলকাতার জ়াকারিয়া স্ট্রিট। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে জ়াকারিয়া স্ট্রিট ধরে একটু এগোলেই বাঁ হাতে পড়বে হাজি আলাউদ্দিন সুইটস। প্রায় একশো বছরের পুরনো এই দোকানের নোনতা-মিষ্টি পদও অনেক দিনের। গাওয়া ঘিয়ে তৈরি মিষ্টির এই দোকানের সামনে গিয়ে পড়লে খুশবুদার, খুবসুরত মিষ্টির মোহজালে আচ্ছন্ন হয়ে যাবেন। এদেরই কিছু মিঠে-নোনতা পদের সন্ধান রইল।
মাসকট হালুয়া
উপকরণ: ভাঙা গম ১ কাপ, নারকেল ১টি, চিনি ২ কাপ, কাজু বাদাম ২ টেবিল চামচ, ঘি আধ কাপ।
প্রণালী: সারা রাত জলে ভাঙা গম ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে জল ছেঁকে গমের অংশ বার করে পিষে নিতে হবে। মিশ্রণটি ছেঁকে দুধ বার করতে হবে। অন্য দিকে নারকেল কুরিয়ে তার দুধ বার করে নিন। এ বার কড়াইয়ে দু’রকম দুধ মিশিয়ে জ্বাল দিতে হবে। এতে পড়বে চিনি। কম আঁচে রান্না করতে থাকুন। অন্য পাত্রে কিছুটা চিনি গলিয়ে সোনালি ক্যারামেল তৈরি করুন। তা মিশিয়ে দিন হালুয়ার মিশ্রণে। একটা সময়ে কড়াইয়ের গা থেকে এই মিশ্রণ উঠে এলে বুঝতে হবে হালুয়া তৈরি। উপর থেকে রোস্টেড কাজু ছড়িয়ে পরিবেশন করুন মাসকট হালুয়া।
কাজু বরফি
উপকরণ: কাজু বাদাম ১ কাপ, ঘন দুধ দেড় কাপ, চিনি আধ কাপ, রুপোর তবক কয়েকটি।
প্রণালী: প্রথমেই দুধ ভাল করে ফুটিয়ে রাখুন। তার মধ্যে চিনি দিয়ে ভাল করে নাড়তে থাকুন। চিনি গলে গেলে আঁচ কমিয়ে এর সঙ্গে কাজু বাদাম বাটা মেশাতে হবে। কম আঁচে সমানে হাতা দিয়ে নাড়িয়ে মেশান। পুরো মিশ্রণ শুকিয়ে কড়াইয়ের গায়ে লেগে এলে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে গ্রিজ় করা চৌকো পাত্রে এই মিশ্রণ ঢেলে চেপে বসিয়ে নিন। উপরে রুপোর তবক দিন। এ বার বরফির আকারে কেটে বার করে নিন কাজু বরফি।
বত্তিসা হালুয়া
উপকরণ: নারকেল কোরা ১ টেবিল চামচ, খোয়া ক্ষীর ১ টেবিল চামচ, কাজু বাদাম ১ চা চামচ, আমন্ড ৪-৫টি, আখরোট ৫-৬টি, পেস্তা ১ চা চামচ, খোবানি ২-৩টি, খেজুর ৪টি, সুজি ১ টেবিল চামচ, দুধ দেড় কাপ, ঘি ১ কাপ, চিনি ১ কাপ, এলাচ ২-৩টি, দারচিনি ১ ইঞ্চি, ১৮ রকমের হার্ব (যেমন অশ্বগন্ধা, নাগকেশর, মঞ্জিষ্ঠা ইত্যাদি)।
প্রণালী: কড়াইয়ে নারকেল কোরা, খোয়া ক্ষীর, সুজি, দুধ ও চিনি একসঙ্গে পাক দিতে হবে। সব ড্রাই ফ্রুট একসঙ্গে পিষে রাখুন। অন্য দিকে হার্বও পিষে নিন। মিশ্রণ নরম হয়ে এলে তাতে একে একে ঘি, মশলা, হার্ব ও ড্রাই ফ্রুট মেশাতে হবে। সব উপাদান ভাল করে মিশে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন। ভেষজ উপাদান থাকায় এই হালুয়ার গুণও অনেক।
মাওয়া লাড্ডু
উপকরণ: বেসনের বোঁদে ১ কাপ, খোয়া ক্ষীর আধ কাপ, চিনি আধ কাপ, ঘি চার টেবিল চামচ, জাফরান সাত-আটটি, আমন্ড গুঁড়ো আধ চা চামচ, আখরোট গুঁড়ো আধ চা চামচ, কাজু বাদাম বাটা ১ চা চামচ, এলাচ গুঁড়ো ১ চা চামচ।
প্রণালী: প্রথমেই বেসনের বোঁদে ঘিয়ে ভেজে তুলে নিতে হবে। তার পরে চিনির রসে ভিজিয়ে তুলে নিন। এর পরে খোয়া ক্ষীর গুঁড়িয়ে বোঁদের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। আগে থেকেই এলাচ গুঁড়ো, কেশর একসঙ্গে মিশিয়ে রাখুন। এর সঙ্গে কাজু বাদাম বাটা, আমন্ড গুঁড়ো, আখরোট গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে হবে। এটা খোয়া ক্ষীর ও বোঁদের মিশ্রণে মিশিয়ে দিন। কড়াইয়ে ঘি দিয়ে কয়েক পাক দিন। এর পরে লাড্ডুর আকারে গড়ে পরিবেশন করুন মাওয়া লাড্ডু।
মাটন সামোসা
উপকরণ: মাটন কিমা ১ কাপ, আদা বাটা আধ চা চামচ, রসুন বাটা আধ চা চামচ, কাঁচা লঙ্কা বাটা ১/৪ চা চামচ, গরম মশলা গুঁড়ো আধ চা চামচ, লাল লঙ্কা গুঁড়ো ১/৪ চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২ চা চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, নুন স্বাদ মতো, ময়দা ২ কাপ, সাদা তেল ও ঘিয়ের মিশ্রণ ২ কাপ।
প্রণালী: শিঙাড়ার মোড়কের জন্য ময়দা মাখতে হবে। অল্প নুন, ঘি দিয়ে ময়দা মেখে নিন। এ বার জল দিয়ে মণ্ড তৈরি করে ঢাকা দিয়ে রাখুন।
কিমার পুর বানানোর জন্য তেলে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, কাঁচা লঙ্কা দিয়ে মাটন কিমা ভাল করে রান্না করে নিন। এর মধ্যে নুন, হলুদ গুঁড়ো, গরম মশলা গুঁড়ো ও লাল লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে আরও কষাতে থাকুন। পুর তৈরি হয়ে গেলে নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে নিন। এ বার ময়দার মণ্ড থেকে লেচি কেটে বেলে নিন। তাতে পুর ভরে শিঙাড়ার মতো গড়ে নিন। কড়াইয়ে সাদা তেল ও ঘি মিশিয়ে দিয়ে গরম করুন। তাতে শিঙাড়া কড়া করে ভেজে তুলে নিন।
অনুলিখন: নবনীতা দত্ত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy